You dont have javascript enabled! Please enable it! 1974.03.30 | দৈনিক ইত্তেফাক-চলতি অর্থ বৎসরে রাজস্ব ব্যয় প্রায় একশত কোটি টাকা বৃদ্ধি - সংগ্রামের নোটবুক

মার্চ ৩০, ১৯৭৪ শনিবার ঃ দৈনিক ইত্তেফাক

চলতি অর্থ বৎসরে রাজস্ব ব্যয় প্রায় একশত কোটি টাকা বৃদ্ধি; আয় হ্রাস, উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব নহে মােহনগঞ্জ, ২৯ মার্চ। অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ আজ বলেন, পাকিস্তান হইতে প্রত্যাগত প্রতিরক্ষা বাহিনীর লােকদের পরিবারের ভাতাসহ কতিপয় অতিরিক্ত খরচ বাবত চলতি অর্থ বৎসরে রাজস্ব ব্যয় প্রায় একশত কোটি টাকা বেশি হইবে। রাজস্ব বাজেটে ২৯৫ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরা হইয়াছিল। অর্থমন্ত্রী আজ সকালে এখানে স্থানীয় ইউনয়ন পরিষদের নব-নির্বাচিত সদস্যদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা করিতেছিলেন। মন্ত্রী বলেন, সরকারী পাওনা পরিশােধে সাধারণ অনীহার দরুন রাজস্ব আয় নির্ধারিত পরিমাণের কম হইতে পারে। উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ব্যয় সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, পরিকল্পিত ৩৫২ কোটি টাকার বৈদেশিক সাহায্য পাওয়া গেলেও চলতি বৎসরের উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হইবে । আন্তর্জাতিক বাজারে তেল সহ অন্যান্য সামগ্রীর প্রায় তিন গুণ মূল্য বৃদ্ধির দরুন আরও অর্থের প্রয়ােজন হইবে। জনাব তাজউদ্দিন আহমদ চাল, গম, কাপড়, তুলা ও সুতা আমদানি বাবত অতিরিক্ত ব্যয়ের কথাও উল্লেখ করেন। মন্ত্রী বলেন, খাদ্য শস্য আমদানির জন্য ৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হইয়াছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য শস্যের মূল্য তিন-চারগুণ বৃদ্ধি পাইয়াছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, তিনি ইতােমধ্যেই খাদ্য শস্য ক্রয়ের জন্য ৮০ কোটি টাকা দিয়াছেন এবং এইখাতে আরও অর্থ দিতে হইবে। কারণ “মাত্র ৬ লক্ষ টন খাদ্য শস্য ক্রয় করার জন্য ১২০ কোটি টাকা লাগে”।

চলতি বৎসরের খাদ্য ঘাটতি ১৮ লক্ষ টন। ইহার মধ্যে ১০ লক্ষ টন নগদ অর্থে ক্রয় করিয়া আমদানি করিতে হইবে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় বণিক সমিতির সদস্যদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতাকালে মন্ত্রী বলেন, আমাদের খাদ্যের অভ্যাস সামান্য পরিবর্তন করিলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচানাে যাইতে পারে। জাপান বিভিন্ন দেশে চাউল রফতানি করিয়া সস্তা দামে অন্যান্য খাদ্য শস্য আমদানি করে থাকে। মন্ত্রী বাংলাদেশ হইতে কিছু পরিমাণ চাউল রফতানি করিয়া আন্তর্জাতিক বাজার হইতে সস্তা দামে দ্বিগুণ পরিমাণ গম আমদানির পরামর্শ দান করেন। তিনি বলেন, চাউল এবং গম ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ফলমুল এবং শাক-সবজি উৎপাদন করিয়া দৈনন্দিন খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করা যায় ।

সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি