You dont have javascript enabled! Please enable it! 1974.06.17 | দৈনিক পূর্বদেশ -বিশ্বব্যাংকের পুরানাে ঋণের চুরাশি ভাগ মওকুফের প্রস্তাব - সংগ্রামের নোটবুক

জুন ১৭, ১৯৭৪ সােমবার ঃ দৈনিক পূর্বদেশ

বিশ্বব্যাংকের পুরানাে ঋণের চুরাশি ভাগ মওকুফের প্রস্তাব ঃ স্টাফ রিপাের্টার । অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বলেছেন, স্বাধীনতা পূর্বকালের বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের প্রদত্ত ঋণের শতকরা ৮৪ ভাগ মওকুফ করার জন্য তিনি অনুরােধ করেছেন। ওয়াশিংটন থেকে গতকাল রবিবার ঢাকায় ফিরে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে একথা জানান। তিনি বলেন, উল্লিখিত ঋণের পরিমাণ এখনাে নির্ধারণ করা হয়নি। ওয়াশিংটনে তিনি বিশ্বব্যাংক প্রধান মি. রবার্ট ম্যাকনামারার সঙ্গে অতীতের দায়-দায়িত্ব এবং নতুন উন্নয়ন ঋণ সম্পর্কে আলােচনা করেছেন। জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশে প্রদত্ত অতীত ঋণের শতকরা ৮৪ ভাগ মঞ্জুরি হিসেবে গণ্য করে বাকি ১৬ ভাগ আইডিএ ঋণ বলে বিবেচনার জন্য তিনি মি. ম্যাকনামারার কাছে প্রস্তাব করেছেন। বিমানবন্দরে জাতীয় সংবাদপত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী জানান যে, যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে অবস্থানকালে ২০ সদস্য বিশিষ্ট অর্থ তহবিল কমিটির সভায় অংশগ্রহণ ছাড়াও বিশ্ব ব্যাংকের সভাপতি মি. ম্যাকনামারার সঙ্গে বাংলাদেশের জন্যে ব্যাংক ও আইডিএয়ের সাহায্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে আলােচনা করেন। এছাড়া মার্কিন কৃষিমন্ত্রী মি. আর্ল বাটজয়ের সাথে কৃষি উন্নয়ন ও খাদ্যশস্য সংগ্রহ বিষয়েও ফলপ্রসূ আলােচনা করেন। আইএমএফ ডিরেক্টরদের সঙ্গে তিনি ব্যালেন্স অব পেমেন্ট বিষয়ে আলােচনা করেন। জনাব তাজউদ্দিন আহমদ জানান।

বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্টকে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্যে ১৫ কোটি মার্কিন ডলার প্রদানের অনুরােধ করেছেন। জনাব তাজউদ্দিন আহমদ জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বিভিন্ন অধ্যায় ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার বিভিন্ন দিক সম্বন্ধে তিনি বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাহায্য বিষয়ে আলােচনা করেছেন। আগামী আর্থিক বছরে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্যে কমপক্ষে পনের কোটি মার্কিন ডলার প্রয়ােজন বলে তিনি ম্যাকনামারাকে অবহিত করে সাহায্যের জন্যে অনুরােধ করেছেন বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন গত বছর বাংলাদেশ সাত কোটি চল্লিশ লাখ ডলার আইডিএ ঋণ পেয়েছে। আর্থিক সাহায্য প্রদানের ব্যাপারে বিশ্ব ব্যাংকের আগ্রহ সম্পর্কে জনৈক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বলেন, আমি নিরাশ হইনি। ঋণ পাবার ব্যাপারে আপনি কতদূর আশাবাদী এই আরেকটা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আশাবাদী হবার শেষ নেই। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের সভা সম্পর্কে আলােকপাত করতে গিয়ে জনাব তাজউদ্দিন আহমদ জানান, অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহ অর্থনেতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে আর্থিক বিষয়ে যেসব সংকট মােকাবেলা করছে সেগুলাের সুরাহার জন্যে উন্নত দেশগুলাে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করছে। অর্থমন্ত্রী ওয়াশিংটনে অবস্থানকালে আন্তর্জাতিক অর্থ-তহবিলের ডিরেক্টরদের সঙ্গে দায়-পরিশােধ সংক্রান্ত বিষয়ে আলােচনা করেন। ওয়াশিংটন থেকে ফেরার পর বাংলাদেশের আসন্ন বাজেটের কোন পরিবর্তন হবে কিনা জিজ্ঞাসিত হলে জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বলেন, বাজেট তৈরি করা শেষ হয়েছে। সিল করা রয়েছে। আগামী ১৯ জুন তিনি সিল খুলে সংসদে পাঠ করব, কোন পরিবর্তন নাই।

সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি