ফেব্রুয়ারি ১৯, ১৯৬৯ বুধবার ঃ দৈনিক ইত্তেফাক
তাজউদ্দিনের বক্তব্য ঃ এ.পি.পি. পরিবেশিত খবরে বলা হইয়াছে যে, ছয়দফাপন্থী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব তাজউদ্দিন আহমদ গতকল্য (মঙ্গলবার) এখানে বলেন যে, আগরতলা মামলা হইতে মুক্তি পাইবা মাত্র শেখ মুজিবুর রহমান রাওয়ালপিন্ডির আলােচনা সভায় শরিক হইবেন। রাওয়ালপিন্ডি যাত্রার প্রাক্কালে গতকাল ঢাকা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে, আওয়ামী লীগের কথা হইল এই যে, কেবলমাত্র আগরতলা মামলা প্রত্যাহৃত ও শেখ সাহেবকে মুক্তি দেওয়া হইলেই আওয়ামী লীগ প্রধান গােলটেবিল বৈঠকে শরিক হইবেন। স্থানীয় কোন একটি দৈনিকে প্রকাশিত একটি খবর সম্পর্কে মন্তব্য করিতে বলা হইলে জনাব তাজউদ্দিন বলেন যে, “এ সম্পর্কে এই মুহূর্তে আমি কোন মন্তব্য করিব না”। তবে তিনি বলেন যে, রাওয়ালপিন্ডিতে গিয়া তিনি খবরটির সত্যতা যাচাই করিয়া দেখিবেন এবং প্রয়ােজন হইলে একটি বিবৃতি দিবেন। রাওয়ালপিন্ডি গমনের প্রাক্কালে জনাব তাজউদ্দিন কুর্মিটোলায় গিয়া শেখ মুজিবের সহিত সাক্ষাৎ করেন।
তিনি বলেন যে, পিন্ডির প্রস্তাবিত বৈঠকে শেখ সাহেবেরই আওয়ামী লীগের একমাত্র প্রতিনিধি হওয়ার কথা। জনাব তাজউদ্দিন বলেন যে, অবশ্য শেখ সাহেব যদি বৈঠকে না যান তাহা হইলে তিনি আর একজন প্রতিনিধি মনােনীত করিতে পারেন। জনাব আহমদ আরও বলেন, ৬-দফাপন্থী আওয়ামী লীগকে যদি গােল টেবিলে শরিক হইতে হয় তাহা হইলে শেখ মুজিবকে সেখানে চাই-ই। জনাব তাজউদ্দিন বলেন যে, ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে শেখ সাহেবের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া সেখান হইতে সােজা তিনি বিমান বন্দরে আসিয়াছেন। তিনি শেখ সাহেবের কোন বাণী বহন করিতেছেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে জনাব তাজউদ্দিন বলেন : “তেমন বিশেষ কিছু নয়।” অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে, শেখ সাহেবের “কিছু বক্তব্য” তিনি বহন করিয়া লইয়া যাইতেছেন, তবে সে বক্তব্য ইতােপূর্বেই রাওয়ালপিন্ডির সংশ্লিষ্ট মহলে পৌছাইয়া দিয়াছেন। জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বলেন যে, গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদের বৈঠকে। যােগদানের জন্য তিনি পিন্ডি যাইতেছেন। তিনি বলেন যে, গােলটেবিল বৈঠকে ৬দফাপন্থী আওয়ামী লীগের পক্ষে যােগদানের জন্য কেন্দ্রীয় ডাক শেখ মুজিবুর রহমানকে মনােনীত করিয়াছেন এবং প্রেসিডেন্ট আইয়ুবও বৈঠকে শেখ সাহেবের উপস্থিতির প্রস্তাবটি গ্রহণ করিয়াছিলেন।
সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি