সেপ্টেম্বর ১, ১৯৭০ মঙ্গলবার ঃ দৈনিক ইত্তেফাক
নির্বাচনে নিরপেক্ষতার আশ্বাসের প্রতি আস্থা নষ্ট হইবে ঃ সালনা (ঢাকা), ৩০ আগস্ট। পূর্ব-পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজ এখানে আয়ােজিত জনসভায় বলেন যে, রাজনীতিতে প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে অংশগ্রহণকারী সরকারী কর্মচারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবলম্বন না করিলে নির্বাচনে সরকারী প্রশাসন যন্ত্র সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকিবে বলিয়া প্রেসিডেন্ট যে প্রতিশ্রুতি দান করিয়াছেন, উহার প্রতি দেশবাসী আস্থা হারাইয়া ফেলিবেন। এই ব্যাপারে সরকার এবং উহার গােয়েন্দা বিভাগ এখনও নীরব থাকায় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে এই ব্যাপারে প্রকাশ্য তদন্ত অনুষ্ঠান ও উহার রায় জনসাধারণ্যে প্রকাশ করার দাবি জানান।
জনাব তাজউদ্দিন আহমদ কাইয়ুমপন্থী কনভেনশন লীগের নেতা জনাব ওয়াহিদুজ্জামানের চ্যালেঞ্জের উল্লেখ প্রসঙ্গে কাইয়ুম লীগের চ্যালেঞ্জ বিশারদ নেতাগণকে বিগত ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের ফলাফলের কথা স্মরণ করাইয়া দিয়া বলেন যে, ইহাদের চুড়ি হাতে পরিতে হইবে না, ভােটের বদলে ব্যালট বাক্সে জনসাধারণের দেওয়া ভাঙ্গা চুড়ি হাতে করিয়াই ঘরে ফিরিতে হইবে। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের ফলাফল হইতেই তাহাদের এই শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত ছিল। স্বৈরাচারী আইয়ুব-মােনেমের এককালীন পদলেহনকারী যে সকল নেতা পশ্চিম পাকিস্তানের পুঁজিপতিদের দালালী করিয়া মােটা বখরা পাইয়া থাকেন, এই বখরা হালাল করার জন্যই সেই সকল নেতা মাঝে মাঝে অভ্যাসবশে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আস্ফালন করিয়া থাকেন বলিয়া তিনি মন্তব্য করেন। তিনি এই প্রসঙ্গে কনভেনশনি নেতাদের কু-কীর্তি ও কুশাসনের কথা জনসাধারণকে স্মরণ করাইয়া দেন এবং ইহাদের কথাবার্তা ও কার্যকলাপ সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি