You dont have javascript enabled! Please enable it! 1973.01.11 | দৈনিক পূর্বদেশ-অস্ত্র নয় শান্তির পথ ধরুন - সংগ্রামের নোটবুক

জানুয়ারি ১১, ১৯৭৩ বৃহস্পতিবার ঃ দৈনিক পূর্বদেশ

অস্ত্র নয় শান্তির পথ ধরুন : অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে যে দেশী ও বিদেশী চক্রান্ত চলছে তার বিরুদ্ধে আজ থেকে প্রতিরােধ আন্দোলন শুরু হল। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিরােধ সগ্রাম কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয় । নীতির ভিত্তিতে আদর্শের জন্য আমরা বিরুদ্ধবাদী শক্তিকে রাজনৈতিকভাবে মােকাবিলা করব। কারণ আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই সহনশীলতার নীতি থেকে বিচ্যুতি না হওয়ার জন্যে আওয়ামী লীগ কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ভিয়েতনাম ইস্যর নামে ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গায় লিপ্ত হলে লাভবান হবে সাম্রাজ্যবাদ ও ধনিক শ্রেণী। এরা সুযােগ পেয়ে বিশৃংখলা সৃষ্টি করবে। তাই ভুল হলে তা স্বীকার করে গণতান্ত্রিক পথে ফিরে আসার জন্যে তিনি আহ্বান জানান। তিনি সংবাদপত্রগুলােকে বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দু’যুগেরও বেশি সময় আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে এসেছে এবং এ দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের পতাকাতলে সমবেত হয়ে সে সংগ্রামে শরিক হয়েছে এবং স্বাধীনতা সংগ্রামকে সফল করে দেশ স্বাধীন করেছে।

তাই বাংলার মানুষ ভালবেসে তাকে জাতির পিতা ও বঙ্গবন্ধু খেতাব দিয়েছে। কাজেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কটুক্তি করার এখতিয়ার কারােরই নেই। মন্ত্রী বলেন, বাংলার মানুষের আশা-আকাঙ্খ বাস্তবায়নের জন্যে আওয়ামী লীগ জাতিকে একটি সংবিধান দিয়েছে। বাংলার মানুষ একটি নতুন যাত্রা শুরু করতে চায়। আগামী সাধারণ নির্বাচনই হবে সেই যাত্রা শুরুর শুভ পদক্ষেপ। কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বড় দল হিসেবে আওয়ামী লীগে কিছু এজেন্ট ঢুকে পড়তে পারে। কাজেই দলের কেউ যাতে অতি বিপ্লবী বা অতি প্রগতিবাদী স্লোগান দিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি না করতে পারে সে জন্য সব কর্মীকেই সজাগ থাকতে হবে। তিনি দলীয় কর্মী নির্বিশেষে আহ্বান জানিয়ে বলেন যে, আগামী সাধারণ নির্বাচন যাতে নিরপেক্ষ ও অবাধ হয় এবং তা শান্তিপূর্ণভাবে যাতে অনুষ্ঠিত হতে পারে সে জন্য তাদেরকে সদা সজাগ থেকে কাজ করে যেতে হবে। তিনি সংবাদপত্রগুলােকে বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানান।

সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি