কুকুরের স্পর্ধা
বৈদেশিক সুত্রের খবরে প্রকাশ, ইয়াহিয়ার তাবেদার জঙ্গী-ট্রাইবুনাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বিচার প্রহসন শেষে তাকে মৃত্যুদণ্ড দানের সুপারিশ করেছে।
জয়বাংলা (১) ॥ ১: ২৩ ১৫ অক্টোবর ১৯৭১
‘সেদিন দূরে নয় যেদিন বঙ্গবন্ধু ঢাকায় মুক্তি বাহিনীর অভিবাদন গ্রহণ করবেন। —সৈয়দ নজরুল বাংলাদেশের দখলীকৃত এলাকায় সর্বাত্মক মুক্তি সংগ্রামের প্রস্তুতি
(জয়বাংলা প্রতিনিধি)
বর্ষা মৌসুম অবসান প্রায়। বাংলাদেশের প্লাবিত অঞ্চলগুলাে এখন শুকনাে হয়ে উঠছে। মুক্তিবাহিনীও তাই বর্ষা মৌসুমের গেরিলা যুদ্ধ– “হিট, ডেসট্রয় এ্যান্ড রান’, ‘আঘাত কর, ধ্বংস কর এবং নিরাপদ ঘাটিতে ফিরে যাও’ এই নীতি ত্যাগ করে সকল রণাঙ্গনে সর্বাত্মক সম্মুখ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। এক বৈদেশিক সংবাদ সূত্রে বলা হয়েছে, ট্রেনিং প্রাপ্ত প্রায় এক লাখ সেনার একটি দক্ষ বাহিনী (৩০ হাজার নিয়মিত সৈন্যসহ) অবিলম্বে সকল রণাঙ্গনে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছে। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির ঘােষণা সম্প্রতি মুক্তি বাহিনীর এক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেছেন, “সেদিনের আর বেশী দেরী নেই, যেদিন শত্রুর জেল থেকে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে এসে আমাদের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঢাকায় মুক্তি বাহিনীর অভিবাদন গ্রহণ করবেন। মুক্তি বাহিনীর বীর যােদ্ধারা শীঘ্রই হানাদারদের বঙোপসাগরে নিক্ষেপ করবে।’
অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আরাে জোর দিয়ে বলেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে কোন আপস নয়। পৃথিবীর প্রতিটি দেশকে উপলব্ধি করতে হবে, বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষ আর কোনদিন পাকিস্তনিীদের সঙ্গে বাস করবে না। পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন বাংলা তার নিজের শক্তিতেই রাষ্ট্র হিসাবে পরিচিত আছে এবং থাকবে। প্রধান সেনাপতির বিবরণ। বাংলাদেশ মন্ত্রিসভার সদস্যগণ ও পার্লামেন্ট সদস্যগণ এখন মুক্তাঞ্চল সফর করছেন। মুক্তাঞ্চলে সৈয়দ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় তারা যুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যালােচনা করেন। মুক্তি বাহিনীর প্রধান সেনাপতি কঃ এ, জি, ওসমানী মন্ত্রিসভাকে যুদ্ধের সর্বশেষ পরিস্থিতি অবহিত করান।
জয়বাংলা (১) [১: ২৩ # ১৫ অক্টোবর ১৯৭১।
সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৩