জানুয়ারি ১১, ১৯৭২ মঙ্গলবার : দৈনিক ইত্তেফাক
বিভিন্ন দেশ কর্তৃক বাংলাদেশের স্বীকৃতি আসন্ন ঃ প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ গত রবিবার দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন যে, বিভিন্ন দেশের নিকট হইতে আমাদের রাজনৈতিক স্বীকৃতি আসন্ন। প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তৃতা করিতেছিলেন। তিনি বলেন, অবশ্য এখন আমরা রাজনৈতিক স্বীকৃতির জন্য বিশেষ মাথা ঘামাইবাে না। তিনি বিশ্বাস করেন, পারস্পরিক স্বার্থেই বিভিন্ন রাষ্ট্রের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উন্নতি ঘটে এবং উপরােক্ত লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্বীকৃতির সহায়ক হয়। এনা পরিবেশিত এই খবরে বলা হয় যে, বাংলাদেশের সমস্ত এলাকার উপর বাংলাদেশ সরকারের পূর্ণ ও কার্যকরি নিয়ন্ত্রণ কায়েম হইয়াছে, এই ব্যাপারে বৃটিশ সরকার নিশ্চিত হইলেই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করিবে বলিয়া যে অভিমত ব্যক্ত করা হইয়াছে, সে সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর অভিমত জানিতে চাওয়া হয়।
এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যদি আমি বাংলাদেশকে তুলিয়া বৃটেনে লইয়া যাইতে পারিতাম কিংবা তাহাদের এখানে আনিতে পারিতাম, তবে আমি তাহাদের দেখাইতে পারিতাম দেশের উপর আমাদের কতখানি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তানের (সাবেক পশ্চিম পাকিস্তান) স্বীকৃতিদানের কথা বিবেচনা করিবেন কি-না এই মর্মে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ৯৩ হাজার পাকিস্তানী সৈন্য বাংলার বীর সন্তানদের শৌর্য-বীর্য পরখ করিয়া আত্মসমর্পণ করিয়াছে। এখন তাহাদের উচিত প্রথমে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করা। অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন বলেন, কোন দেশের সহিত বাংলাদেশের শত্রুতা নাই। কিন্তু এই মনােভাবের মাধ্যমে অসময়ের বন্ধুর সহিত অন্য কোন বন্ধুকে এক করা যায় না।
সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি