কায়েমী স্বার্থ রক্ষায়
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না
বিলােনিয়া, ৫ মে ॥ গত ৪ মে গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের বিলােনীয়া বিভাগীয় ২য় বার্ষিক সম্মেলন শেষ হয়েছে। প্রতিনিধিরা সংগঠনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলােচনা করেন এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করে গড়ে তােলার জন্য সম্মেলনে কয়েকটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। প্রকাশ্য অধিবেশনে এক বিরাট জনসমাবেশ হয়। এই সভায় বীরেন দত্ত এম.পি কম: বাদল চৌধুরী, খগেন দাস, করুনা রায় ভাষণ দেন। কম: চৌধুরী বাংলাদেশ থেকে আগত শরণার্থীদের দুরবস্থার কথা তুলে ধরেন এবং কিছু কিছু সরকারি আমলাদের তিনি তার জন্য দায়ী করেন। কম: দাস তার ভাষণে বলেন যে, সিংহ সরকার ত্রিপুরায় বেকার সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। সুতরাং এই সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং তার জন্য যুবকদের সংগঠিত হতে হবে। সর্বস্তরের যুবকদের গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের পতাকাতলে সামিল হওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
কম: দত্ত তাঁর ভাষণে বলেন যে, বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষ স্বাধীনতা সংগ্রামে লিপ্ত। এই সংগ্রামকে দমন করার জন্য সাম্রাজ্যবাদের দালাল ইয়াহিয়া নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। ভারত সরকার কেন স্বাধীন বাংলাদেশকে এখনও স্বীকৃতি দিচ্ছে না তার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি বলেন যে, মুসলিম লীগ ইয়াহিয়ার সাথে হাত মিলিয়ে হাজারাে বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে এবং শিশু, বৃদ্ধ, নারী সবাইকে হত্যা করছে- ইন্দিরা গান্ধী সেই মুসলিম লীগকে নিয়ে কেরালা এবং পশ্চিম বাংলায় সরকার গঠন করেছে। তাই নিজের কায়েমী স্বার্থ এবং দলের স্বার্থ বজায় রাখার জন্য তিনি বাংলাদেশের স্বীকৃতির ব্যাপারে তালবাহানা করছেন। সবশেষে কম: দত্ত বলেন, নিপীড়িত মানুষের সংগ্রাম জয়লাভ করবেই বাংলাদেশ স্বাধীন হবেই। যুবকদের সংগ্রামের সাথী হবার জন্য তিনি আহ্বান জানান। সভায় সভাপতিত্ব করেন কম. বিষ্ণু মজুমদার। কম: বিষ্ণু মজুমদারকে সভাপতি এবং কম: মদন দাশকে সম্পাদক করে ৯ জনের একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়।
সূত্র: দেশের ডাক
১৪ মে, ১৯৭১
৩০ বৈশাখ, ১৩৭৮