You dont have javascript enabled! Please enable it!

মার্চ ১১, ১৯৭২ শনিবার ঃ দৈনিক পূর্বদেশ

বাংলার মানুষ যুদ্ধজোটে যােগদানের বিরােধী ঃ স্টাফ রিপাের্টার। বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা দফতরের মন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বাংলাদেশ আফ্রো-এশিয় গণসংহতি পরিষদের এক সভায় বলেছেন, “এ-দেশের মানুষ কোন যুদ্ধ জোটে যােগদানের বিরােধী”। তিনি আরাে বলেছেন “বাংলাদেশের মানুষ বিশ্ব শান্তি চায়, যারা যুদ্ধের উস্কানি দিয়ে অস্ত্র বিক্রি করে মুনাফা নিতে চায় বাংলাদেশ আর তাদের ফাঁদে পা দেবে না”। জনাব তাজউদ্দিন গতকাল শুক্রবার বিকেলে ইসলামিক একাডেমী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত উক্ত সভার উদ্বোধনী ভাষণ দিচ্ছিলেন। জনাব তাজউদ্দিন আফ্রিকা ও এশিয়ায় সাম্রাজ্যবাদী শক্তির শােষণ-নিপীড়ন থেকে মুক্তির জন্য জনগণের সাম্রাজ্যবাদ-বিরােধী আন্দোলনের ওপর গুরুত্ব আরােপ করেন। তিনি বলেন, “এশিয়া ও আফ্রিকার বহু জাতি এখনাে জাতীয় স্বাধীনতা উদ্ধার করতে পারেনি। দুইটি মহাদেশ আজো বিদেশী সাম্রাজ্যবাদের ঔপনিবেশিক শাসন-শােষণ বজায় রয়েছে।

তিনি আরাে বলেছেন, “আমরা বাংলাদেশের মানুষ ইতােপূর্বে সেই ঔপনিবেশিক শাসনের নিগ্রহ-নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আর সেই নিগ্রহ থেকে মুক্তির জন্য স্বাধিকার আন্দোলনে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা বুকের রক্ত দিয়েছে। সেই স্বাধিকার আন্দোলনে যখন স্বাধীনতা আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়েছিল তখন আমাদের বিশ্বের বর্বরতম পশু শক্তির মােকাবেলা করতে হয়েছে। গত ন’মাসে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বাংলায় যে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে তা চেঙ্গিস খাকেও হার মানিয়েছে। তিনি বলেন, “সাম্রাজ্যবাদী শক্তি প্রদত্ত ভরসার বলেই পাকিস্তানের পক্ষে এতটা করা সম্ভব হয়েছে”। জনাব তাজউদ্দিন বহু ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে দৃঢ় ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও ঔপনিবেশবাদ-বিরােধী সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হবার আবেদন জানান। সভায় পরিষদের নয়া কর্মকর্তা নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়। জনাব তাজউদ্দিন আহমদ ও জনাব বজলুর রহমান যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।

সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!