রাজাকার নিধনযজ্ঞে
আযাদ হেলাল প্রদত্ত ॥ মুক্তিবাহিনী বাংলাদেশের শস্য সবুজ মাঠকে রক্ষিত করার পথে খানসেনাদের সর্বপ্রকার সাহায্য সহযােগিতা দান করার অপরাধে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল ব্যাপকহারে রাজাকার ও পাকসেনাদের খতম করার নেশায় মেতে উঠেছেন। ফলে, বর্তমানে অধিকৃত এলাকায় অবস্থানরত পাকদালালরা। বিদ্রি রজনী যাপন করছে এবং শত শত রাজাকার তাদের অস্ত্রশস্ত্রসহ মুক্তি বাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে প্রাণ ভিক্ষা চাচ্ছে। সম্প্রতি ডিমলায় ৪ জন, খড়খড়ি বাড়ীতে ৫ জন, বড়খাতায় ২ জন রাজাকারকে গ্রেপ্তার করা। হয়েছে। বড়খাতায় ১৪৪ জন ধুরনীচর ৭ জন এবং ১৮ জন রাজাকার মুক্তিবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করেছে। ডিমলা থানার গুটিবাড়ী এলাকার পাকদালাল আবদুর রহমান, পশ্চিম খড়িবাড়ীর নামকরা । পাকদালাল ইশরাত আলী কিসমত, ছাতনাইয়ের বাবুর আলী সরকার ও ফেছকা মুন্সীকে মুক্তিবাহিনী। গ্রেপ্তার করছে। পরে জসিম উদ্দীন সরকার ও শুকুর মিয়া নামক দুইজন পাক দালাল আত্মসমর্পণ। করেছে। এই সমস্ত এলাকার উল্লেখযােগ্য সংবাদ হচ্ছে খান সেনাদরে সুরক্ষিত দুর্গ বড়খাতার একটি। ব্যাংকার থেকে মােহাম্মদ মুন্সী নামক এক মওলানার স্ত্রীকেও উদ্ধার করা হয়েছে। উক্ত মওলানা দীর্ঘ। দিন থেকে খান সেনাদের মদদ দিয়ে আসছিল এমন কি নিজের স্ত্রীকে দিয়েও খান সেনাদের মনােরঞ্জন করেছে।
দালালের পুরস্কার বুলেট মুক্তি পাগল বীর মুক্তিযােদ্ধারা শত্রুদের খতম করার এক মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। রংপুর জেলার দলগ্রামের কুখ্যাত পাক দালাল মন্টু কাজীর ভ্রাতুস্পুত্র আলি হােসেন মুক্তিবাহিনীর খোজ খবর সংগ্রহ করার জন্য মুক্তাঞ্চলে আগমন করলে মুক্তিবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয় পরে তাকে হানাদার বাহিনীকে। হত্যা, লুঠতরাজে সহায়তা করার অভিযােগে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অপর দিকে রাজপুর ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সৈয়দার রহমান ও কালে মামুদকে মুক্তিবাহিনী খতম করেছে।
রণাঙ্গণ (২) ৪ ডিসেম্বর ১৯৭১
সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪