নভেম্বর ২০, ১৯৭০ শুক্রবার ও দৈনিক ইত্তেফাক
সাহায্য দ্রব্য প্রেরণে বিলম্ব সম্পর্কে তাজউদ্দিন ঃ পূর্ব-পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব তাজউদ্দিন এক বিবৃতিতে বলেন, দুর্গত এলাকায় সেবা কার্যেরত আওয়ামী লীগ ইউনিট ও রিলিফ স্কোয়াডের নিকট হইতে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় যে, অপেক্ষাকৃত দুর্গম অঞ্চলে কোন সাহায্য পৌছিতেছে না। এই সকল এলাকায় একমাত্র ব্যাপকভিত্তিতে হেলিকপ্টার ও সি-প্লেনের সাহায্যে সাহায্য দ্রব্যাদি পৌছান সম্ভব—যা এখনও করা হয় নাই। বিবৃতিতে জনাব তাজউদ্দিন সরকারকে এই ধরনের সকল যান ব্যবহার করিয়া এবং প্রয়ােজন হইলে পশ্চিম পাকিস্তান ও বিদেশ হইতে যান রিকুইজিশন করিয়া পরিস্থিতির মােকাবিলা করার আহ্বান জানাইয়াছেন।
জনাব তাজউদ্দিন বিবৃতিতে দুর্গত এলাকায় লিয়াজো অফিস খােলার ও বেতার এবং অন্যান্য মাধ্যম মারফত অফিসমূহের অবস্থান ঘােষণার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাইয়াছেন। জনাব তাজউদ্দিন বলেন যে, হাজার হাজার আহত ও অসুস্থ ব্যক্তি এবং লােনা পানি চোখে প্রবেশের ফলে যাহারা প্রায় অন্ধত্বের সম্মুখীন হইতেছে তাহাদের চিকিৎসার জন্য বিপুলসংখ্যক যথাযথ সুসজ্জিত ভ্রাম্যমান মেডিকেল ইউনিটের জরুরী প্রয়ােজন। যে বিপুলসংখ্যক মানুষ গৃহহারা উদ্বাস্তুতে পরিণত হইয়াছে, তাহাদের থাকার ব্যবস্থা করার জন্য অবিলম্বে পুনর্বাসন ক্যাম্প স্থাপনের জন্যও তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাইয়াছেন। তিনি সকল আওয়ামী লীগ ইউনিটকে তাহাদের সংগৃহীত সাহায্য দ্রব্য ও অর্থ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম, ৫১ পুরানা পল্টনে জমা দিতে অনুরােধ জানাইয়াছেন। জনাব তাজউদ্দিন সকল আওয়ামী লীগ ইউনিটকে রাস্তায় অর্থ সংগ্রহ করা হইতে বিরত থাকিতে নির্দেশ দিয়াছেন। কারণ বিভিন্ন গ্রুপ বিভিন্ন নামে রাস্তায় চাঁদা সংগ্রহ করে।
সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি