খান সেনারা পেছন হটিতেছে
হন্যে কুকুরের ন্যায় মুক্তিবাহিনী পেছনে তাড়া করিতেছে
বাংলাদেশের মুক্তাঞ্চল হইতে অবিরাম অভিনব সব সংবাদ আসিতেছে। মুক্তিবাহিনী সমগ্র পূর্ব সীমান্ত অঞ্চল হইতে পাক জঙ্গি ফৌজদের উৎখাত করিবার উদ্দেশে গেরিলা পদ্ধতির সহিত সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হইয়াছে। কুমিল্লা সেক্টরে নয়নপুর, শালদা নদী, মন্দভাগ, কসবা ইমামবাড়ী, গঙ্গাসাগর, মুকুন্দপুর প্রভৃতি রেলস্টেশন এবং তৎসন্নিকটস্থ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে অবস্থানকারী দুইশতাধিক খান সেনা এবং অর্ধ সহস্রাধিক রাজাকার খতম করিয়া অঞ্চলগুলােকে মুক্ত করিয়া লইয়াছে। শ্রীহট্ট সেক্টরে কমপক্ষে পাঁচশত বর্গ কিলােমিটার মুক্তাঞ্চলে পরিণত হইয়াছে। তথায় খান সেনাবাহিনীর সহিত আজ তিনদিন যাবত মুক্তিফৌজের সম্মুখ সংগ্রাম তীব্র হইতে তীব্রতর আকার ধারণ করিয়াছে। সর্বত্রই পাক সেনাবাহিনী পেছন হটিতে বাধ্য হইতেছে। পেছন হটিয়াও তাহাদের নিস্তার নাই। মুক্তিবাহিনী হন্যে কুকুরের ন্যায় তাড়া করিয়া দশ বার মাইল পর্যন্ত ভিতরে যাইতেছে। একদল পাক সৈন্য মুকুন্দপুর হইতে পেছন হটিতে হটিতে তিতাস নদীতে পতিত হইলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ তাহাদের লাঠি, বল্লম প্রভৃতি দ্বারা পিটাইয়া খতম করে। পাকবাহিনী সীমান্ত অঞ্চল হইতে তাড়া খাইয়া ব্রাহ্মণবাড়ীয়া এবং তাল শহরে নতুনভাবে ঘাঁটি স্থাপন করিয়াছে। সেখানেও রেহাই নাই; বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কর্মরত গেরিলা মুক্তিবাহিনী ইহাদের বিবরে আশ্রিত শৃগালের ন্যায় খোঁচাইয়া মারিতেছে।
সূত্র: ত্রিপুরা
২৪ নভেম্বর, ১৯৭১