You dont have javascript enabled! Please enable it!

নভেম্বর ১, ১৯৭০ রবিবার ঃ দৈনিক ইত্তেফাক

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবি ঃ ঘােড়াশাল, ৩১ অক্টোবর। গত ২৭ অক্টোবর কৃষ্ণ দিবস উপলক্ষে জাতীয় শ্রমিক লীগের উদ্যোগে পাক জুট মিল শ্রমিক ইউনিয়ন দফতর প্রাঙ্গণে রাত ১২টায় এক বিরাট শ্রমিক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভাষণ দানকালে পূর্ব-পশ্চিম-পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বলেন যে, শ্রমিক ভাইদের পাঁচ দফা দাবি আজও আদায় হয় নাই। পশ্চিম পাকিস্তানের খাদ্যশস্য ও নিত্য প্রয়ােজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য বাংলাদেশের তুলনায় অনেক পরিমাণে কম হওয়া সত্ত্বেও পশ্চিম পাকিস্তানের কল-কারখানার শ্রমিকদের বেতন গড়ে ৩০ টাকা বেশি। অথচ বাংলাদেশে যেখানে চাউলের মূল্য ৪৫ টাকা এবং সরিষার তৈলের মূল্য ৫টাকা সেখানে শ্রমিক ভাইদের বেতন গড়ে ৩০ টাকা কম।

জনাব তাজউদ্দিন এই বৈষম্যমূলক নিয়মের অবসান কামনা করেন। তিনি আরও বলেন যে, বাংলাদেশকে চিরদিনের জন্য বাজার ও কলােনীতে পরিণত করিবার জন্য কায়েমী স্বার্থবাদীরা গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রহিয়াছেন। ৭ ডিসেম্বরের গণভােটে আওয়ামী লীগের ৬-দফার সপক্ষে রায় দিয়া গণ-স্বার্থবিরােধীদের এই চক্রান্ত ব্যর্থ করিয়া দিতে হইবে। জনাব তাজউদ্দিন ঘােষণা করেন যে, সংগ্রামের মধ্য দিয়া আওয়ামী লীগের জন্ম, সংগ্রামের মধ্য দিয়া ইহার বিকাশ, দাবি আদায়ের সংগ্রামে আওয়ামী লীগ কখনাে আপােস করিবে না। জনাব তাজউদ্দিন আহমদ সামরিক আইনে দন্ডপ্রাপ্ত সকল শ্রমিক, ছাত্র ও রাজবন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন। নির্বাচনকালীন সময়ে সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখিবার নিশ্চয়তা বিধানস্বরূপ তিনি সকল রাজবন্দিকে মুক্তি প্রদান অত্যাবশ্যকীয় বলিয়া উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে, ৬-দফা পাকিস্তানের সকল অঞ্চলের প্রতিটি মানুষের চিরস্থায়ী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান করিবে।

সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!