মস্কো সফরের আগেই মুজিব বন্ধুত্ব চান ওয়াশিংটনের
পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে রাশিয়া ও ভারতের ভূমিকায় কৃতজ্ঞ থেকেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে ভারসাম্য সৃষ্টির উদ্যোগ নেন। আর সে কারণেই তিনি তার মস্কো সফরকে সামনে রেখে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদকে ঢাকার মার্কিন কনসাল জেনারেলের সঙ্গে যােগাযােগ স্থাপনের নির্দেশ দেন। নতুন প্রকাশিত মার্কিন দলিলে মুজিবের বিদেশ নীতি সচেতনতার এই দিকটি ফুটে উঠেছে। হােয়াইট হাউসের এক আলােচনার বিবরণীতেও দেখা যাচ্ছে, নিক্সন প্রশাসন এটা নিশ্চিত ছিলেন যে, মুজিবের প্রশাসন ভারত ও রাশিয়া কোনােদিকেই অপ্রয়ােজনীয়ভাবে ঝুঁকবে না। এদিকে বহুল আলােচিত ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ কথার প্রবর্তক কিসিঞ্জার কর্তৃক বাংলাদেশ সম্পর্কে আরাে নিকৃষ্ট মন্তব্য করার প্রমাণ মিলেছে। একাত্তর সালের ৪ জুন নিক্সনের সঙ্গে আলােচনায় কিসিঞ্জার বলেন, পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হলেও এটি হবে একটি নােংরা স্থান। এই তথ্য জানা গেল এই প্রথম। ১৯৭২ সালের ১৯ জানুয়ারি তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা কিসিঞ্জারের সভাপতিত্বে হােয়াইট হাউসের সিচুয়েশন কক্ষে এক উর্ধ্বতন রিভিউ গ্রুপের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ক্রিস্টফার ভেন হােলেন বলেন, “প্রেসিডেন্টের চীন সফরের পরেই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া হলে কিছুটা। ইতিবাচক সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। আমরা মনে করি না বাংলাদেশ ভারত অথবা সােভিয়েতের সঙ্গে ‘ওভার এক্সক্লসিভ’ সম্পর্ক চাইবে। আমরা যদি অবশিষ্ট বিশ্বের দিকে তাকাতে মুজিবের জন্য একটি জানালা খুলে দেই তাহলে দক্ষিণ এশিয়ায় বৃহত্তর স্থিতিশীলতা অর্জনে আমাদের স্বার্থের সহায়ক হতে পারে।”
বাংলাদেশের বিজয় লাভের একদিন পর ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৭১ মার্কিন ব্যুরাে অব ইন্টেলিজেন্স অব রিসার্চ বাংলাদেশের নেতৃত্ব সম্পর্কে চার পৃষ্ঠার যে দলিলটি তৈরি করে তার সূচনাতেই বলা হয়- বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সরকারের গঠন কিরূপ হবে। তা অনেকাংশে নির্ভর করছে শেখ মুজিবের উপস্থিতি অথবা অনুপস্থিতির ওপর। মুজিবকে যদি কারাগার থেকে মুক্তি এবং তাকে সরকার গঠনের সুযােগ দেওয়া হয় তাহলে মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্যই আসবে আওয়ামী লীগ থেকে। অন্যথায় নতুন সরকারটি হতে পারে আওয়ামী লীগ এবং চার মাস আগে সংগঠিত বাংলাদেশ কনসালটেটিভ কমিটির উদার বামপন্থী এবং খুব সম্ভব বিশিষ্ট মুক্তিবাহিনী।
অধিনায়কদের সমন্বয়ে একটি কোয়ালিশন।
রিপাের্ট মতে প্রবাসী সরকারের মন্ত্রিসভা সােভিয়েতপন্থী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নিয়ে গঠিত ঐ কমিটি আসলে একটি ভারতীয় উদ্যোগ। এই রিপাের্টে বলা হয়- মুজিব নিজেকে ব্রিটিশ স্টাইলের সমাজতন্ত্রী এবং পূর্ব বাংলা স্বায়ত্তশাসন ছাড়া আর সব কিছুতেই মডারেট হিসেবে গণ্য করেন। মুজিবের অনুপস্থিতিতে তাজউদ্দিন এবং মুশতাক আহমেদের নেতৃত্বে উপদলীয় কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে।
মস্কো সফরের প্রাক্কালে
ঢাকার মার্কিন কনসাল জেনারেল স্পিভাক ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭২ এক টেলিগ্রাম বার্তায় উল্লেখ করেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামাদ আজাদ জানালেন, মস্কো সফরের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান এটা জানার প্রয়ােজনীয়তা উপলব্ধি করেছেন যে, বাংলাদেশ প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মনােভাবটি কী? যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের বন্ধুত্বের বাতাবরণে এখনাে তারা বাংলাদেশের স্বার্থকে খাটো করে দেখার প্রয়াস পাচ্ছে কি? যদি যুক্তরাষ্ট্র সরকার সে দেশের বিশিষ্ট কংগ্রেসম্যান সিনেটর সংবাদপত্র ও জনসাধারণের মনােভাব বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে উৎসাহিত হয় তাহলে তা গণ্য হতে পারে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কর্তৃক অন্য আরেকটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া। এই বিষয়ও প্রধানমন্ত্রী মুজিব জানতে আগ্রহী। সামাদ আরাে বলেন, সােভিয়েত ইউনিয়নের মতাে উল্লেখযােগ্য বিশ্বশক্তির সঙ্গে আলােচনা শুরুর আগ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী মুজিব আপনাদের সঙ্গেও যােগাযােগ রক্ষা করতে চান। কারণ তিনি আসলে সচেতন রয়েছেন যে, এই ধরনের আলােচনা। হয়তাে অন্তত একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি নির্ণয় করতে পারে। আর সে কারণে বিশ্বের আরেক পরাশক্তির মনে যাতে কোনাে অজ্ঞতাপ্রসূত বা ভ্রান্ত আশঙ্কায় ভুল বােঝাবুঝির সৃষ্টি না হয়। সামাদ আরাে নির্দিষ্ট করে বলেন, আমি একান্তভাবেই এটা আশা করি যে, ২৯ ফেব্রুয়ারি অপরাহে মস্কোর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার ঢাকা ত্যাগের আগেই ওয়াশিংটনের তরফে যেন ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়।
তিনি আমাকে বিশেষ অনুরােধ জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই মনােভাব যেন অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ওয়াশিংটনে পৌছে দেওয়া হয়। এই পর্যায়ে টেলিগ্রামটিতে স্পিভাক তার মন্তব্য জুড়ে দেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, সামাদ আমার কাছে যে ব্যাকুলতা উপস্থাপন করেছেন তা বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নির্ধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সােভিয়েতরা যদিও অব্যাহতভাবে বাংলাদেশের ওপরে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। ঢাকায় তাদের বহুমুখী তৎপরতা চলছে। এমনকি মস্কো সফরকালে কোনাে নির্দিষ্ট দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাব মেনে নিতে চাপও প্রয়ােগ করা হতে পারে। আর দৃশ্যত সে কারণেই মুজিব জানতে চেয়েছেন, ভারসাম্যের অপরপ্রান্তে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে তিনি কতটা কী আশা করতে পারেন। স্পিভাক এ পর্যায়ে নিক্সন প্রশাসনের পাকিস্তানপন্থি অবস্থানের দিকে। অঙ্গুলি নির্দেশ করতে যেন তার নিজেরও চাপা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান। ‘বাংলাদেশের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে যে, সে বাংলাদেশের সঙ্গে অবন্ধুসুলভ, আলােচনায় অনাগ্রহী, পাকিস্তানের প্রতি ভয়ানক পক্ষপাতদুষ্ট এবং ভারতের প্রতি বৈরী। অন্যদিকে এখানে এক বিশাল জনপ্রিয় মনােভাব কাজ করছে যে, আমেরিকার জনসাধারণ বাংলাদেশের প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছে এবং দেশটি যে দুঃখ-কষ্টে নিপতিত হয়েছে তার প্রতি সহানুভূতিশীল। আমি বিশ্বাস করি, সামাদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি আমাদের জাতীয় স্বার্থেই সম্পূর্ণ ও মুক্তভাবে সাড়া দেওয়া উচিত। প্রেসিডেন্ট নিক্সন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রজার্স যদিও এখন চীনে অবস্থান করছেন, তবু আমি। দৃঢ়তার সঙ্গে এই আবেদনই জানাতে চাই যে, মস্কোতে রওয়ানা দেওয়ার আগে মুজিব আমাদের কাছে যে আশ্বাস আশা করছেন তা যেন আমরা সর্বতােভাবে পূরণের চেষ্টা করি’। কিন্তু স্পিভাকের এই আর্জি কাজে আসেনি। ওয়াশিংটন থেকে ফিরতি বার্তায় তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এখনাে পর্যন্ত মুজিবকে কিছুই বলার নেই।
মুজিবের মুক্তির জন্য আরজি
৩ জানুয়ারি, ১৯৭২ পিভাকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের বৈঠকের মূল প্রতিপাদ্য ছিল মুজিবের মুক্তি। এই টেলিগ্রামে বলা হয়, বাঙালিদের স্বাধীনতা অর্জনে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের বর্তমান ভূমিকাকে সামাদ আজাদ বৈরিতাপূর্ণ এবং সে কারণেই বাংলাদেশ ব্যথিত বলে বর্ণনা করেন। সামাদ বলেন, এই মুহূর্তে শেখ মুজিবুর রহমানের ঢাকায় উপস্থিতি অত্যন্ত প্রয়ােজনীয়। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রশাসনিক জটিলতা ও রাজনৈতিক মতভিন্নতার সমস্যা ছাড়াও সুনির্দিষ্টভাবে বিভিন্ন বাহিনীর হাতে থাকা অস্ত্র উদ্ধার এবং তাদের কোনাে কোনাে অংশের রাজনৈতিক প্রভাব নিরসনের প্রয়ােজনীয়তা তুলে ধরেন। সর্বোপরি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে পুনর্গঠন ও সরকার পরিচালনার মতাে দুরূহ কাজ সম্পাদনে বাঙালিদের জাতীয় চেতনার পুনর্জীবনে শেখ মুজিবের উপস্থিতির অনিবার্যতা স্পষ্ট করেন। সামাদ বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে, এটা হবে খুবই কার্যকর যদি যুক্তরাষ্ট্র সরকার শেখ মুজিবকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে প্রেসিডেন্ট ভুট্টো ও পাকিস্তানের ওপর তাদের প্রভাব কাজে লাগায়। যুক্তরাষ্ট্র সরকার যদি এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে আবেদন জানায় তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি বিরাজমান সন্দেহ ও বৈরিতার অবসানে এক সুদূরপ্রসারী। ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, আমরা মনে করি পাকিস্তানের সঙ্গে এক ধরনের সম্পর্ক তাে আমাদের বজায় থাকবে। বহু বিষয় রয়েছে যা আলাপ-আলােচনার মাধ্যমে। সম্পন্ন করতে হবে। সর্বোপরি বাংলাদেশ উপমহাদেশের অংশ হিসেবে তার অবস্থানের ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব থেকে পালাতে পারে না।
‘তিন মাসও টিকবে না’
২৩ মার্চ ঢাকার মার্কিন মিশন থেকে পাঠানাে দুই পৃষ্ঠার এক টেলিগ্রাম বার্তায় যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে বাংলাদেশের সর্বশেষ মনােভাব ব্যাখ্যা করা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম বার্ষিকী সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্র-বিরােধী মনােভাব ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। এমনকি ঢাকার কনসাল জেনারেল পর্যায়ের মিশন রাখার বৈধতা প্রশ্নেও বাংলাদেশ সরকার কোনাে ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে ফেলতে পারে। ইন্দিরা ও মুজিবের যৌথ বিবৃতিতে উপমহাদেশের শান্তি-শৃঙ্খলা নস্যাতে অজ্ঞাত শক্তির (প্রকারান্তরে যুক্তরাষ্ট্র) তৎপরতার কথা বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের শ্রমমন্ত্রী আব্দুল মান্নান যিনি সম্প্রতি মস্কো থেকে ফিরে এসেছেন, তিনি বাংলাদেশে সিআইএ ও মাওবাদী কার্যক্রমের নিন্দা করেছেন। তার আরাে দাবি, মার্কিন সাংবাদিকরা তাকে বলেছেন, বাংলাদেশ তিন মাসের বেশি টিকবে না। এই মন্তব্যকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অশুভ তৎপরতার নমুনা হিসেবে চিত্রিত করেছেন। মার্কিন মিশনে কর্মরত সিনিয়র বাঙালি কর্মকর্তারা তাদের বন্ধুবান্ধব কর্তৃক ক্রমাগত এই প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন যে, যে সরকার তাদের দেশকে স্বীকার করে না, সেখানে তারা কিভাবে কাজ করবে? স্থানীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি প্রতিনিধিদল গােপনে আমাদের জানিয়েছে যে, যদি চাপ অব্যাহত থাকে তাহলে মার্চের পরে মার্কিন মিশনে কাজ করা তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়বে। মার্কিন নাগরিক ও সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, তাদের পক্ষে এন্ট্রি ভিসা ও অবস্থানের মেয়াদ বাড়ানাে ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে। সত্যি বলতে কী অবস্থা এমন দাড়িয়েছে যে, ঢাকায় সময় খুব দ্রুত গড়িয়ে যাচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে সরকার যদি আমাদের মিশনের মর্যাদা ও কার্যক্রম হ্রসের ঘােষণা দেয় তা হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
বাংলাদেশ হবে আঁস্তাকুড়
৪ জুন, ১৯৭১। সময় সকাল ৯ ৪২-৯:৫১
নিক্সন ও কিসিঞ্জারের কথােপকথন।
কিসিঞ্জারঃ মি, প্রেসিডেন্ট, ইয়াহিয়াকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।
নিক্সনঃ দেখুন চীনা ফ্যাক্টর ব্যতিরেকেও আমি ভারতীয়দের সাহায্য করব না। ভারতীয়রা মােটেই ভালাে লােক নয়। কিটিং (দিল্লিতে নিযুক্ত তকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত) তাদেরই একজন যারা ঐ দেশটিতে রাষ্ট্রদূত হিসেবে গিয়ে নিজেদের শুষে নিতে দিয়েছে। আর তিনিও এখন ভাবছেন।
কিসিঞ্জারঃ ওরা বেজম্মার বাচ্চা। ওরা কখনাে আমাদের জন্য একটি আঙুলও তােলেনি। তাহলে আমরা কেন পূর্ব পাকিস্তানের ঝামেলায় জড়াতে যাব? আর তা ছাড়া আমি সম্পূর্ণভাবে এই পয়েন্টের সঙ্গে একমত যে, পূর্ব পাকিস্তান যদি কখনাে স্বাধীন হয় তাহলে এটা পরিণত হবে এক আঁস্তাকুড়ে (সেসপুল)। এরা সংখ্যায় উন্নীত হবে ১০০ মিলিয়নে। আর এশিয়ায় তাদের জীবন-যাপনের মান হবে নিম্নতম।
নিক্সনঃ ইয়াহ।
কিসিঞ্জারঃ সম্পদ নেই। তারা পরিণত হবে কমিউনিস্ট অনুপ্রবেশের জন্য এক উর্বর ভূমি। এবং তখন পশ্চিমবঙ্গের কারণে ভারতের ওপরই তারা চাপ সৃষ্টি করবে। ভারত এখন যা করছে তা হয়তাে তাদের স্বভাবসুলভ ইডিয়ােটিক আচরণ। অবশ্য তাদের মনের মধ্যে যদি এটা থাকে পূর্ব-পাকিস্তান আসলে পরিণত হবে তাদের এক ধরনের প্রটেক্টরেটে, তাহলে ভিন্ন কথা। এমন কিছু একটা তাদের মনের মধ্যে থাকতেই পারে। নিক্সনঃ ওহ, তাদের মনের গহীনে যা আছে তা হলাে পাকিস্তানকে ধ্বংস করা।
৮২ বছর বয়সী কিসিঞ্জার ২০০৫ সালে এক বিবৃতিতে নিক্সনের সঙ্গে আলােচনায় ভারতকে বেজন্মা ও ইন্দিরা গান্ধীকে ডাইনী বুড়ি হিসেবে মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এসব মন্তব্যকে স্নায়ুযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে দেখতে হবে।
সূত্র: ১৯৭১ আমেরিকার গোপন দলিল – মিজানুর রহমান খান – সময় প্রকাশন