৫ নভেম্বর ১৯৭১ঃ যুদ্ধ পরিস্থিতি
পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্র -পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেন ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিবৃতি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় অভিসন্ধির আভাস রয়েছে। ভারতের সেনা সমাবেশ সম্ভাব্য যুদ্ধ প্রস্তুতির কারন। জগজীবন রাম বলেছিলেন পাকিস্তান যদি উপলব্দি করতে পারে বাংলাদেশ পাকিস্তানের অধীনে থাকবে না তবে যুদ্ধের প্রয়োজন হবে না। পাকিস্তান সরকার দেয়ালের লিখন পাঠ ও বাংলাদেশকে বন্ধুত্বপূর্ণ পথে ছেড়ে দেয়ার আহবান জানিয়েছিলেন। তিনি ভারত কে আশ্বস্ত করে বলেন পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কোন দিন যুদ্ধের আশংকা করা ঠিক হবে না। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বারবার বলেছেন পাকিস্তান যুদ্ধ চায় না কারন এতে কোন সমাধান হয় না। মুখপাত্র আরও বলেন ইন্দিরা গান্ধীর পাশ্চাত্য সফরে কোন সুফল আসবে না। পাকিস্তান নৌ বাহিনী প্রধান এডমিরাল মজাফফর হাসান খান বলেছেন দেশ রক্ষা যুদ্ধের জন্য তার বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছে। করাচীতে এম ভি রমনা নামে একটি জাহাজের তলা স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন পাকিস্তান যুদ্ধ চায় না। পাকিস্তান শান্তিপ্রিয় জাতি।
তবে যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হলে আমরা দেশ রক্ষার প্রয়োজনে সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছি। ভারতীয় বাহিনী যুক্ত ৩০০ জনের ভারতীয় চরের একটি দল সিলেটের গোয়াইন ঘাট আক্রমন করে। দলটি বৃহস্পতিবার রাত থেকে মর্টার হামলা শুরু করে এবং গয়াইন ঘাটের কাছাকাছি চলে আসে। গোলাবর্ষণ থেমে আসলে পাক বাহিনী তাদের উপর পাল্টা আক্রমন করে। পাল্টা আক্রমনে ভারতীয় চর রা সীমান্তের অপর পারে চলে যেতে বাধ্য হয়। এখানে ২৮ জন অনুপ্রবেশকারী নিহত হয় ৪০ জন আহত হয়। সারা প্রদেশে এদিন ১৫ গ্রামে গোলাবর্ষণ হয় এতে ২৩ জন নিহত হয় ৫০ জন আহত হয়। এর মধ্যে একটি ফেনীর ফুলগাজীর যাত্রীবাহী বাসের ২০ জন যাত্রীও আছেন। গোলাবর্ষণের গ্রাম গুলো হল কুমিল্লার মুকুন্দপুর, কায়েম্পুর, নয়নপুর, বড় জালা সিলেটের তাহিরপুর, রাধানগর, ময়মন সিংহের আকিপারা, কামালপুর দিনাজপুরের অমরখানা, হিলি রংপুরের বড়খাদা, আমতলী, হরিরামপুর যশোরের ছুটটিপুর খুলনার ভোমরা।