মে ১, ১৯৭৪ বুধবার ঃ দৈনিক পূর্বদেশ
উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য বাংলাদেশ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সাহায্য পাবে ? স্টাফ রিপাের্টার। অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বলেছেন যে, আগামী অর্থ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক থেকে উল্লেখযােগ্য পরিমাণ সাহায্য পাওয়া যাবে। এছাড়া ব্যাংকের বিশেষ তহবিলের সুবিধাও পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত এশিয় উন্নয়ন ব্যাংকের সপ্তম বার্ষিক সাধারণ সভায় যােগদানের পর ঢাকা ফিরে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি উপরােক্ত তথ্য প্রকাশ করেন। জনাব আহমদ বলেন যে, ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট মি, শিরাে ইনু তাকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিশেষ তহবিলের সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তিনি আরাে জানান যে, বাংলাদেশকে বিশেষ তহবিলের সুবিধা প্রদানের জন্য আবেদনের যৌক্তিকতা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, আলােচনায় মনে হয়েছে যে, উন্নত দেশসমূহের মধ্যে বাস্তবকে উপলব্ধি করার মনােভাব সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি জানান যে, বর্তমান অর্থবছরে ব্যাংকের বিশেষ তহবিলের পরিমাণ হচ্ছে মােল কোটি ডলার। আগামী অর্থ বছরে তা বাড়িয়ে বিশ কোটি ডলার এবং ৭৫-৭৬ সালে পঁচিশ কোটি ডলার করা হবে। জনাব আহমদ বলেন যে, বাংলাদেশ যত তাড়াতাড়ি প্রকল্প প্রণয়ন করতে পারবে তার উপর নির্ভর করবে সাহায্যের পরিমাণ। প্রকল্পসমূহের স্থানীয় ব্যয় ও প্রকল্প ব্যয় পৃথকভাবে বিবেচনা করার এবং সাহায্য দানের বিষয় বিবেচনা করার ব্যাপারে বাংলাদেশের বক্তব্যের সাথে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ একমত হয়েছেন বলে তিনি জানান। অর্থমন্ত্রী আরাে জানান যে, সাধারণ তহবিল থেকে ঋণের সুদের হার উচ্চ এবং মেয়াদ স্বল্পকালীন হয়। অপর পক্ষে বিশেষ তহবিল থেকে সাহায্যের জন্য শুধু সার্ভিস চার্জ নেয়া হয় এবং দীর্ঘমেয়াদি সুযােগ পাওয়া যায়। অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক বাংলাদেশকে ৪০ বছর মেয়াদি ঋণ দিতে রাজি হয়েছে এবং ঋণ শােধের মেয়াদ আরও দশ বছর বাড়ানাে যাবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আয়তনের তুলনায় লােকসংখ্যার আনুপাতিক হার সবচেয়ে বেশি। এ.ডি.বি. কর্তৃপক্ষ তাই। বাংলাদেশের সবুজ বিপ্লবকে সফল করে তােলার জন্য কৃষিভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের প্রকল্পে সাহায্য দানের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব আরােপ করেছেন।
সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি