বঙ্গবন্ধুর উপর নির্যাতন
সম্প্রতি রয়েল কমনওয়েলথ সােসাইটির উদ্যোগে লণ্ডনের নরদারল্যাণ্ড অ্যাভিনিউতে অবস্থিত সােসাইটির হলে এক মধ্যাহ্ন বিরতি সভা হয়। এই সভাকে উদ্দেশ্য করে বক্তৃতা দান করার জন্য পাকিস্তানের প্রবল বিরােধিতা সত্ত্বেও জাতিসক্সে বাংলাদেশের প্রতিনিধি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীকে নিমন্ত্রণ করা হয়। বিচারপতি চৌধুরী বাংলাদেশের গণনির্বাচিত নেতা শেখ মুজিবরের উপর বর্তমানে যে অকথ্য নির্যাতন চলছে, শুধু মানবতার খাতিরে সেটাকে বন্ধ করবার জন্য কমনওয়েল্থ রাষ্ট্রসমূহের কাছে আবেদন জানান। তিনি বলেন যে বাংলাদেশ থেকে সদ্য আগত জনৈক দায়িত্বশীল বৃটিশ নাগরিক নিজের উদ্যোগে তার সঙ্গে যােগাযােগ করে তাকে জানিয়েছেন যে, পাকিস্তানকে সমর্থন করে জনাব মুজিবর রহমানের কাছ থেকে উক্তি আদায় করার জন্য পাকিস্তানী সৈন্যরা তার উপর। অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছে। এই বৃটিশ নাগরিকের অনুরােধে এবং তার নিরাপত্তার খাতিরে জনাব চৌধুরী তার নাম গােপন রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। জনাব চৌধুরী তার বক্তৃতার প্রারম্ভে বলেন যে, তিনি বাংলাদেশের সরকারী প্রতিনিধি হিসেবেই শ্ৰোতৃমণ্ডলীকে উদ্দেশ্য করেছেন। তাঁর বক্তৃতায় তিনি পাকিস্তান জঙ্গী-চক্রের নির্মম জাতি নিধন ও ব্যাপক গণহত্যার বর্ণনা করে বলেন যে সভ্যতার গতি আজ বাংলাদেশে থেমে গেছে। যে সভ্যতা গড়ে উঠতে হাজার হাজার বছর লেগেছে সেটাকে যদি কোন অশুভ শক্তি ধ্বংস করতে চায় তাহলে তাকে রােধ করা সারা বিশ্বের কর্তব্য।
স্বদেশ # ১ বর্ষ : ২ সংখ্যা ৪
১ জুলাই ১৯৭১
সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৩