বঙ্গবন্ধুর ভাষণসমগ্র | গোপালগঞ্জের জনসভায় বঙ্গবন্ধু | ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৭ | গোপালগঞ্জ
গোপালগঞ্জের জনসভায় বঙ্গবন্ধু
৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৭
গোপালগঞ্জ
খাদ্যশস্য সংগ্রহের উদ্যেশ্যে কোন কোন উদ্বাস্তু অঞ্চলে কর্ডন প্রথা প্রবর্তন করা হইলেও অন্যান্য স্থানের লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণকে অবাধে খাদ্যশস্যের ব্যবসা করিতে অনুমতি দেওয়া হইয়াছে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণকে কর্ডনের আওতামুক্ত এলাকায় খাদ্যশস্যের চলাচলে কেহ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিলে তাহা কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে।
যথেষ্ট অপচয় করিয়াও লক্ষ লক্ষ মরণমুখ লোকের অনন্যার ব্যবস্থা করিতে হইয়াছে। খাদ্যশস্যের শোচনীয় পরিস্থিতিকে আয়ত্ত্বাধানে আনয়ন করা হইলেও ভবিষ্যতে যাহাতে এইরূপ ভয়াবহ অবস্থার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তজ্জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে। এই অবস্থা বিবেচনা করিয়া সরকার স্থানীয়ভাবে খাদ্যশস্য মজুদ রাখার উদ্যেশে দেশের অভ্যন্তরভাগ হইতে ও বিদেশ হইতে খাদ্যশস্য সংগ্রহের পরিকল্পনা গ্রহণ করিয়াছেন।
খাদ্য পরিস্থিতিকে আয়ত্ত্বাধিনে আনিবার জন্যই প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে টেস্ট রিলিফ বাবদ অর্থ মঞ্জুর করা হইয়াছে। যদি টেস্ট রিলিফ বাবদ প্রদত্ত অর্থ সঠিকভাবে ব্যয়ের ব্যবস্থা করা হয় তবে বিভিন্ন স্থানের ছোট ছোট উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলি কার্যকরী করা সম্ভবপর হইবে। গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর মহকুমায় টেস্ট রিলিফ বাবদ প্রায় ৭ লক্ষ টাকা দেওয়া হইয়াছে।
যুক্ত নির্বাচনের ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে রাজনৈতিক অধিকারের প্রশ্নে যে মতবিরোধ ছিলো তাহা তিরোহিত হইয়াছে। যাহারা ব্যক্তিগত মতলব হাসিলের উদ্যেশ্যে নির্বাচনের প্রশ্নে জনসাধারণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করিতেছে তাহাদের তীব্র নিন্দা জানাই। পাকিস্তানের উজিরে আযম জনাব এইস এস সোহরাওয়ার্দী নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর প্রশ্ন উত্থাপন করিয়া পরিস্থিতির মোড় ঘুরাইয়া দিয়াছেন।
Reference:
দৈনিক আজাদ, ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৭