You dont have javascript enabled! Please enable it!

দিল্লীর পাক দূতাবাসে বাঙ্গালী নিধনের দানবীয় কীর্তি

৪ঠা নভেম্বর, পাক জঙ্গীশাহীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে দিল্লীসহ পাক দূতাবাসের ১০ জন বাঙ্গালী কর্মচারী বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে দূতাবাস পরিত্যাগ করে চলে আসার সময়, দূতাবাসের ইয়াহিয়ার দানবরূপী নিরাপত্তা রক্ষীদের হাতে প্রহৃত ও অপমানিত হয়। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, এই ১০ জন বাঙ্গালী কর্মচারী তাদের পরিবারবর্গসহ দূতাবাস ত্যাগ করে চলে আসার সময় দূতাবাসের রক্ষীরা বাঙ্গালী কর্মচারী ও পরিবার বর্গের উপর লাঠি, লােহার রড ও অন্যান্য মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে মােহাম্মদ ইউনুস নামে দুতাবাসের জনৈক করণিক প্রচন্ড আঘাত পান। | ১০ জন বাঙ্গালী কর্মচারী ও তাদের পরিবারবর্গ সহ মােট ৩৩ জন ব্যক্তি দূতাবাসের বাইরে এসে অশ্রুসজল চোখে পশ্চিম পাকিস্তানীদের নির্মমতার কাহিনী বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, পাক বর্বরতার হাত থেকে শিশুরা পর্যন্ত রেহাই পায়নি।  সাজ্জাদ হায়দারকে এক চরমপত্র দিয়েছেন।

এতে বলা হয়েছে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি হুসেন আলী। তার পরিবারকে মুক্তি দেওয়া না হয় তাহলে উপযুক্ত প্রতিশােধ নেওয়া হবে হুসেন আলীর মুক্তির জন্য কুটনৈতিক মন্ডলীর ডীন, রেডক্রশ ও উথান্টের কাছেও আবেদন করা হয়েছে। জনাব চৌধুরী বলেন, আবেদনে কি প্রতিক্রিয়া হয় তার জন্য আমরা অপেক্ষা করব; তবে রাষ্ট্ৰসংঘ, রেডক্রশ ও উীনের প্রয়াস যদি নিষ্ফল হয় তাহলে প্রতিশােধমূলক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।  সৈয়দ নজরুল ইসলাম হুসেন আলীর মুক্তির উদ্দেশ্যে অবিলম্বে উথান্টের প্রতি এক আবেদন জানিয়েছেন। জনাব নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত গণহত্যা এখন বিদেশে পাক কূটনৈতিক মিশনগুলির ভিতরেও চালানাে আরম্ভ হয়েছে। বিশ্বসমাজের উচিত এই আচরণের তীব্র নিন্দা করা।

বিপ্লবী বাংলাদেশ  ১: ১২ ৭ নভেম্বর ১৯৭১

শিল্পী-নির্যাতন অব্যাহত

(নিজস্ব বার্তা পরিবেশক)  বিলম্বে প্রাপ্ত এক খবরে প্রকাশ, বিশিষ্ট শিল্পী আলতাফ মাহমুদ প্রথমে পাকসৈন্যদের দ্বারা গ্রেপ্তার হয় এবং ছাড়া পায় ইহার কিছুদিন পর আবার তাহাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আলতাফ মাহমুদের সহিত যাহাদের গ্রেপ্তার করে তারা হলেন পীর আলী ও হাফিজুর রহমান। পাক সৈন্যরা শিল্পী সাহিত্যিক শিক্ষক সাংবাদিক সাধারণ ক্ষমার নিদর্শন দেখাইয়াও কাহাকেও রেহাই দিতেছে না। পক্ষান্তরে অকথ্য অত্যাচার সকল শ্রেণীর মানুষের উপর চালাইতেছে।। অপর এক খবরে জানা যায় যে, বর্বর এহিয়ার জল্লাদবাহিনী শিল্পী হাফিজুর রহমানের একটি চক্ষু উপড়াইয়া ফেলিয়াছে এবং অপরটি নষ্ট করিয়াছে। এইভাবে জল্লাদ এহিয়া ও তার সেনাবাহিনী বাংলাদেশের মানুষের সহিত ক্ষমার নির্দশনের পর মহানুভবতা দেখাইতেছে।

নতুন বাংলা ॥ ১: ১৩ ॥ ১১ নভেম্বর ১৯৭১

সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!