ফেব্রুয়ারি ১৬, ১৯৬৯ রবিবার ঃ দৈনিক ইত্তেফাক
তাজউদ্দিন কর্তৃক রাজবন্দিদের মর্মান্তিক কাহিনী বর্ণনা ঃ স্টাফ রিপাের্টার। পূর্বপাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব তাজউদ্দিন আহমদ কারামুক্তির পর এক সাক্ষাঙ্কারে লৌহ-কপাটের অন্তরালে আটক রাজবন্দিদের সম্পর্কে এক হৃদয়বিদারী কাহিনীর অবতারণা করেন। তিনি বলেন যে, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর আমি পাঁচবার কারাবরণ করিয়াছি। প্রতিবারেই তারা আমাকে কারাগারে বরণ করিয়া লইয়াছেন, আবার প্রাণঢালা ভালবাসা দিয়া পুষ্পহার পরাইয়া কারাগার হইতে বিদায় দিয়াছেন, তারা আজও কারা-প্রাচীরের অন্তরালে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের কক্ষপথের পানে চাহিয়া মৃত্যুর প্রহর গুণিতেছেন। জনাব তাজউদ্দিন বলেন যে, এই সব প্রবীণ নেতার মধ্যে আজ অনেকেই ব্যাধিতে আক্রান্ত, বয়সের ভারে তারা আজ নৃজ। দলমত নির্বিশেষে শুধু এই কথাই বলা যায় যে, তারা এ দেশের জন্য নির্যাতন ও নিগ্রহ ভােগ করিতেছেন। তাদেরকে লৌহকপাটের এপারে ধরণীর শ্যামলিমায় স্বাধীন নাগরিক হিসাবে বিরচণ করার অধিকার যতদিন পর্যন্ত দেওয়া যায় ততদিন পর্যন্ত আমাদের কলঙ্কের অবসান সম্ভব নয়। জনাব তাজউদ্দিন বলেন যে, কারাগারে অনেক তরুণপ্রাণ নেতা ও কর্মী আছেন তারা নানাবিধ মামলার আসামী হিসাবে কয়েদীর জীবনযাপন করিতেছেন। তিনি আটক সব রাজবন্দির আশু মুক্তি দাবি করেন।
সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি