You dont have javascript enabled! Please enable it! 1969.03.21 | দৈনিক ইত্তেফাক-শত প্রতিকূলতার মধ্যেও আওয়ামী লীগ গণ-আন্দোলন চালাইয়া যাইবে - সংগ্রামের নোটবুক

মার্চ ২১, ১৯৬৯ শুক্রবার ঃ দৈনিক ইত্তেফাক

শত প্রতিকূলতার মধ্যেও আওয়ামী লীগ গণ-আন্দোলন চালাইয়া যাইবে । বৈদ্যের বাজার (ঢাকা), ১৮ মার্চ। অদ্য বৈদ্যের বাজার থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বারদী বাজারে অনুষ্ঠিত এক বিরাট জনসভায় বক্তৃতা প্রসঙ্গে পূর্বপাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বলেন যে, আওয়ামী লীগ শত প্রতিকূলতার মধ্যেও নিয়মতান্ত্রিকভাবে গণ-আন্দোলন চালাইয়া যাইতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। গণ-আন্দোলন বানচাল করার উদ্দেশ্যে প্রতিক্রিয়াশীলদের প্ররােচনায় সমাজ বিরােধী ব্যক্তিরা দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অগ্নি সংযােগ, লুঠতরাজ প্রভৃতি যে সমস্ত হিংসাত্মক ও উচ্ছংখল কার্যকলাপ চালাইতেছে, তাহার গুরুতর পরিণতির কথা উল্লেখ করিয়া জনাব তাজউদ্দিন উহাদের সম্পর্কে সকলকে হুশিয়ার করিয়া দেন এবং পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন ও কেন্দ্রীয় আইনসভায় জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতিনিধিত্বসহ ৬-দফা ও ১১-দফার দাবি আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে গণআন্দোলন চালাইয়া যাওয়ার আহ্বান জানান।

সাধারণ মানুষের মুক্তির সনদ আওয়ামী লীগের ৬-দফা ও সংগ্রামী ছাত্রদের ১১দফা দাবি বিশ্লেষণ করে প্রাদেশিক আওয়ামী লীগ সম্পাদক গােলটেবিল বৈঠকে এই সমস্ত দাবি-দাওয়া উত্থাপনের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ ভূমিকার জন্য অভিনন্দন জানান। জনাব তাজউদ্দিন বলেন যে, দুর্বার গণ-আন্দোলনের ফলে তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ও জরুরী অবস্থা প্রত্যাহৃত হইয়াছে এবং দেশের শত শত রাজবন্দিদের সহিত তিনিও কারাগার হইতে মুক্তি পাইয়া পুনরায় দেশবাসীর সহিত মিলিত হওয়ার সুযােগ লাভ করিয়াছেন। জনসাধারণের এই সার্থক সংগ্রামের জন্য তিনি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। প্রতি থানা ও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সংগঠন গড়িয়া তুলিয়া এবং আওয়ামী লীগের পতাকাতলে সমবেত হইয়া শেখ মুজিবুর রহমানের হাতকে শক্তিশালী করিবার জন্য তিনি আহ্বান জানাইলে উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ ‘আওয়ামী লীগ জিন্দাবাদ’, ‘শেখ মুজিব জিন্দাবাদ’ ধ্বনি সহকারে উহাতে সাড়া দেন। পূর্বাহ্নে জনাব তাজউদ্দিন ও অন্যান্য নেতা এখানে আগমন করিলে নদীর তীরে বিপুল জনতা ‘আওয়ামী লীগ জিন্দাবাদ’, ‘শেখ মুজিব জিন্দাবাদ’, ‘তাজউদ্দিন জিন্দাবাদ’ ধ্বনি সহকারে তাহাদিগকে বিপুলভাবে অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করে। সভাশেষে ছাত্র ও আওয়ামী লীগ কর্মীরা মশাল মিছিল বাহির করে এবং নদী ঘাট অবধি যাইয়া নেতৃবৃন্দকে বিদায় জ্ঞাপন করে।

সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি