You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.18 | করাচীতে বাঙলীদের দুঃসহ অবস্থা - ইকবাল আহমেদের সশ্রম কারাদন্ড - সংগ্রামের নোটবুক

করাচীতে বাঙলীদের দুঃসহ অবস্থা

করাচী হইতে জনৈক বাঙালী ভদ্রলােক এক চিঠিতে জানাইয়াছেন যে, সেখানকার বাঙালীরা বর্তমানে এক অসহনীয় মানসিক দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাইতেছেন। সেখানে বাঙালীরা রাস্তাঘাটে চলাফেরা করিতে নিরাপত্তার অভাব অনুভব করিতেছেন। সমস্ত বাঙালী সরকারী বা বেসরকারী কর্মচারীর ছুটি বন্ধ করিয়া দেওয়া হইয়াছে। তাছাড়া বাঙালীদেরকে সামরিক কর্তৃপক্ষ এক বিশেষ ধরনের “আইডেন্টিটি কার্ড” দিয়াছেন, যাতে লেখা আছে : “করাচী স্টেশন ছাড়িয়া যাইতে পারিবে না।” কাহাকেও করাচীর  বাইরে যাইতে হইলে অফিসের উর্ধ্বতন অফিসারের নিকট হইতে অনুমতি নিতে হয়। সম্প্রতি একজন বাঙালী যুবক তার অফিসারের দস্তখত নকল করিয়া বাংলাদেশে পালিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করিয়াছিল। কিন্তু সামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়িয়া যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় । পরে তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায় নাই। এমনি অসহনীয় পরিবেশের মধ্যে বর্তমানে করাচীর বাঙালীরা দিন যাপন করিতেছে।  পাক জঙ্গী শাসকচক্র বাঙালী অবাঙালীর বিরােধ উস্কাইবার উদ্দেশ্যেই বাঙালীদের বিরুদ্ধে এরূপ বৈষম্যমূলক আচরণ করিতেছে বলিয়া ধারণা করা হয়। উল্লেখযােগ্য যে, বাঙলাদেশে তাহাদের কুকীর্তি  ঢাকার জন্য শাসকচক্র পশ্চিম পাকিস্তানে উগ্র বাঙালী বিরােধী প্রচারণা চালায়।

মুক্তিযুদ্ধ ॥ ১ : ১১ / ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

ইকবাল আহমেদের সশ্রম কারাদন্ড

বাঙলাদেশের প্রগতিশীল তরুণ জনপ্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত গায়ক এবং বাঙলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃস্থানীয় কর্মী জনাব ইকবাল আহমেদকে সম্প্রতি এক বিশেষ সামরিক আদালতে দুই বৎসর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হইয়াছে। ইকবাল আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাংস্কৃতিক সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ‘সংস্কৃতি সংসদের সহ-সভাপতি।

মুক্তিযুদ্ধ ॥ ১: ১১ ॥ ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪