ধর্ষণ করে নতুন জাতির সৃষ্টি
(ভারতীয় প্রতিনিধি প্রেরিত) কলকাতা : বাংলাদেশে এক নতুন জারজ জাতির জন্ম হতে চলেছে। খান সেনারা বাঙালী যুবতীদের ব্যাপকহারে ধর্ষণ করে এই জাতির জন্ম দিচ্ছে। সম্প্রতি এরকম ধর্ষিতা, সন্তানসম্ভবা ৩০০ যুবতীকে পাক সৈন্যরা মুক্তি দিয়েছে। তাদের কাছ থেকে জানা যায় যে, পাক সৈন্যরা বাঙালী মেয়েদের ধর্ষণ করে তাদের সন্তানসম্ভবা করে দিচ্ছে। কারণ। খান সেনাদের বিশ্বাস, বাঙালীরা খাটি মুসলমান নয়। তাই, বাঙালী জাতিকে খাঁটি মুসলমান করার জন্যে তাদের মধ্যে খান সেনাদের রক্ত মেশানাে দরকার। সেজন্য খান সেনারা বাংলাদেশের যুবতীদের। সন্ধান করছে। এই তিনশ যুবতী আরও জানিয়েছে যে সর্বক্ষণই তাদের সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে নারীমাংসলােভী বর্বর। পাক সৈন্যদের মধ্যে রাখা হতাে। তারা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে, এই ভয়ে তাদের একটি শাড়িও দেওয়া হতাে না। উচ্চশ্রেণীর মেয়েরা ছিল অফিসারদের ভােগ্য, আর জওয়ানরা পেতে নিম্নশ্রেণীর কৃষক রমনীদের। মেয়েদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে অফিসার ও জওয়ানদের মধ্যে একবার গুলি বিনিময় হয়েছিল তাতে কয়েকজন আহত হয়। এই যুবতীদের বেশীর ভাগই মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে, এবং অনেকেই সুযােগ খুঁজছে। আত্মহত্যা করার। এদের জন্য ডাক্তারী সাহায্যের অত্যন্ত প্রয়ােজন—যাতে ভবিষ্যতে তাদের এই জারজ সন্তানদের তথা কলঙ্কের বােঝা বয়ে বেড়াতে না হয়।
বিপ্লবী বাংলাদেশ ॥ ১: ৫ ॥ ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
হীরালাল দাশগুপ্ত
পটুয়াখালী হইতে প্রাপ্ত এক অসমর্থিত খবরে জানা যায়, পটুয়াখালীর প্রবীণ কমিনিস্ট নেতা কমরেড হীরালাল দাশগুপ্ত (৬৬) পাক সেনাদের হাতে নিহত হইয়াছেন। তবে এই সংবাদের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয় নাই। প্রাপ্ত খবরে বলা হয়, কমরেড দাশগুপ্তকে পাক হানাদার বাহিনী গ্রেপ্তার করিয়া নিয়া যায় এবং পরে। কারাগারে গুলি করিয়া হত্যা করে। কমরেড দাশগুপ্ত দীর্ঘদিন যাবৎ রােগে শয্যাশায়ী ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ ॥ ১: ১০ ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪