এপ্রিল ১৭, ১৯৭২ সােমবার ঃ দৈনিক পূর্বদেশ
ভিয়েতনাম থেকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ হাত গুটাওঃ স্টাফ রিপাের্টার। আফ্রো এশিয় গণ-সংহতি পরিষদের সভাপতি বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বক্তৃতা প্রসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ভিয়েতনাম থেকে এখনও সরে যাওয়ার সময় আছে, তারা যদি তা না করে তাহলে তাদের পতন অনিবার্য। তিনি বলেন, বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদের কবর রচনায় আর বেশি দেরি নেই। তিনি উল্লেখ করেন যে, গত বছর এই সময় বাংলাদেশের জনগণ ও মুক্তিবাহিনী যখন দেশের স্বাধীনতার জন্য হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে জীবন মরণ সংগ্রামে লিপ্ত ছিল তখন মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছে এবং পাকিস্তানকে অস্ত্র সাহায্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বানচাল করতে চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ঠিক একইভাবে এখন ভিয়েতনামেও হামলা চালিয়েছে।
তবে বাংলাদেশের জনগণ আর বিভ্রান্ত হবে না। বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষ স্বাধীনতাকামী ভিয়েতনামী জনগণের পাশে রয়েছে এবং সংগ্রামে সফল হওয়া পর্যন্ত তাদের পাশে থাকবে। তিনি বলেন, বিশ্ব শান্তির স্বার্থে, আমেরিকার স্বার্থে, মার্কিন জনগণের স্বার্থে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ভিয়েতনাম ত্যাগ করা উচিত, তা না হলে এবার তাদের শেষ হয়ে যেতে হবে। ভিয়েতনামে এটাই তাদের শেষ সংগ্রাম এবং ভিয়েতনাম স্বাধীন হবেই। দরকার হলে তিনি ভিয়েতনামে বৈষয়িক সাহায্যদানের আশ্বাস দেন। ত্রৈলােক্য মহারাজের চিতাভস্ম বিসর্জন অনুষ্ঠান ; মহারাজের আদর্শকে সারা | বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে ? চিতাভস্ম বিসর্জনের পূর্বে অনুষ্ঠানের সভাপতি জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাধ্যমে মহারাজের স্বপ্ন। বাস্তবায়িত হয়েছে এবং তার স্বপ্নকে আরও ফলপ্রসু করার জন্য এ দেশে শোষণ | মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনাব তাজউদ্দিন বলেন, মহারাজ ছিলেন। বাংলাদেশের সন্তান। তার মৃত্যু পর্যন্ত তার সাথে দেশের সকল শ্রেণীর মানুষের। ছিল নিকট সম্পর্ক। মহারাজের সাথে তার দীর্ঘদিনের সম্পর্কের উল্লেখ করে জনাব তাজউদ্দিন বলেন যে, মহারাজ ছিলেন শিশুর মত সরল অকপট ও স্নেহশীল। | জনাব তাজউদ্দিন সে কালের যে সকল বিপ্লবীরা মহারাজের চিতাভস্ম নিয়ে ঢাকা এসেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি