৬ নভেম্বর ১৯৭১ঃ লাহোরে ইয়াহিয়া খান নুরুল আমিন বৈঠক
লাহোরে গভর্নর ভবনে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে দেড় ঘণ্টা আলাপ আলোচনায় পিডিপি প্রাদেশিক প্রধান নুরুল আমিন রাজাকারের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি এবং তাহাদের আরও আধুনিক অস্রে সজ্জিত করার আবেদন জানিয়েছেন। বৈঠক শেষে নুরুল আমিন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছেন উপ- নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হবার পর পূর্ব পাকিস্তানে দুষ্কৃতকারীদের নাশকতামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য তিনি পূর্বাঞ্চলে রাজাকারদের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং তাদের আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করার জন্যে প্রেসিডেন্টের কাছে সুপারিশ করেছেন। বর্তমানে অনেক রাজাকারের হাতে অস্র নেই। রাজাকারগন তাদের প্রতিপক্ষদের ঢালাও ভাবে হত্যা করছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি তা অস্বীকার করেন। বহাল আওয়ামী লীগের সদস্যরা উপস্থিতি না জানানো পর্যন্ত জাতীয় পরিষদে শুন্য আসন নিরুপন সম্ভব নয়। তবে আশা করা যায় অধিবেশনের দিন ২৭ ডিসেম্বর তাদের অনেকেই উপস্থিত থাকবেন। আর এরা দল বদল করলেও কোন সমস্যা নেই এলএফওতে এধরনের কোন বিধি নিষেধ নেই।
তিনি শাসনতন্ত্র ২০ ডিসেম্বরের আগেই প্রকাশ করার জন্য প্রেসিডেন্ট এর প্রতি আহবান জানিয়েছেন। শাসনতন্ত্র জারীর জন্য তিনি ২০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছিলেন। আগে প্রকাশ হলে সদস্যরা শাসনতন্ত্র সম্পর্কে বুঝার জন্য বাড়তি সময় পেতেন। তিনি বলেন প্রেসিডেন্ট নির্ধারিত ক্ষমতা হস্তান্তরের তারিখের বিষয়ে তিনি অটল থাকবেন। তিনি বলেন সেনাবাহিনী যত বেশীদিন ক্ষমতায় থাকবে ততই দেশের অমঙ্গল বয়ে আনবে। তিনি বলেন প্রেসিডেন্ট তাকে সর্বাধিক স্বায়ত্তশাসনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রেসিডেন্ট শীঘ্রই পূর্ব পাকিস্তান সফর করবেন বলে তাকে আশ্বস্ত করেছেন। তিনি রাজাকারের সংখ্যা বৃদ্ধি ও তাদের অস্র প্রদানের ব্যাপারে তার সম্মতি জানিয়েছেন। তিনি বলেন জাতীয় পরিষদে ৬ দলীয় ঐক্য জোট বহাল থাকিবে। শেখ মুজিবের মুক্তি প্রশ্নে আলোচনা হয়েছে কিনা এই প্রশ্নের জবাবে তিনি না বলেন।