৩০অক্টোবর ১৯৭১ঃ ধলাইয়ে ভারতীয় বাহিনীর ব্যাটেলিয়ন পর্যায়ে পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরে যুদ্ধ (৩য় দিন)
ভারতীয় বাহিনীর ৬১ ব্রিগেডের( ব্রিগঃ এসডিএস জাদভ) ২ জাত রাইফেলস ব্যাটেলিয়ন( লেঃ কর্নেল দালাল) পাক বাহিনীর তিনটি অবস্থানে আক্রমন করে। এ কোম্পানিকে দায়িত্ব দেয়া হয় রোড ব্লকের এবং বিওসি কোম্পানীকে দায়িত্ব দেয়া হয় কুলি লাইন এবং টুইন হাট আক্রমনের। ডি কোম্পানিকে দায়িত্ব দেয়া হয় ধলাই বিওপি দখলের। এই দিনের যুদ্ধে কোন রিজার্ভ বাহিনী রাখা হয়নি। ৩০ তারিখ রাত্রে আক্রমন শুরু হয় এর মধ্যেই মেজর আর কানওয়ার এর বি কোম্পানি কুলি লাইন দখল করে নেয়। মেজর জেপিএস পানওয়ার এর সি কোম্পানী টুইন হাট দখল নিতে গিয়ে পাক আক্রমনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কম্যান্ডর জেপিএস পানওয়ার গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নীত হন। তার টুআইসি সুবেদার সিরি চাঁদ দায়িত্ব নিয়েই টুইন হাঁট দখলে নেন। কিন্তু পাক বাহিনী আর্টিলারি ও মর্টার আক্রমন শুরু করলে তার কোম্পানীর একজন সুবেদার সহ ১৫ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়। শেষ অবধি সি কোম্পানী গঙ্গানগর(ভারত) ফেরত আসে। ব্যাটেলিয়ন কম্যান্ডার লেঃ কর্নেল দালাল ধলাই আক্রমনে নিয়োজিত ডি কোম্পানিকে ফেরত এনে রেড হাট দখলে নিয়োজিত করেন। পরাজিত কুলি লাইনের পাক সৈন্যরা রেড হাটে একত্র হয়ে ডি কোম্পানীকে আক্রমন করে। এখানে ডি কোম্পানী কম্যান্ডার মেজর প্রিতমের পা গুরুতর জখম হয়। নতুন অধিনায়ক টুআইসি সুবেদার দেওয়ান সিংহ লড়াই করা অবস্থায় নিহত হন। তার বদলি সুবেদার অজিত গুলজারীও গুরুতর আহত হন।
এ কোম্পানীর অবস্থানে যুদ্ধ পর্যবেক্ষণে থাকা ৬১ ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার যাদভ গুরুতর আহত হন (তার যায়গায় পরে নতুন কমান্ডার যোগ দেন ব্রিগেডিয়ার কেপি পাণ্ডে ওরফে টম পাণ্ডে, কুমিল্লা বীর)। তাকে উদ্ধার করতে যেয়ে আহত হন এ কোম্পানী কমান্ডার মেজর অভতার সিংহ। এই দিনের যুদ্ধে ৪ মেজর থেকে ৩ মেজর এবং এক ব্রিগেডিয়ার যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে বিদায় নেন। যুদ্ধের অগ্রগতি হল কুলি লাইন দখল। এ সময়ে মুক্তিবাহিনী পুনর্গঠন কাজে নিয়োজিত থাকে। পাকিস্তান সরকারের বরাত দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের পত্রিকা সমুহ জানায় তারা ধলাইয়ে ৫০০ সৈন্য এর ভারতীয় বাহিনীকে সাফল্য এর সহিত মোকাবেলা করে তাদের ৮ জনকে হত্যা করেছে এবং ৫০ জনকে আহত করেছে। যুদ্ধে পাক বাহিনী ৮০০০ রাউন্ড গুলী সহ ৬টি হাল্কা মেশিন গান, ৬৩টি রাইফেল সহ প্রচুর হাতবোমা আটক করেছে।