You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.01.26 | দৈনিক ইত্তেফাক-বাস্তবতাকে স্বীকার করিলে চীনের মনােভাব ভুলিয়া যাইতে প্রস্তুত আছি - সংগ্রামের নোটবুক

জানুয়ারি ২৬, ১৯৭২ বুধবার ঃ দৈনিক ইত্তেফাক

বাস্তবতাকে স্বীকার করিলে চীনের মনােভাব ভুলিয়া যাইতে প্রস্তুত আছি ঃ কলিকাতা, ২৫ জানুয়ারি (এন-ইউএনআই)। বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ আজ এখানে বলেন যে, সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহের বিরুদ্ধে সুদীর্ঘকাল সংগ্রাম পরিচালনাকারী চীনা জনগণ এক্ষণে আমাদের সাফল্যজনক সংগ্রামের বাস্তবতাকে স্বীকার করিবেন বলিয়া তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে যােগদানের উদ্দেশ্যে আজ নয়াদিল্লীর পথে দমদম বিমানবন্দরে আগমনের পর সাংবাদিকদের নিকট উপরােক্ত অভিমত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমাদের সংগ্রাম পরিচালনার সময় চীন আমাদের প্রতি যে মনােভাব প্রদর্শন করিয়াছে তাহাতে আমরা দুঃখিত, কিন্তু আমরা উহা ভুলিয়া যাইতে প্রস্তুত রহিয়াছি, যদি চীন বাস্তবতাকে উপলব্ধি করে ও উহা মানিয়া লয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে, নয়াদিল্লীতে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে যােগদানই তাহাদের একমাত্র কর্মসূচি। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে, আমাদের মুক্তির ব্যাপারে সাহায্য করিতে যাইয়া ভারত তাহার স্বীয় সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করারও ঝুঁকি লইয়াছিল। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ইতােমধ্যেই আশা প্রকাশ করিয়াছেন যে, বাংলাদেশ যেমন বিনা শর্তে চীনা নাগরিকদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের সুযােগ দিয়াছে।

তেমনি চীনও বাংলাদেশের নাগরিকদের ফিরিয়া আসার ব্যবস্থা করিবে। বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পর্কে তিনি বলেন যে, তাহারা বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসন ও স্বাভাবিক যােগাযােগ ব্যবস্থা পুনপ্রতিষ্ঠা এবং যুদ্ধ বিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনরুজ্জীবনে কি পরিমাণ অর্থের প্রয়ােজন হইবে তাহা এখনও নির্ধারণ করিতে পারেন নাই। তিনি উল্লেখ করেন যে, গত ৯ মাসে চাষাবাদ বন্ধ থাকার ফলেই মূলতঃ বর্তমান খাদ্য ঘাটতি পরিদৃষ্ট হইতেছে। তাহা ছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গত ২৪ বত্সর ধরিয়া কৃষি উন্নয়ন কার্যের প্রতি অবহেলাও ইহার জন্য দায়ী। তিনি আশা করেন যে, প্রথম পাঁচসালা পরিকল্পনাকালেই বাংলাদেশ উদ্ধৃত খাদ্যের দেশ হিসাবে পরিগণিত হইবে।

সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি