মে ১০, ১৯৭৪ শুক্রবার ও দৈনিক পূর্বদেশ
কৃষি ঋণের সদ্ব্যবহার করার জন্য কৃষকদের প্রতি আহ্বান ঃ কালিয়াকৈর, ঢাকা, ৯ মে, বাসস। অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ কৃষি ঋণের সুযােগ-সুবিধার পূর্ণ। সদ্ব্যবহার করার জন্য কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানান। সারাদেশে কৃষি ব্যাংকের ১শ ২৩টি শাখা থেকে এই ঋণ দেওয়া হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী গতকাল এখানে কৃষি ব্যাংকের একটি নয়া শাখার উদ্বোধন করছিলেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন বাড়াবার জন্যই কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া হয়। সরকার কৃষকদের যে ঋণ দিচ্ছেন তার ফলে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করবে। এবং খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা যাবে বলে অর্থমন্ত্রী আশা প্রকাশ কলেন। কৃষি ঋণের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, কৃষকদের ত্রাণ সাহায্য অথবা দান হিসেবে কৃষি ব্যাংক থেকে এ ঋণ দেওয়া হয় না। কৃষি ব্যাংক একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।
এর ঋণ উৎপাদন কাজে ব্যবহার করতে হবে এবং কৃষকরা যাতে এ ঋণ সময়মত ফেরত দেন তার ওপর জনাব তাজউদ্দিন আহমদ গুরুত্ব আরােপ করেন। অন্যথায় কৃষি ব্যাংকের তহবিলে ঘাটতি দেখা দিবে এবং আগামীতে ব্যাংক দুঃস্থ। কৃষকদেরকে ঋণ দিতে পারবে না বলে অর্থমন্ত্রী বলেন। জনাব তাজউদ্দিন আহমদ চলতি বছরে কৃষি ঋণ পরিশােধ করার ব্যাপারে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। অর্থমন্ত্রী প্রকাশ করেন যে, গত বছর কৃষকদের ১৯ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয় আর এর মধ্যে এ পর্যন্ত দশ । কোটি টাকা পরিশােধ হয়েছে। জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বলেন, স্বাধীনতার আগের ৪০ কোটি টাকার কৃষি ঋণ অনাদায় রয়েছে। ইতােমধ্যেই এ ঋণ ক্রমান্বয়ে উঠাবার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানী আমলে সারা দেশে কৃষি ব্যাংকের মাত্র ৭৫টি শাখা ছিল। পক্ষান্তরে বর্তমানে কৃষি ব্যাংকের ১২৩ টি শাখা স্থাপিত হয়েছে। ভবিষ্যতে কৃষি ব্যাংকের আরও শাখা প্রধানতঃ পল্লী এলাকাতে খােলা হবে বলে তিনি বলেন।
সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি