নোয়াখালীতে কুখ্যাত জামাত নেতা নিহত
১২ই নভেম্বর আমাদের প্রতিনিধি বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছেন যে সম্প্রতি মুক্তিবাহিনীর বীর গেরিলারা নােয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার কুখ্যাত জামাত নেতা হেকিম আলী আহমদকে নিহত করে এবং চাপরাশিরহাটের কনভেসান মুসলিম লীগের গুন্ডা আবুতাহের ও তাহার সহকর্মীকে হত্যা করে দালালীর প্রায়শ্চিত্ত করার সুযােগ দেয়।
জাতীয় বাংলাদেশ ॥ ১:১ ॥ ১৫ নভেম্বর ১৯৭১
জঙ্গীশাহীর বেয়নেটে ছাত্রনেতা নিহত
সম্প্রতি খুনী ইয়াহিয়ার জঙ্গীবাহিনী রাজাকার সমেত ননায়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার পল্লী এলাকা যােগীদিয়া গ্রামে হানা দিয়ে চট্টগ্রাম জলদিয়া মেরিন একাডেমির ১ম বর্ষ মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র এ, এম, এম, লিয়াকত আলীকে (আজাদ) হত্যা করে। জনাব আজাদ এম, সি, কলেজ সিলেট থেকে গত বৎসর আই, এসসি পাশ করেন এবং সিলেট শহর ছাত্র লীগের সহ-সম্পাদক ছিলেন। জানা গেছে যে নােয়াখালী জেলা ছাত্র লীগের প্রাক্তন সম্পাদক গােলাম মহিউদ্দিনকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করার সময় আজাদ মিলিটারী ও রাজাকারদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে রাইফেল কেড়ে নেয় এবং এলােপাথাড়ি গুলি ছুঁড়ে ৩ জন দুষ্কৃতকারী রাজাকারকে আহত করে এবং পরে নীজে শত্রুপক্ষের গুলি বিদ্ধ হয়ে মারা যায় মরহুম “জাতীয় বাঙলা দেশ” পত্রিকার সম্পাদক এর কনিষ্ঠ ভ্রাতা এবং অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মরহুম আলী আহম্মদের কনিষ্ঠ পুত্র।
জাতীয় বাংলাদেশ | ১:১ ॥ ১৫ নভেম্বর ১৯৭১
আর একজন খতম
ইয়াহিয়ার তথাকথিত উপ-নির্বাচনে রাজশাহী হইতে ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত মুহাম্মদ ইয়াসিনকে মুক্তি বাহিনীর গেরিলারা খতম করিয়াছে। ইয়াসিন পি-ডি-পি ভুক্ত দালাল ছিল।
নতুন বাংলা ॥ ১; ১৪ ১৮ নভেম্বর ১৯৭১
ফিকহ্ কলাম
নূরুল আমিনের করুন সুর পি, ডি, পি, প্রধান জনাব নূরুল আমিন সাহেব পশ্চিম পাকিস্তানে গিয়ে আর্তস্বরে কেঁদে ফেলেছেন। মুক্তিবাহিনীর বিচ্ছুগুলা’ যে হারে ‘শয়তানী’ শুরু করেছে তাকে প্রতিহত করার মত যথেষ্ট রাজাকার। নাকি অধিকৃত বাংলায় এখনও দেখা যাচ্ছে না। সুতরাং রাজাকারদের সংখ্যা না বাড়ালে পাকিস্তান। টিকানাে অসম্ভব হয়ে পড়বে। চেষ্টা তাে কম হচ্ছে না। কিন্তু খতমের হার যে দিন দিন বেড়েই চলেছে। দালালেরা পটল তুলছে গত দু সপ্তাহ যুদ্ধের খবরে ইয়াহিয়া খান সাহেবের তেরটা বাজবার উপক্রম হয়েছে। যে সব। দালালদের উপর নির্ভর করে তিনি অধিকৃত বাংলা শাসনের কথা চিন্তা করেছিলেন তাদের চির বিশ্রাম গ্রহণের হার দিন দিন বেড়েই চলেছে। একে একে নিভিছে দেউটি।
দেশ বাংলা ॥ ১: ৪ ॥ ১৮ নভেম্বর ১৯৭১
চাদপুরে ১২ জন রাজাকার বন্দী ও ২জন খতম
গত ২৬শে অক্টোবর মুক্তিবাহিনীর নৌ কমান্ডােরা চাঁদপুরের নিকট মেঘনার বুকে পাকিস্তান সৈন্যবাহী ৩টি দেশী নৌকায় আক্রমণ করেন। এ নৌকাগুলােতে সৈন্যদের রসদও ছিল। এ আক্রমণে খান সেনাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও ১২ জন রাজাকারকে ৪টি রাইফেলসহ বন্দী করা হয়। নৌ কমান্ডাে আটককৃত খাদ্যদ্রব্য গ্রামবাসীদের মধ্যে বিতরণ করেন। গত ২৯শে অক্টোবর চাঁদপুর রেলওয়ে গুদামের কাছে এক দালালের বিই কোং পেট্রোল ডিপােতে অগ্নি সংযােগ করেন। ফলে প্রহরারত ২জন দালাল খতম হয় এবং ৪ জন গুরুতররূপে আহত হয়।
জয়বাংলা (১) ১ : ২৮ ॥ ১৯ নভেম্বর ১৯৭১
দালাল নিধন তথাকথিত
উপনির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় পি, ডি, পি’র টিকিটে নির্বাচিত M. N. A. রাজশাহীর মাে: ইয়াছিনকে সম্পতি মুক্তিবাহিনী দেশমাতৃকার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার অপরাধে গুলী করে হত্যা করেছে।
|বাংলাদেশ (৪) ॥ ১: ৪ | ১৯ নভেম্বর ১৯৭১
বিজয় বার্তা
রাজাকার ও পাক সৈন্যের মধ্যে সংঘর্ষ কুষ্টিয়া, যশােহর ও খুলনা রণাঙ্গণ : বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে যে রায়পাড়াতে পাকসেনা ও রাজাকারদের মধ্যে গােলা বিনিময় হয় ফলে ৪০ জন রাজাকারের মৃত্যু ঘটে। এই সংঘর্ষের কোন কারণ জানা যায়নি। গত ১২ই নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার আলমডাঙ্গায় মুক্তিবাহিনী পাক সেনাদের ঘাঁটি ঘেরাও করে এবং প্রচন্ড আক্রমণ চালায়, ফলে ১৭ জন পাক সেনা খতম হয়। | ১৪ই নভেম্বর বীর গেরিলারা আঙ্গুলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পে ঘেরাও করে এবং ১২ জন পশ্চিমা পুলিশ খতম করে। | নাটসি গাগারি যােগাযােগে পথে এক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ১১ জন হানাদার খতম করা হয় । খােদাইপুরে পাক সেনা ও মুক্তিবাহিনীর মধ্যে এক বিরাট সংঘর্ষে ১ জন ক্যাপ্টেনসহ ১০ জন পাক সেনার মৃত্যু ঘটে। | সাকুরা মােহনপুরে একটি সামরিক ক্যাম্পের উপর মুক্তিযােদ্ধারা অতর্কিতে ঝাপিয়ে পড়ে, ফলে বহু খান সেনা হতাহত হয়। গেরিলারা এই ক্যাম্প থেকে ৫৭টি রাইফেল হস্তগত করে।
বিপ্লবী বাংলাদেশ ১: ১৪| ২১ নভেম্বর ১৯৭১
রাজাকারদের জন্য শেষ সুযােগ।
(নিজস্ব ভাষ্যকার) বাংলার মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপকতা ও প্রচন্ডতা বৃদ্ধির সাথে সাথে পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার পশুদের মনে এক বিভীষিকাময় আতঙ্কের কালাে ছায়া রেখাপাত করেছে। স্বাধীনতা মন্ত্রে দীক্ষিত মুক্তিযােদ্ধা ও গেরিলাদের অতর্কিত আক্রমণে পাক বাহিনী দিশেহারা, সদা শঙ্কিত। নিতান্ত প্রাণের দায়ে বা মুখ রক্ষার খাতিরে এরা আজ ভগ্নমনে লড়ে যাচ্ছে। এরা এতই শঙ্কিত যে, যেকোন অভিযানে তাবেদার রাজাকার ছাড়া একপাও এগুতে সাহস পাচ্ছে না। রাজাকার নামক এইসব বকরী’ গুলাে এতদিন খুঁটির জোরে বহু কুঁদেছে। আজ খুঁটি ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম দেখে বহু রাজাকার দলে দলে মুক্তিবাহিনীর কাছে অস্ত্রশস্ত্র সমেত আত্মসমর্পণ করে চলেছে।
পায়ের তলা থেকে যখন মাটি সরে যাচ্ছে, পালে যখন উল্টো হাওয়া বইতে শুরু করেছে তখন এদ্দিন যারা ধর্মীয় বিভ্রান্তি, প্রলােভন বা সাময়িক মােহের বশর্বতি হয়ে অথবা লুটপাটের দরাজ সুযােগ লাভের জন্য সেনাবাহিনীর তল্লাবাহক হয়ে স্বজাতি নিধন যজ্ঞে, অগ্নিসংযােগ ও লুণ্ঠনে লিপ্ত ছিল তারা আজ সম্বিত ফিরে পাচ্ছে ক্রমশ:। তাই দলে দলে এরা আত্মসমর্পন করে চলেছে। রাজাকারদের কাছে। শেষ সুযােগ এসেছে। এদের ভেবে দেখা উচিত কার জন্য বা কিসের জন্য এরা আত্মবলিদান করে চলেছে। একবারও কি এরা ভাবছে না যে স্বাধীন বাংলায় এদের কি অবস্থা হবে। বাঙ্গালী হয়ে বাঙ্গালীর প্রতি এই ক্ষমাহীন আচরণের জন্য তাদের শাস্তি পেতেই হবে। আর স্বদেশ দ্রোহীতার বা স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরােধের একমাত্র শাস্তিই হলাে মৃত্যুদন্ড । এখন কিছু সময় বাকী আছে। আজও যদি এরা মুক্তাঞ্চলে চলে আসে, কৃতকর্মের অনুশােচনা করে, তবে আমরা তাদেরকে পথভােলা মানুষ বলে পরিপূর্ণ নাগরিকের মর্যাদা দেব। যার যা অস্ত্রশস্ত্র আছে তাইসমেত আত্মসমর্পণ করে আত্মপক্ষ সমর্থনের শেষ সুযােগ এসেছে রাজাকারদের কাছে।
বাংলাদেশ (১) u ১ : ২২ [ ২২ নভেম্বর ১৯৭১
সিলেটে ৮০ জন রাজাকারের আত্মসমর্পণ
আমাদের নিজস্ব প্রতিনিধি জানাচ্ছেন যে, সম্প্রতি সিলেটের মৌলভীবাজার রণাঙ্গনে গেরিলা যােদ্ধারা। সােনামুড়া, সমানভাগ, জান্তীয়াপুর, গােয়ালবাড়ী ও শ্রীবর্দীতে পাকিস্তানী সৈন্য ঘাঁটির ওপর প্রচন্ড আক্রমণ চালিয়ে বহু সৈন্যকে হতাহত করেন। রক্ষীচরে গেরিলা যােদ্ধারা ৩১ জন দখলদার সৈন্যকে খতম করেন। সুনামগঞ্জ রণাঙ্গনে গত ১৪ই নভেম্বর স্বাধীনতাকামী তরুণ যােদ্ধারা একটি দীর্ঘ সেতু মাইনের দ্বারা উড়িয়ে দেন। এ সমর বীর দুঃসাহসিক মুক্তি যােদ্ধারা পাকিস্তানী একটি অগ্রগামী জীপের ওপর চোরাগােপ্তা আক্রমণ চালিয়ে ১ জন ক্যাপ্টেন সহ ৫ জন হানাদারকে হত্যা করেন। এদিকে সিলেটের কোন এক এলাকায় দখলদার সৈন্যদের চরম বিপর্যয়ের মুখে হতাশগ্রস্থ ৮০ জন পদলেহী দালাল রাজাকার প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র সহ মুক্তি বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।
জয়বাংলা (১) ॥ ১: ২৯ ॥ ২৬ নভেম্বর ১৯৭১
দালাল খতম চলছে চলবে
ঢাকা, ২৩শে নভেম্বর :সম্প্রতি একজন বিদেশী সাংবাদিক মি: ক্লেয়ার হলিংওয়ার্থ পাকিস্তান সামরিক সরকারের গােপন সূত্র উদ্ধৃত করে বলেছেন শহরগুলােতে মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যােদ্ধাদের তৎপরতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন দৈনিক কমপক্ষে ২০ জন হানাদার সৈন্য প্রাণ হারাচ্ছে। মুক্তিবাহিনীর গেরিলাযােদ্ধারা হানাদার সৈন্য ও তাদের তাবেদার দালালদেরকে যুগপত খতম করে চলেছেন। | এবিসি-র (অস্ট্রেলিয়া ব্রডকাষ্টিং কর্পোরেশন) এক খবরে মুক্তি বাহিনীর অসম সাহসী বীর যােদ্ধারা গত ১৮ই নবেম্বর দখলীকৃত চাটগাঁ বেতারের জনৈক সহকারী আঞ্চলিক পরিচালককে প্রকাশ্যে গুলী। করে খতম করেন। এর আগে ঢাকা বেতারের জনৈক সিনিয়র রেডিও ইঞ্জিনিয়ারকে প্রকাশ্য দিবালােকে পাকিস্তানী সৈন্যদের কড়া টহলদানের মধ্যে গ্রীন রােডের পথের ওপর হত্যা করা হয়। এই আক্রমণ। কালে ঐ ইঞ্জিনিয়ারের পার্শ্ববর্তী অন্য দুইজনকেও গুরুতররূপে আহত করেন।
গত ১১ই নভেম্বর আমাদের বীর সেনানীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দখলীকৃত ঢাকা সহরের চারদিকে। ব্যাপকভাবে আক্রমণ চালিয়ে কমপক্ষে ৮ জন বেঈমান কুখ্যাত দালালকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন। মুক্তিযােদ্ধারা আরেকটি সফল আক্রমণ চালান বায়তুল মােকারমে। মুক্তিযােদ্ধাদের বীরত্বের সংবাদ পরিবেশন করে ঢাকা বেতার কেন্দ্র জানাচ্ছে যে, গেরিলাযােদ্ধারা অত্যন্ত সন্তর্পণে বায়তুল মােকাররমের সম্মুখে কতিপয় দালালের পার্ক করা মােটরগাড়ীর সাথে বােমা লাগিয়ে রাখেন এবং সময় মত বােমা বিস্ফোরিত হলে উক্ত এলাকায় এক ভয়াবহ দৃশ্যের অবতারনা হয়। এই আক্রমণে ৫ জন নিহত এবং ৩৬ জন গুরুতররূপে আহত হয়। এছাড়া খানসেনা তাবেদারদের কয়েকটি গাড়ী বিনষ্ট হয়। ঐদিন অপর এক স্থানে মুক্তিযােদ্ধারা দুর্বার আক্রমণ চালিয়ে একজন দক্ষিণপন্থী রাজনীতিবিদসহ অপর ৩ জনকে গুলী করে হত্যা করেন। একই দিনে গেরিলা যােদ্ধারা একটি কলেজ ও একটি সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ে বােমা দ্বারা। আক্রমণ চালিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির মারাত্মক ক্ষতি সাধন করেন। এখানে উল্লেখযােগ্য পাকিস্তানী জানােয়ার সৈন্যরা এখানে অবস্থান করছিল।
| জয়বাংলা (১) ॥ ১: ২৯ ॥ ২৬ নভেম্বর ১৯৭১
এই কসাইদের হত্যা করতে হবে
যশােরের শত্রু কবলিত এলাকা থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে যে, গত ৮ই নবেম্বর ভােরে যশাের জেলার রাখার পাড়া থানার অন্তর্গত চৈত্র বাড়ী বাজারে বহু শরণার্থী রাজাকারদের হাতে হতাহত হয়। খবরে প্রকাশ, বরিশাল ও ফরিদপুর থেকে প্রায় ৪ হাজার হিন্দু-মুসলমান পশ্চিম বাংলায় আশ্রয় গ্রহণের উদ্দেশ্যে বনগাঁও সীমান্তের দিকে আসছিল। পথিমধ্যে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়া তারা চৈত্র বাড়ী বাজারের স্কুল ময়দানে আশ্রয় নেয়। ৮ই নবেম্বর ভােরের দিকে খাজুরা রাজাকার ক্যাম্প থেকে মুসলিম লীগ গুন্ডা ডক্টর ইব্রাহিমের নির্দেশে একদল রাজাকার এসে শরণার্থীদের ঘিরে ফেলে। তাদের সাথে যােগ দেয় কটুয়া কান্দির হাবিব, উত্তর চাঁদপুরের দলিল উদ্দীন মােল্লা, সমিন ও দাউদ, হুলিহরে এন্তাজ শেখ তাহের মীর ওরফে মটুক, পদ্ম বিলার নুরুল মীর এবং নরসিংহপুরের জয়নাল, সদর ও বন্দর প্রমুখ গুন্ডা। রাজাকার নামধারী এই গুন্ডারদল চারিদিক ঘিরে শরণার্থীদের জনে জনে তল্লাসী করে, তাদের সমস্ত টাকা পয়সা ও অলঙ্কারাদি ছিনিয়ে নেয়। প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনামতে তারা শরণার্থীদের কাছ থেকে নগদে ও অলঙ্কারাদিতে দু’লাখ টাকার মত ছিনিয়ে নেয়। | অতঃপর গুন্ডারা শরণার্থীদের নিজ নিজ বাড়ীতে ফিরে যেতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু তারা এই বলে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানায় যে স্থানীয় মিলিটারী ও রাজাকাররা তাদের সমস্ত বাড়ীঘর ভস্মীভূত করে। ফেলেছে এবং তাদের সমস্ত জিনিষপত্র ও গরু বাছুর পর্যন্ত লুট করে নিয়েছে। সুতরাং তারা বাড়ী ফিরে যাবে না। এরপর গুন্ডারা তাদের উপর নির্বিচার গুলী চালায়। যার ফলে প্রত্যক্ষদর্শীর মতে শতাধিক নিরীহ শরণার্থী প্রাণ হারায়। শেষ পর্যন্ত শরণার্থীরা নিজ নিজ বাড়ী ফিরে যেতে বাধ্য হয়। খবরে আরাে প্রকাশ, রাজাকাররা কয়েকটি তরুণ সুদর্শনা শরণার্থী মেয়েকে খাজুরা রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং বর্তমানে তারা সেখানে পূর্বোল্লিখিত গুন্ডা সর্দার ইব্রাহিমের গৃহে আটক রয়েছে।
জয়বাংলা (১) ॥ ১: ২৯ ॥ ২৬ নভেম্বর ১৯৭১
সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪