You dont have javascript enabled! Please enable it!

এপ্রিল ৩, ১৯৭৪ বুধবার ঃ দৈনিক ইত্তেফাক

অঙ্গ-দলসমূহের প্রতি তাজউদ্দিন ; বিরােধ মিটাইয়া ফেলুন ঃ শ্রীপুর ঢাকা, ২। এপ্রিল। অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ এই মর্মে সতর্ক করিয়া দেন যে, আওয়ামী লীগ ভ্রান্ত পথ অনুসরণ করিতে পারে না। কেননা, মুক্তিযুদ্ধে একক নেতৃত্ব প্রদানকারী দল হিসাবে জাতিকে সঠিক পথ প্রদর্শনের দায়িত্ব তাহাদের উপরই বর্তাইয়াছে। গত ২৩ মার্চ দুইটি পৃথক পৃথক ঘটনায় আততায়ীর গুলিতে নিহত স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাহাবুদ্দিন মন্ডল ও হাসান আলি মৃধার স্মৃতির উদ্দেশ্যে আয়ােজিত এক শােক সভায় ভাষণ দানকালে তিনি আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ ও যুব লীগের মত অন্যান্য অঙ্গ দলগুলির মধ্যে বিরােধ মিটাইয়া ফেলিয়া পূর্ণ ঐক্য স্থাপনের আহ্বান জানান। তিনি প্রগতিশীল ও সৎ ব্যক্তিদের ঐক্যের ওপর গুরুত্ব আরােপ করিয়া বলেন যে, ক্ষমতাসীন দল ও সহযােগী সংস্থাগুলিকে ঐক্যবদ্ধভাবে গ্রামে গ্রামে ডিফেন্স পার্টি গঠন করিয়া দুষ্কৃতিকারীদের দমন করার উদ্যোগ গ্রহণ করিতে হইবে। জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বলেন যে, অনুরূপ ঐক্যের মাধ্যমে দুষ্কৃতিকারী ও সামাজিক শত্রুদের বিরুদ্ধে জনমত গঠন ও আন্দোলন শুরু করার সময় উত্তীর্ণ হইয়া যাইতেছে। তিনি দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া জনগণের মধ্যে আস্থার ভাব ফিরাইয়া আনার উপর গুরুত্ব আরােপ করেন।

এপ্রিল ০৩, ১৯৭৪ বুধবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে ঢাকাস্থ আণবিক শক্তি কমিশন আযােজিত আলােচনা সভার শশষ অধিবেশনে তাজউদ্দিন আহমদ প্রদত্ত ভাষণ যুগের প্রয়ােজন অনুসারে পরিবর্তন, পরিবর্ধন করার কথা ছিল। আমরা করিনি, করতে পারিনি। যেখানে হাত দিয়েছি সেখানে উল্টোটা করেছি। যা ছিল তা থেকে ভাল করিনি, খারাপ করেছি। আইন-কানুনই বলুন, তারপর এ সব কমিশন রিপাের্ট টিপাের্টই বলুন এখনও আমি আমাদের অনেক ভাল ভাল বন্ধুদেরকে দেখি অন্য কোন তথ্য তাে নেই, তাই যখন তারা কোন উদ্ধৃতি দেন তখন খেয়াল করে দেখি। যে তারা সে সব ফ্লাওড কমিশনের রিপাের্ট থেকে বলছেন। অথচ সেটা তাে সেই ১৯৩৮ সনের-যতদূর মনে পড়ে ১৯৩৮ সনেরই। তারপর তার ওপর আমরা আর কোন কিছু তৈরি করিনি। দুঃখ করে বলছিলাম, এক কথায় আরেক কথা এসে যায়। গতকাল আমাদের কিছু সুধীজনের কাছে বলেছিলাম, আমরা সুষম বন্টন করতে পারছি না। যেটা আমাদের সবচাইতে চরম দুর্গতি এনেছে। কেননা দুষ্প্রাপ্যতার ব্যবধান যেখানে এত বেশি—যেটাকে আপনি আগামীকালই বন্ধ করতে পারছেন না, সকলে মিলেও পারব না, সেখানে তাে কৃতা সাধন এবং সুষম বন্টন ছাড়া আর উপায় নেই এবং এটা আমরা মেশিন এনে করতে পারি না। তখনই আমার মরহুম সােহরাওয়ার্দী সাহেবের কথা মনে হয় । এই যে সিভিল সাপ্লাই এবং ১৯৪৩ সনে রেশনিং সিস্টেম তিনি যেটা করেছিলেন, তাকে যত নিন্দাই করি, যত কিছু বলি যে, সিভিল সাপ্লাই চোরের ডিপাে—এই সমস্ত বলতাম আগে, আজকাল সেটা অবশ্য চলে গেছে। তাে সেই যে একটা তিনি দাড় করিয়ে দিয়েছিলেন, আমরা সেটাকেই অবলম্বন করে এখনও চলেছি, তার বেশি কিছুই করতে পারিনি। যাই হােক এই কথাটি আমি আপনাদের কাছে নিবেদন করলাম এই জন্য ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছি।

সমস্যা সমাধান, সমাধানের পথ এবং সমাধানের জন্য যে প্রয়ােজনীয় যান্ত্রিক ব্যবস্থা, মেশিনারি সেগুলাের কথাও চিন্তা। করতে হবে। তা না হলে আপনাদের এই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়ে যাবে। তাই অন্য । পদ্ধতিগত কিছু ইঙ্গিত আপনাদের রাখতে হবে এবং যান্ত্রিক ব্যবস্থাপনার দিকটাও একটু দেখাতে হবে। যাইহােক এখন কৃষকের সমস্যাগুলিতে আপনারা মােটামুটি তুলে ধরেছেন। এক নম্বর সমস্যা তার জমি নেই। জমি তা কোথা থেকে দেয়া যায়—যে পরিমাণ জমি। আছে তা দিয়ে অর্থনৈতিক চাষাবাদ হতে পারে কিনা, বলবেন তা হতে পারে না। তাহলে বলবেন যে প্রতি একরে উৎপাদন বাড়াতে হবে। বাড়ালে কতটুকু বাড়াতে পারি সেটা চিন্তা করতে হবে। ১৯৪১ সনে পার ফ্যামিলি হােল্ডিং ছিল ২.৫ একর, কিন্তু মনে রাখবেন ১৯৪১ সনের মাথা গুণতিতে এই হিসাব। ১৯৪৭ সনের ১৪ আগস্ট, যে দিন ভারতবর্ষ ভাগ হয় সেদিন আমাদের এই অঞ্চলের জনসংখ্যা ছিল। ৪ কোটি ২১ লক্ষ ১৯ হাজার পয়েন্ট আরাে কিছু, আমার মনে নেই। যাই হােক। এই ৪ কোটি ২১ লক্ষ ১৯ হাজার লােক যদি থেকে থাকে এবং তার গড় হােল্ডিং যদি হয় ২.৫ একরস আর এখন যদি সাড়ে ৭ কোটি বা একটু কম বেশি লােক হয় তাহলে তাে এমনিতেই তা (জমি) ১.২৫ একর হয়ে গেছে। কাজেই জমি কমছে। অন্যদিকে মানুষ বাড়ছে। আবার দেশের লােককে ছেলে মেয়ে কয়টা জিজ্ঞসা। করলে বলে আল্লাহর মাল ১১টা! মাল আল্লাহর, কিন্তু সরকারকেই করতে হবে সব, এখন এই অবস্থায় বুঝতে পারছি না কি হবে। জনসংখ্যা বছরে বছরে বাড়ছে।

আমি তাে আপাতদৃষ্টিতে খুব কাছাকাছি সময়ের মধ্যে এই বর্ধিত জনসংখ্যাকে কনটেইন করা যায় এমন কোন কিছু দেখছি না। কিন্তু আমরা ভবিষ্যতে যদি কোন। পরিকল্পনা করি সেটাতে এই বর্ধিত জনসংখ্যাকে কনটেইন করার ব্যবস্থা রাখতে। হবে। তারপরেও তাে বিশাল যে কাজ জমে আছে—বেকার সমস্যা, সেটার কিছু করা—এত বড় জায়গ্যানটিক টাস্ক এবং এখানে যারা সমবেত হয়েছেন আমি বিশ্বাস করি, আমি জানি, আপনারা জায়গ্যানটিক মেধার অধিকারী । এর সমাধান আপনাদেরকেই করতে হবে। আপনারা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়েছেন। এ জন্য ধন্যবাদ দেই যে, আমরা আপনাদেরকে বলিনি, কিন্তু ইউএনও এবং এর সহযােগি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এই সেমিনার হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশের এমন করুণ অবস্থা হয়, যেটা পৃথিবীর অন্য কোন দেশে সারা দেশময় হয় না। এমন কি অত্যন্ত উন্নত দেশ ইউনাইটেড স্টেটসের মত দেশেও—ঐ মিসিসিপি নদীর মােহনার দিকে, টেকসাসের কিছু অংশ, তারপর মায়ামি থেকে শুরু করে দক্ষিণ দিক দিয়ে গেলে কিছু কিছু ঝড় হয়, বিশেষ করে টেকসাসের দিকে এবং তার আশেপাশে সাংঘাতিক ঘূর্ণিঝড় হয়। একেবারে তাদের | লােহার পােল দিয়ে তৈরি বাড়িগুলাে মুচড়িয়ে দেয়, তাতে কিন্তু সমস্ত দেশ বা শুধু টেকসাস স্টেটটিই সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন—সারাটা বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যায় আর বিশেষ করে যেই | বাংলায় সবচাইতে বেশি কৃষি সম্পদ উৎপন্ন হয় সেখানেই সবচাইতে বেশি বঞ্চনা। | এখানে প্রকৃতির সাথে এই যে যুদ্ধ করা, সেটা কি ভাবে করা যাবে তা আপনাদের চিন্তা করতে হবে।

এখন আমার কথা হচ্ছে, এই যে বিপুলসংখ্যক জনতা সেটা আর যদি নাও বাড়ে আমরা যদি শূন্যের কোঠায় এনে দেই—যে জনসংখ্যা আর বাড়ছে না, জন্ম এবং | মৃত্যুর হার মিলিয়ে সাড়ে সাত কোটিই থেকে যাচ্ছে আগামী কয়েক বছর, তা  হলেও আপনি মানুষকে ঠিক সভ্যতার পর্যায়ে, বাঁচার যে উপাদান তা দিতে। পারছেন না, বর্তমান যে সম্পদ আছে তা দিয়ে। এটা কিন্তু মানুষকে হতাশ করার উদ্দেশ্যে আমি বলছি না, এ বাস্তবটা না জানলে এর সমাধান হবে না। আর যদি | থেকে থাকে কোন শুভ স্টার এবং তা যদি নির্দেশ করা যায় তা হলে তাে ভাগ্যের কথা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে এখনই সরাসরি উদ্ধার পাওয়ার কোন স্বল্পমেয়াদি পথ দেয়া বােধহয় সম্ভব হবে না, তবুও কিভাবে দেয়া যায় সেটা দেখবেন। এই | প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে সংগ্রাম করেই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। যতটুকু। নষ্ট হয় হয়ে যাবে, যতটুকু বাঁচান যায় বাঁচবে, এমনি করেই আমাদের কিছুদিন  অগ্রসর হতে হবে। অন্যদিকে আমাদের কৃষি সম্পদ যা আছে তা দিয়ে আমার প্রাথমিক চাহিদা খিদার অন্ন মেটাতে হবে এবং তা থেকে উদ্বৃত্ত করে উদ্বৃত্ত অথবা সঞ্চয় করতে হবে। উদ্বৃত্ত  সব সময় হবে তা নয়, উদ্বৃত্ত না হলেও সঞ্চয় হয়। কিন্তু উদ্বৃত্ত দিয়েই সবসময় সঞ্চয় করা যায় এটা ঠিক নয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের মত জায়গায় আমি বিবেচনা করি যেখানে সঞ্চয় করতে হবে আমার আজকের ভােগকে কর্তন করে ভবিষ্যতের উন্নয়নের জন্যে, অর্থাৎ কঠোর আত্মসংযম নিয়ে আমাকে সঞ্চয় করতে হবে।

আমার এ সঞ্চয়টা আসবে কোথা থেকে? সে সঞ্চয়টা এমন পর্যায়ে গেলে আমি সঞ্চয় করতে পারব না যখন আমার এক পােয়া চালের ভাত খেতে হবে, আর আমাকে এক ছটাক খেয়ে সঞ্চয় করতে বললে আমি পারব না। আমার যদি দুই ছটাক মাত্র হয় সেখান থেকে এক ছটাকই যদি সঞ্চয় করতে হয় এটা সম্ভব নয়।  তা হলে আমি আগামীকালই দুই ছটাক উৎপন্ন করার কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলব। আমার ভাইটালিটি শেষ হয়ে যাবে, নিঃশেষ হয়ে যাবে। কাজেই এ ক্ষেত্রে মােটামুটি আমি বেঁচে থেকে, কর্মক্ষম থেকে, আমি যাতে উৎপাদন করতে পারি সে জন্য কি প্রয়ােজন সেটার একটা হিসাব নিকাশ দরকার। আমাদের খাদ্যাভাসটাকে ভবিষ্যতে পরিবর্তন করতে হবে। এই বিষয়টি দৃষ্টির সামনে রেখে এবং কি ভাবে পরিবর্তন করতে হবে সেটাও বিবেচনা করতে হবে। হঠাৎ একটা চাপিয়ে দিলে হবে না। পরিবর্তন করতে হবে এটাকে দৃষ্টির সামনে রেখে এবং ক্রপ প্যাটার্ন’ কি হবে সেটাও নির্ধারণ করতে হবে। এলােপাথারি উৎপাদন করে গেলে চলবে না। আমার কথা অনেক সময় আমার নিজের সমালােচনা হয়ে যায়, আমি কিন্তু আত্মসমালােচনায় বিশ্বাসী। কিন্তু আমি তাে আর একা না, আমার সাথে আরাে অনেকে আছেন, ওনারা মনে করেন যে, আমাদেরকে বলার আপনি কে, এটা একটা অসুবিধা। সেই জন্য অনেকগুলাে কথা বলতে গেলে অবস্থা বুঝে আমাকে বলতে হয়। আমি পল্টন ময়দানে গেলে কিন্তু এ রকম বলব না, অন্য রকম কথা বলব। কারণ সেখানে হাতে তালি পাওয়া দরকার, নানা কারণে আমি ভাল বক্তা এটা প্রমাণ করা। আর একটি কথা আছে ‘টেম্পাে’ না হলে লােকে বসে থাকে না হাটাহাটি করে। কাজেই দুই জায়গার বক্তৃতা কিন্তু দুই রকম। আর মাস অফ দা | পিপল’ যারা ঠিক হজম করতে পারে না তাদেরকে আমি বদহজমি বড়ি দেব না, তাকে হজমের বড়িই দেব। এখানে আপনারা সকলেই হজম করতে পারবেন। সেই জন্য কতকগুলাে আত্ম-সমালােচনামূলক কথা যদি হয়েই যায়, আমি অবশ্য চেষ্টা করব না বলতে, কারণ আমাকে নিয়ে আপনারা বড় বিতর্কে পড়ে গেছেন।

ঐ  বিতর্কগুলি কিন্তু আমি জায়গা বিশেষে করি অথচ সেটাকে পল্টনি আকারে চিন্তা করলে ভুল হবে, আমার উপর অবিচার করা হবে। এই সভায় আমি যদি পস্টনি বক্তৃতা করি তাতে কোন লাভ হবে না। যা বলছিলাম, এলােপাতাড়ি আমরা যদি কাজ করে যাই তা হলে ফল যাই হােক | সাধারণ মানুষের কাজে আসবে না। যে কথা থেকে এ কথায় এলাম, বাংলাদেশে জমির পরিমাণ যখন এত কম যেমন ধান করতে পারেন অর্থাৎ কৃষিযােগ্য জমি হিসেব করেছেন দুই কোটি চল্লিশ লক্ষ একর। না হলে পঞ্চাশ বাড়াবেন। ‘রিক্লেইম করার মত জমি কোথায় আছে ? আর রিক্লেইম করে আমাদের যে সর্বনাশটা হয়েছে সেটাও তাে আমাদের কৃষি অর্থনীতিবিদদের বিবেচনা করতে হবে। আমি বিল ভরে ফেলেছি, হাওড় ভরে ফেলেছি, যেখানে আমার খাদ্যের প্যাটার্ন সহায়ক নয়। আমি একটা কথা জোর দিয়ে বলতে পারি, কিন্তু বাইরের লােক বলবে ব্যাটা মন্ত্রী হইস, খাবার দিতে পার না, আবার বড় বড় কথা কও, মন্ত্রী হইলে এমন কথা সবাই কয়। মরহুম জাকির হােসেন সাহেবও বলসিল ও ভূট্টা খাও! দুনিয়াতে আপনারা যারা ঘুরেছেন, বলেন, কোন দেশে ১৬ আনাই শুধু ‘সিরিল ফুড’

খায়? আমার দেশের ১৬ আনা সিরিল ফুড (ভাত জাতীয়) খাওয়া গ্রামের লােককে আমি বক্তৃতা করলে লাভ হবে না। কারণ তাকে চ্যাপা শুটকি, পুটি মাছের শুটকি ভর্তা দিয়ে ভাত খেতে বললে ভাত একটুও বাড়ে না। তার সাথে যদি অন্য কিছু দুই টুকরা খেতে পেত, সেটা তরকারিই হােক, গােসতই হােক তা হলে সে পরিমাণ ভাত কম খেলেই হত। অবশ্য না খাওয়া লােকগুলি প্রথম দিন তরি-তরকারি পেলে ভাত বেশি খেয়ে ফেলে। সেটা বেশি দিন থাকবে না, দু’তিন দিন তারপর আস্তে আস্তে স্বাভাবিকে চলে আসবে। আপনার বাড়িতে যদি গ্রাম থেকে কাজের ছেলে আনেন, দেখবেন প্রথম কয়েক দিন সাংঘাতিক খায়। তারপর আর বেশি খেতে পারে না, আমাদের মতই খায়। দুনিয়ার যে সমস্ত দেশে আমি গিয়েছি (সােশালিস্ট দেশগুলাে এ আলােচনায় আনছি , আমি জাপান যাইনি, অস্ট্রেলিয়া যাইনি) সেখানকার ফুড প্যাটার্ন’ মােটামুটি আপনার আট আনি তাে যায় আমাদের দেশের সালাদ বা সবজি তরকারি দিয়ে । তরকারি অর্থ মানে কারি’ না, শাক সবজি লেটুস জাতীয় জিনিসই থাকে প্রায় ১০ আনি তারপর মাছ মাংস আপনি যেটাই খাবেন বাদবাকি। আর আমরা এক এক সময় এমন কিছু খাই যা মুখে খেতে ভাল লাগে কিন্তু ফুড ভ্যালু’ মােটেই বাড়ায় না বরং মাঝে মধ্যে একটু ক্ষতিও করে ফেলে। যাইহােক শতকরা ২৫ ভাগের বেশি কোন দেশে সিরিল ফুড’ খায় সেটাতাে আমার জানা নেই। সে হিসেবে ধরলে বাংলাদেশ এখন খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশ। তা হলে বাকিটা পূরণ করবেন কি দিয়ে তার ব্যবস্থা করতে হবে। সালাদ জাতীয়, সবুজ সবজি জাতীয়, লিফি সবজি জাতীয় যে সমস্ত জিনিসগুলাে আছে সেগুলাের জন্য খুব বেশি জমি জমার প্রয়ােজন হয় না। আমাদের কৃষকদের, বিশেষ করে আমি মােবারকবাদ দেই আমাদের কুমিল্লা একাডেমী এবং তার আশে পাশে BRDB এর যে প্রজেক্টগুলাে আছে সেখানে তারা যা করছেন সে জন্য ।

অবশ্য এটা যদি Century (শতাব্দী) লাগে তা হলে আমরা কুলাতে পারব না। আমি নিজে দেখিনি, কিন্তু চট্টগ্রামে শুনে এলাম খেতের আইলে বিশেষ করে মীরেশ্বরাই, পাঁচলাইশ এসব থানায় খেতের আইলের কিনারে কৃষকরা শিম গাছ লাগিয়ে দিয়েছে। ছােট ঠুই বা মাচা বানিয়ে শিম গাছ উঠিয়ে দিয়েছে, এতে জমি একটুও নষ্ট হচ্ছে না, শিম হচ্ছে প্রচুর। নেসেসিটি ইজ দ্যা মাদার অফ ইনােভেশান’-কৃষকেরা যে ভাবে এই কথাটিকে গ্রহণ করেছেন তা উৎসাহব্যঞ্জক। কিন্তু একটা কথা মনে রাখতে হবে, কৃষকেরা স্ট্রাইক ট্রাইক করলে ক্ষতি যদি অন্য কারাের হত তবে যে তারা তা করত না এটা আমি বলতে পারি না। তারা যদি গাইটা (গরু) না দেয়ায় তাহলে সরাসরি ক্ষতি তার হয়। তারা যদি জমিতে হাল দেয় দু’দিন পরে সে জমিতে লাঙ্গল বসবে না, তাই তার সরাসরি ক্ষতি হয় বলে  বােধহয় স্ট্রাইক করে না। তা না হলে কি হত বলা যায় না! যাই হােক তবু আমি একথা ঘরের ভেতরে বলি, বাইরে বলব না। আর সরাসরি ক্ষতি হয় না বলে আমাদের অন্য সেক্টরে শুধু স্ট্রাইক! স্ট্রাইক! স্ট্রাইক! আর আমাকে শুধু জোর করে নােট ছাপাও। আর কৃষিক্ষেত্রে তারা সরাসরি প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় বলে আপনি ক্যানভাস (প্রচারণা) করলেও তাদের দিয়ে স্ট্রাইক করাতে পারবেন না। তারা ফলটা সরাসরি পান বলে তারা কাজগুলি করে যাচ্ছেন। যেমন শিম গাছের শিমটা তিনি সরাসরি পান বলে এটা করেছেন, কাজেই প্রত্যক্ষভাবে শ্রমের ফল, উদ্যমের ফলটা যদি আমরা মানুষকে দিতে পারতাম-সকল সেক্টরে, তা হলে মানুষের ইনসেনটিভ বাড়ত। তারও ব্যবস্থাপনা আছে, নেই তা নয়। সেটা কি সেটাও আপনাদের একটু দেখতে হবে। কারণ ঐ যে আমাদের সম্পূর্ণ অর্থনীতি নির্ভর করছে কৃষির ওপরে। অতএব এটাকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির কথা চিন্তা করলে হবে না। শুধু যদি ঋণ পেতাম তা হলে হয়ত হত। কিন্তু সে ঋণ আমরা শােধ দেব কোথা থেকে ? ঋণ নয়, সাহায্য যদি পেতাম, গ্যাটিস যদি সব পেতাম তাও একটা কথা ছিল। যা হােক, আজকের কৃষি, কৃষকের যে সমস্যা, ইনপুটসের সমস্যা, ফার্টিলাইজারের সমস্যা—এখানে আমার একটি বক্তব্য আছে, “বিদেশী বন্ধু রাষ্ট্রের বিজ্ঞ প্রতিনিধিরা, এখানে রয়েছেন তাদের কাছে, আপনারা সেমিনারের এ কথাটি তুলে ধরবেন। তাদের নিজ নিজ দেশে আপনাদের এই বক্তব্যটা যদি তারা প্রচার করতে পারেন তাহলে ভাল হয়। সেটা কি ? গ্রীন রেভ্যুলেশনের (সবুজ বিপ্লব) স্লোগান দিয়েছেন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং সমস্ত দুনিয়া এটাকে সমর্থন করেছে। সবুজ বিপ্লব আপনি করতে পারবেন না আমি বলে দিচ্ছি।

কেন পারবেন না-সবুজ বিপ্লব করে ফসল বাড়াবেন, ফসল বাড়লে কারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হয় একটু চিন্তা করে দেখুন। দুর্ভাগ্য আমাদের দেশের অনুন্নত লােকগুলাে কৃষি কাজ করে। কৃষি কাজ করে যারা তারা নিম্নস্তরের লােক। কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য দেশে কৃষি পণ্য হল আজকের দুনিয়ার সবচাইতে বড় একটা লীভার একটা লীভারেজ, ফর ইওর পলিটিক্স, ফর ইওর ইনফ্লুয়েন্স ওভার দি হােল ওয়ার্ল্ড। আজকে সবচাইতে উন্নত দেশগুলি হল খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশ। আমরা ছােটবেলায় শুনেছি দরকার হলে তারা খাদ্য সাগরে ফেলে দেয়, তবু দান করেন না। বাজারে দেবে কিন্তু তারা মানুষের অভ্যাস খারাপ করে দিতে চায় না। এখানেই আমাদের দুর্ভাগ্য। আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, ফজলুল হক হলে থাকি, তখন লক্ষ্য করতাম সামনের মিনিয়াল (Menial) ব্যারাকটা। এত জায়গা থাকতে ব্যারাকটা উত্তর দক্ষিণে লম্বা। দরজা পশ্চিম দিকে। পূর্ব দিকে হল একটা জানালা—অনেক উঁচুতে, তিনটা চৌকি একের পর এক উপরে তুললেও জানালা পর্যন্ত পৌছাবে না। আমি ভাবি ব্যাপারটা কি? পরবর্তী যুগে বুঝলাম এত জায়গা থাকাতে দক্ষিণমুখী ঘর বানিয়ে জানালা রাখলে মিনিয়ালগুলি আরাম একবার বুঝে যাবে, আরাম চাইবে। কাজেই ঐ আমাদের অভ্যাসটি খারাপ যাতে না হয় সেই দিকে দুনিয়ার সমস্ত ভাল।

মানুষই খেয়াল রাখে, কারণ নিম্নস্তরের মানুষের অভ্যাস খারাপ হলে তাদের সুবিধা তারা চাইবে। সবুজ বিপ্লব বাংলাদেশের মত দেশে করাটা সব চাইতে সহজ এই জন্য, যাকে এক কথায় বলা যায়, আমাদের দেশটা অনাবাদী-ভার্জিন ল্যান্ড, ভার্জিন সয়েল। তাই ভার্জিন সয়েলে একটা কিছু নতুন করা যত সহজ, একটা পুরানাে সুপ্রতিষ্ঠিত সমাজে সেটা সম্ভব নয়। আমাদের দেশের গ্রামের মানুষগুলােকে আমি দেখেছি, ছােটবেলায় ওদেরকে নিয়ে আমি নিজে ডাক্তারখানায় দৌড়াতাম। এখন আর সময় পাই না বলে পারি না। দেখেছি বহু দিন অসুখ, কাশি এটা সেটা, মনে হয় যেন যক্ষ্মা হয়ে গেছে, আসলে কিন্তু কিছু না। পৌষ মাসে ভাল কাপড় গায়ে দিতে পারে, ভাল ঘর নাই। ঘরে পাটখড়ির বেড়া, ফুরফুর করে বাতাস আসে, এই লােকগুলিকে দেখেন এক ডােজ ওষুধ দিলেই ভাল হয়ে যায়। আপনারা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন আমার এই কথাটা, যদি কেউ না দেখে থাকেন। আর আমার আর আপনার একটুখানি খুচখচানি গলায় কিন্তু কত চিকিৎসা কত জায়গায় যেয়ে সারাতে হয়-তাও কি সারে! কাজেই আমাদের বাংলাদেশে সবুজ বিপ্লব করাটা খুবই সহজ। যেখানে আমাদের মাটিতে কোনদিন সার দেয়া হয়নি, বিনা সারে ফসল হয়, আমাদের ন্যাচারাল ফারটিলিটি সীল্টন্যা যেটা বয়ে দিয়ে যায়, তা দিয়েই চলছে। সেখানে আমরা যদি সামান্যতম সার ব্যবহার করতে পারি তবে কত বেশি ফসল হয় সেটার প্রমাণ বাংলাদেশ বিগত কয়েক বছরে আমি দেখেছি। আমার বাড়ি অত্যন্ত লাল মাটিতে ঢাকার ভাওয়ালে।

গজারি জঙ্গল, লাল মাটি তার ভেতরে যেই জমিগুলাে আমি ছােট বেলায় দেখেছি পয়সা দিয়ে কেউ কেনে না, এই চালা জমিগুলাে সমান হলে পরে ২৫ টাকা বিঘা ছিল, সেই জমিতে বর্তমানে বিক্রমপুরের রামপালের অমৃতসাগর কলা জন্মে। সেই জমিতে ইরি ধান জন্মে এবং একরে ৬০ মন। ৪৫ মনের নীচে হয় না। শুধু পানি আর সার ব্যবহারেই এই ফল। বাংলাদেশে আরও প্যারাডক্সিক্যকাল সিচুয়েশন (Paradoxical situation) আছে। বন্যা না হলেও যেখানে ১৫/২০ ফুট স্বাভাবিক পানি ছিল, সেখানে ফারুন মাসে পানির দরকার হলে দুই এক মাইলের মধ্যেও পানি পাচ্ছেন না, অথচ এখানে ২০ ফুট পানি ছিল। আপনাদের চিন্তার জন্য দিয়ে যাচ্ছি আমার এইসব বিক্ষিপ্ত ভাবনা। এই পানিটা যদি ধরে রাখতাম তাহলে কি হত? আমার বিবেচনায় অনেক কিছু হত । পানিটা ধরে রাখলে প্রথমতঃ ছােট ছােট ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষ হাট বাজারে যেতে পারত। নাইওর নিয়ে যেতে পারত তার স্ত্রীকে, ধরুন এটাও একটা যােগাযােগ। দ্বিতীয়তঃ নরম মিষ্টি পানি পাওয়া যেত। আবার অনেক জায়গায় টিউবয়েল বসালে লাল মরচে ওঠে, আয়রন ওঠে। সেখানে রিজার্ভার না করে পানিকে না থিতিয়ে খেতে দিলে কি হবে সেটা বিবেচ্য! এ বিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়নি, সার্ভে হয়নি, এই বিষয়টি আমি জোর দিয়ে বলছি।

বর্তমানে একটা ডিপ টিউবওয়েল বসাতে খরচ হয় দেড় লক্ষ টাকা। এটা আরাে বাড়বে। প্রতিদিনই বাড়বে কারণ আমি টেন্ডার ফেন্ডার দেখি যে ইন্সটলেশন টাইম ২৪ ঘন্টা, বলে কয়ে বাড়িয়ে ৪৮ ঘন্টা। ৪৮ ঘন্টা পার হলে ইনস্টলেশান চার্জ ৬% কমতি আর নাই এই অবস্থা চলছে, ৭২ ঘন্টায় ৬% এই তাে চলছে। আমরা এমন অসহায়! আর পানি ধরে রাখলে এখানে পানি হত একটু ছােট যােগাযােগ হত, তারপর আবহাওয়াটা কি হত, এটাকে আপনারা টেকনিকাল টার্মে কি। বলবেন-আশেপাশের মাটিগুলাে Moisten (আর্দ্র) হত, তারপর মাছ হত। বাংলাদেশে প্রােটিন মাংস দিয়ে খেতে পারবেন না। এটা আমার জোর দিয়ে কথা । মুরগি যদি কেউ পালতে পারেন সেটা ভিন্ন কথা। অবশ্য মুরগি এত বেশি আকারে করে এত মানুষের প্রােটিন দিতে পারবেন না আর গরুর মাংস দিয়েও পারবেন না, তার বদলে সেটা গজার মাছ আর শােল মাছ দিয়ে পূরণ করা যেত। গরুর গােশতের প্রায় সমান প্রােটিন গজার মাছে অথচ এই দেশে কি একটা কথা আছে গজার মাছ খেলে লেখাপড়া হয় না, আরও কি কি সব বলে—এটা বাজে কথা। মাছ দিয়ে প্রােটিন মেটাতে হবে। সেই যে ২৫% ভাগ সিরিল (ভাত জাতীয়) আর বাদ বাকি মাছ দিয়ে, সবজি দিয়ে পেতে হবে। পানি ধরে রাখলে আমরা প্রচুর মাছ পেতাম, সেচ সুবিধা পেতাম। আপনারা শুধু পাওয়ার পাম্প আনেন, পাওয়ার পাম্প আনেন বলেন, অথচ সার্ভে এখনও শেষ হয়নি, কিছুই হয়নি। কতগুলাে পাওয়ার পাম্প চলতে পারে, তার ইউটিলাইজেশন কিভাবে হবে, আন্ডার ইউটিলাইজেশান হরে, না ওভার ইউটিলাইজেশান হবে, না ইউসলেস পড়ে থাকবে এগুলাে তাে জানতে হবে।

তারপর পাওয়ার পাম্প আনলে ধরুন একটা খালের মধ্যে বা বিলের মধ্যে যে পরিমাণ পানি আছে তা ১০টা পাম্প যদি টানতাে তবে মৌসুমের তিন মাস আমি কৃষি কাজ করতে পারতাম। সেখানে আগ্রহের আতিশয্যে কি হচ্ছে ? কৃষকের দোষ নাই, তারা কি জানে এটার এত কি হবে! তারা তাে জানে পানি নীচের থেকে উঠছে। ঠিকই কৃষকদের কাছে জিজ্ঞাসা করে দেখবেন তাদের ধারণা এই যে নদীতে শুধু বৃষ্টির পানি না, নীচের থেকেও পানি উঠছে এই জন্যই পানিটা আছে। তাদের ক্রুড (কাঁচা) ধারণা আছে। কাজেই তারা কি জানে ১০টা পাম্প দিলে চলবে ২০টা দিলে পানি শুকিয়ে যাবে। আমি নিজে দেখেছি বিশেষ করে ময়মনসিংহ জেলার কয়েকটি এলাকায়। এই বার বৃষ্টি হয়ে বাঁচিয়ে দিয়েছে। এর আগে একবার গেলাম, যেয়ে দেখি তিনটা থানায় এর আগে যে বােরাে ফসল ছিল সেটাও শেষ হয়ে গেছে। কেন শেষ হয়েছে ? ঐ বােরােতে যে পানিটা লাগত তখন তাে আর ইরিগেশান পাওয়ার পাম্প ছিল না। এখন তারা পাওয়ার পাম্পের ভরসায় আগের এই বােরাে খেত ছাড়াও ২০০ একর জমি লাগিয়ে বসে আছে। এখন যখন পাওয়ার পাম্প দিয়ে একটান দিয়েছে তখন পানি শুকিয়ে গিয়েছে। এখন ঐ আগের যে বােররা খেত, সেটাও গেল আর নতুনটাতাে গেলই। পরিশ্রম গেল, ইউরিয়া,এম.পি.র দাম গেল একেবারে সব গেল। এই যে অবস্থাটি এটাও আপনাদের বিবেচনা করতে হবে। এই পিকিউলিয়ারিটিজ বাংলাদেশের, এটাও বিবেচনা করে দেখতে হবে। এখন তাহলে প্রােটিন আমরা মাংস দিয়ে খেতে পারব না। কেন বলছি, কারণ একটা গরুর খাবার মানুষের চাইতে বেশি লাগে, এটাতাে সহজ হিসাব। আমি যদি দেড় সের খাই, গরু খায় দেড় মণ। এখন গরুকে যদি ভুট্টা খাওয়াতে পারতেন, নেপিয়ার ঘাস খাওয়াতে পারতেন, সেই পদ্ধতি করতে পারতাম তবে জায়গা আর একটু কম লাগত। তা হলে আমি দেড়সের খাই আমার খাদ্যের জন্য ধরুন দেড় স্কয়ার ফিট জায়গা লাগে, আর গরু দেড় মণ খেলে গুণ করে বের করুন বিরাট ব্যাপার। আর যদি গরুকে কামড়িয়ে ঘাস খাওয়ান, তবে তাে প্রচুর জায়গা লাগবে, এটাও একটা সমস্যা। আমাদের দেশে বেশিরভাগই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চাষি, যাদের জমি তিন একরের নীচে …(অসমাপ্ত) ভাষণ, এই ভাষণটি টেপে ধারণকৃত। এই অংশে এসে টেপের ফিতা নষ্ট হয়ে যায়।)

সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!