এপ্রিল ৯, ১৯৭৪ মঙ্গলবার ঃ দৈনিক ইত্তেফাক
বেআইনী অস্ত্র উদ্ধার ব্যতীত উহার বেপরােয়া প্রয়ােগ বন্ধ করা যাইবে না ? গােসাইয়ের হাট, ফরিদপুর, ৮ এপ্রিল। অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ আবার ঘােষণা করেন যে, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী সংস্থা ব্যতীত অন্য কাহারও হাতে অস্ত্রশস্ত্র থাকা উচিত নহে। তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের ব্যাপারে গণ-আন্দোলন গড়িয়া তােলার জন্য আওয়ামী লীগ কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। আজ সকালে এখানে কৃষি ব্যাংকের একটি শাখা উদ্বোধনকালে অর্থমন্ত্রী বলেন যে, বেআইনী অস্ত্র অবশ্যই উদ্ধার করিতে হবে, নচেৎ উহার বেপরােয়া ব্যবহার রােধ করা যাইবে না। তিনি বলেন যে, সমাজে শান্তি নিশ্চিত করার জন্য যে কোন ব্যক্তির নিকট হইতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করিতে হইবে। জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বলেন যে, সমাজে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা দেশের সুষ্ঠু অর্থনৈতিক তৎপরতার পূর্বশর্ত। তিনি বলেন যে, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলিকে শক্তিশালী ও সুসজ্জিত করিতে হইবে। তিনি আরও বলেন যে, দেশে আইন শৃংখলা রক্ষা করার প্রাথমিক দায়িত্ব পুলিশের। তবে প্রয়ােজনকালে টাস্কফোর্সকে অবশ্যই সহযােগিতা করিতে হইবে।
দেশের অর্থনৈতিক সমস্যা প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন যে, আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে দেশের অর্থভান্ডারের ওপর প্রচন্ড চাপ পড়িতেছে। সর্বোপরি খাদ্য শস্য আমদানি করিতে আমাদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রার বিরাট অংক ব্যয়িত হইতেছে। একমাত্র চলতি বছরেই খাদ্য শস্য আমদানি খাতে সরকারকে ৩৬০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন একই খাতে আগে বরাদ্দকৃত টাকার চাইতে বর্তমান প্রয়ােজন তিনগুণ বেড়ে গেছে। এর আগে ১৯৭৩-৭৪ অর্থ বছরে বিদেশ থেকে খাদ্য শস্য আমদানি খাতে ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। মন্ত্রী বলেন, উপরােক্ত বাড়তি অর্থ ছাড়াও সরকারকে অনুদানসহ রেশন ব্যবস্থা চালু রাখার জন্য এ বছর অতিরিক্ত ১৭০ কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে। অনুদানযােগ্য রাসায়নিক সার সরবরাহেও সরকারকে ৫০ কোটি টাকা বেশি ব্যয় করতে হয়েছে।
সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি