You dont have javascript enabled! Please enable it!

শ্রীহট্ট রণাঙ্গনে মুক্তিযােদ্ধাদের বিরাট সাফল্য
কুমিল্লা শহরের বুকে মুক্তিফৌজ গেরিলাবাহিনীর দুঃসাহসিক গেরিলা অভিযান
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গ্রামে ঘরে দুর্ধর্ষ মুক্তিফৌজের আত্মাহুব্রিতী
স্কোয়াডের হাতে বহু মুসলিম লীগার এবং পাক হানাদার নিহত

আগরতলা ৯ জুন আগামী আট-দশ দিনের মধ্যে সমগ্র শ্রীহট্ট জেলা মুক্তিফৌজের সম্পূর্ণ দখলে আসিবে। কোনাে সেক্টরেই পাক হানাদাররা মুক্তিযােদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমণের বিরুদ্ধে দাঁড়াইতে না পারিয়া পেছন হটিতে বাধ্য হইতেছে। দুই দিন পূর্বে সাড়াশী আক্রমণে প্রায় একশত পাক হানাদার নিহত হইয়াছে এবং ৭০/৮০ জন মুক্তিফৌজের নিকট আত্মসমর্পণ করিয়া বন্দি হইয়াছে। শ্রীহট্ট রণাঙ্গনে নিযুক্ত পাক বাহিনী যুদ্ধের মাল-মশলা, অস্ত্র-শস্ত্র এবং যানবাহন ফেলিয়া নদীপথে পলায়নের জন্য পথ খুঁজিতেছে। মুক্তিফৌজ এই রণাঙ্গনে বহু সমবােপকরণসহ কয়েকটি জিপ গাড়ি দখল করিতে সক্ষম হয়।
গত রবিবার (৬ জুন) মুক্তিফৌজের একটি দুর্ধর্ষ স্কোয়াড কেবলমাত্র হাতবােমা সম্বল করিয়া কুমিল্লা শহরের বুকের উপর দুইটি কারখানায় পাহারারত পাক বাহিনীর উপর গেরিলা পদ্ধতিতে আক্রমণ চালাইলে। সশস্ত্র পাক বাহিনী দিশাহারা হইয়া কারখানার ভিতরে প্রবেশ করিয়া লুকাইয়া প্রাণ বাঁচাইবার চেষ্টা করে। আক্রমণকারীরা অতি অল্প সময়ে তড়িৎ গতিতে ঐ বাহিনীকে হতাহত করিয়া সরিয়া পড়ে।
মুক্তিফৌজের দুর্ধর্ষ স্কোয়াড, অধিকাংশই তরুণ এবং যুবকদের লইয়া গঠিত। এই বাহিনী ট্রেনিং লইয়া পাকিস্তানের বিভিন্ন গ্রামে স্ব-স্ব এলাকায় প্রবেশ পূর্বক বাংলাদেশের গৃহশত্রু মুসলিম লীগারদের খুঁজিয়া বাহির করিয়া খতম করিতেছে। পূর্বাঞ্চলে (শ্রীহট্ট, কুমিল্লা ও নােয়াখালী জেলায়) পাক ফৌজের ছাউনির বাহিরে চোখে দিবার মতাে লীগার বা গুপ্ত শক্ত পাওয়া যায় না। আট-দশ দিন পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া মহকুমার চান্দুরা থানাধীন সাতগাঁও গ্রামে পাক বাহিনী শিবির সংস্থাপন করিয়া গ্রামবাসীদের উপর হামলার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে। তাহারা প্রস্তুত হইবার পূর্বেই বিপুল সংখ্যক সশস্ত্র মুক্তিফৌজ আসিয়া চতুর্দিক হইতে ঘেরাও করিয়া একে একে সব কয়টিকে খতম করে এবং তাহাদের সমবােপকরণসহ শিবির সম্ভারগুলােও দখল করে।

সূত্র: ত্রিপুরা
৯ জুন, ১৯৭১
২৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৩৭৮

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!