তাজউদ্দীন সম্পর্কে যেটা বিশেষভাবে বলতে চাই যে, মুসলিম লীগ রাজনীতিতে থেকেই তাঁর মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষ মনােভাব ছিল, যেটা পরবর্তীকালে আমরা দেখেছি, কিন্তু সেই সময়ও এটা তাঁর মধ্যে ছিল এবং যার ফলে বিভিন্ন জায়গায় একটা যৌথ আন্দোলন গড়ে তােলার প্রচেষ্টা তিনি করেছেন। তৎকালীন কংগ্রেস, কমিউনিস্ট পার্টি, বিভিন্ন ফরােয়ার্ড ব্লক, নেতাজী সুভাষ বসুর ফরােয়ার্ড ব্লক, তখন ঢাকায় খুব অ্যাকটিভ ছিল। আরএসপি নামে আর একটা পার্টি ছিল, এই যে এদের সঙ্গে যােগাযােগটা আদানপ্রদানটা মুসলিম লীগ কর্মীদের মধ্যে, এ কাজে তাজউদ্দীনই একমাত্র উপযুক্ত ছিলেন, তাদের সঙ্গে ইনটেলেকচুয়াল যােগাযােগ করার মত—যার ফলে বিভিন্ন আলাপ–আলােচনায় তাজউদ্দীন অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন। আমার যেটা মনে হয়, তাজউদ্দীন সাহেব সেই সময়ই মুসলিম লীগের বাইরে ইস্ট পাকিস্তান ইকনমিক ফ্রীডম লীগ নামে একটা পার্টির কথা চিন্তা করছিলেন। ‘৪৮–এর পর তিনি আর মুসলিম লীগের সাথে ছিলেন না। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি দরিদ্র শ্রেণীর ভাগ্য উন্নয়ন, এবং সমাজে তাদের একটা উন্নয়নমূলক অংশগ্রহণের কথা চিন্তা করতেন। পরবর্তীকালে সমাজতান্ত্রিক সমাজ–কাঠামাে—গণতন্ত্রও থাকবে, সমাজতন্ত্রও থাকবে—এই রকম একটা ব্যবস্থা ‘৭২–এর সংবিধানে আমরা দেখেছি। কিন্তু তাজউদ্দীনের মধ্যে এই চিন্তাটা চল্লিশের দশকের শেষের দিকেই ছিল, যখন তিনি অত্যন্ত অল্প বয়সের যুবক মাত্র। স্কুল এবং কলেজ ছাত্রজীবনেই তাজউদ্দীন সাহেবের সাথে আমার যােগাযােগটা বেশি ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আমরা ফজলুল হক হলে থাকলেও তার সঙ্গে আমার মাঝে মাঝে যােগাযােগ হয়েছে, কিন্তু তেমন ঘনিষ্ঠতা আর হয়নি। কারণ আমরা দু‘জন তখন দুই রকম রাজনীতিতে ছিলাম। আমি কমিউনিস্ট রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হই। তাজউদ্দীন সাহেব আমাকে খুব স্নেহ করতেন, ভালবাসতেন। তিনি আমার নাম দিয়েছিলেন লিটল লেনিন‘। এটা ‘৪৮–৪৯ সালের কথা। বামপন্থীদের দিকে তাজউদ্দীন সাহেবের সবসময় একটা সহানুভূতি ছিল। কিন্তু তিনি কখনই কমিউনিস্ট পার্টিতে যােগ দেননি। ‘৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের সময় আমি ঢাকায় একটি খবরের কাগজে চাকরি করতাম। আমি তখন আর ঠিক সরাসরি রাজনীতিতে জড়িত না। সরকারি চাকরিতে যােগ দেই ‘৫৬ সালে। তারপর যখন ‘৬৪ সালে আওয়ামী লীগ রিভাইভ করল তখন সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে আসি। সেই সময় আবার বহু বছর পর তাজউদ্দীন সাহেবের সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা হয়। তখন আবার তাঁকে দেখলাম ৬–দফা কর্মসূচির ক্ষেত্রেও একটি প্রধান ভূমিকা পালন করতে। দফাগুলােকে লেখা, এটাকে ভাষা দেয়া, ছাপানাে ইত্যাদিতে তাজউদ্দীনের ভূমিকাই প্রধান ছিল। কারণ তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের মধ্যে তিনি সবচাইতে শিক্ষিত লােক ছিলেন। এই কথাতে অনেকেই মনঃক্ষুন্ন হতে পারেন, কিন্তু কথাটা খুব সত্যি। যেহেতু আমি কিছুকাল সাংবাদিক ছিলাম, তাই এই লেখালেখির অনেকটা কাজ আমার উপরে ছিল—যার ফলে তাজউদ্দীন সাহেরে এই দিকটি সম্পর্কে আমিখুব ভাল জানি। যেমন প্রুফ রিডিংয়ে তিনি প্রায় ওস্তাদ হয়ে গিয়েছিলেন, যেহেতু তাকে অধিকাংশ পাবলিকেশন্স দেখতে হত, তাই প্রেস সম্পর্কে তার ভাল অভিজ্ঞতা ছিল। আওয়ামী লীগের মধ্যেও ৬–দফা নিয়ে মতভেদ ছিল। সালাম খান, যিনি আওয়ামী লীগের একজন প্রধান ব্যক্তি ছিলেন, তিনি পরে দল থেকে বেরিয়ে গেলেন ৮–দফা করে। এমনকি যারা রয়ে গেলেন যেমন, খন্দকার মােশতাক, মিজানুর রহমান চৌধুরী তারা কিন্তু মনে মনে ৬–দফার পক্ষে ছিলেন না। তাঁরা হয়ত ব্যক্তিগত কেরিয়ারের জন্য দলে থেকে গেলেন। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর পরেই ৬দফা প্রণয়নের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা তাজউদ্দীনের ছিল। শুরুতেই ৬–দফা কিন্তু ৬–দফা আকারে ছিল না। প্রথমে এটিতে প্রায় ১৩টি দফা ছিল। এই দফাগুলাে নিয়ে আমরা সমাজের বিভিন্ন মানুষের সাথে আলাপআলােচনা করেছি—অর্থনীতিবিদদের সাথে আলাপ করেছি, চিন্তাশীল ব্যক্তিদের সাথে আলাপ করেছি। যেমন প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক, ড. আখলাকুর রহমান, ড. এম. এন. হুদার সাথে, বুরােক্রেটদের মধ্যে রুহুল কুদ্স এবং আরাে কয়েকজনের সাথে আলােচনা হয়েছে। এই সব আলােচনার মুখপাত্র ছিলেন তাজউদ্দীন। তারপর পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে এই দফাগুলাে নিয়ে আলােচনায় বসার আগে বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে দফাগুলােকে ছােট করার দায়িত্ব দিলেন। তখন ৬–দফা হিসেবে এটি বেরিয়ে এল। ‘৬৬ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে বৈঠক শেষে যে কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত হয় সেখানেই এই ৬–দফাকে গ্রহণ করা হয়। এবং ৬–দফার এক্সপােনেন্ট হিসেবেই তাজউদ্দীনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়, বঙ্গবন্ধু সভাপতি হন। তারপর ৬–দফার আন্দোলন চলতে থাকে এবং আন্দোলনের এই যে সামনের দিকে এগিয়ে চলা—এখানে একটি কথা বলতে পারি যে, হয়ত ওয়ার্কিং কমিটি বা অন্যান্য আলােচনায় সরাসরি আলােচিত হয়নি, কিন্তু যারা বঙ্গবন্ধু এবং তাজউদ্দীন সাহেবের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তাঁরা জানতেন যে, আমরা স্বাধীনতার দিকেই ধাবিত হচ্ছি। আমাদের মনে এতে কোন সন্দেহ ছিল না। শেষ পর্যন্ত আমাদেরকে স্বাধীন হতে হবে এতে কোন দ্বিধা ছিল না। এই সময়টাতে যেহেতু তাজউদ্দীন সাহেব সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, প্রধান দায়িত্ব তাে তাঁকেই পালন করতে হয়েছে। আমি আবারও জোর দিয়ে বলছি, যেহেতু তিনি লাইমলাইটে আসেননি, বঙ্গবন্ধুকেই সামনে রেখেছেন, বঙ্গবন্ধুরএকটা ইমেজ তৈরি হয়েছিল, তাই তার একজন সহযােগী হিসেবে তিনি দায়িত্ব। পালন করে গেছেন। এ ব্যাপারে আমার যতটুকু জ্ঞান বা ধারণা, বঙ্গবন্ধু এবং তাজউদ্দীনের মধ্যে অত্যন্ত সুন্দর একটা ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। জীবনের প্রথম অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক না হলেও এই ৬–দফার আন্দোলনের সময় বা আওয়ামী লীগ পুনরুজ্জীবনের সময় থেকে খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। বলতে গেলে দুই দেহ কিন্তু এক প্রাণ ছিলেন দু‘জনে। ষাটের দশকের এই সময়ের যে চিন্তা, রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা, এর প্রধানতম দায়িত্ব তাজউদ্দীনই পালন করেছেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন অসাধারণ স্মৃতিধর, যা শুনতেন তিনি তা ধারণ করতে পারতেন। এমনকি বঙ্গবন্ধু যখন বক্তৃতা দিতে যেতেন মাঠে, তখনও তাজউদ্দীনের সাথে আলােচনা করতেন কী বলবেন না বলবেন ইত্যাদি বিষয়ে। এবং ওয়ার্কিং কমিটিতে যখন তাজউদ্দীন উপস্থিত থাকতেন সমস্ত রেজুলেশন তিনিই লিখতেন সবসময়। এভাবেই তৈরি হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের দিকে এগিয়ে চলার পথ। মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে আমি তাজউদ্দীনকে ‘দ্যগল অফ বেঙ্গল’ বলে অভিহিত করতে চাই। এই বিষয়ে আমি পত্রিকাতে একটি কলামও লিখেছিলাম। কারণ প্রবাসে সরকার গঠনের সম্পূর্ণ কৃতিত্ব হচ্ছে তাজউদ্দীনের। এখানে আমি আমার মত বলছি, অত্যন্ত সচেতনভাবে। তাজউদ্দীনকে এখানে আমি একক কৃতিত্ব দিতে চাই। এই যে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া যে, প্রবাসে গিয়ে একটা সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে—যেমন দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় দ্যগল লন্ডনে গিয়ে একটা ফরাসী সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং পরবর্তীকালে ফরাসী প্রতিরােধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন লন্ডনে থেকে—তেমনি বঙ্গবন্ধু তখন অনুপস্থিত ছিলেন, তিনি পাকিস্তানি জেলে বন্দি, এই সময়ে প্রবাসে সরকার গঠন করা, মুক্তিযুদ্ধকে পরিচালনা করা, ভারতীয় সহায়তা নেয়া, সেই ব্যাপারে একক কৃতিত্ব তাজউদ্দীনের। এ কারণেই আমি তাজউদ্দীনকে স্বাধীনতা যুদ্ধের সিপাহসালার বা প্রধান সেনাপতি বলতে চাই। আর একটি কৃতিত্ব দিতে চাই যে, তিনি রামায়ণে বর্ণিত ভরতের ভূমিকাই পালন করেছেন। ভরত যেমন রামচন্দ্রের পাদুকা সিংহাসনে রেখে দেশ শাসন করছিলেন, বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তেমনি তাজউদ্দীন তাঁর প্রতি তাঁর বিশ্বস্ততা, ভালবাসা সম্পূর্ণ অক্ষুন্ন রেখে সমস্ত শাসন পরিচালনা করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছেন। এবং বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তনের পরে জানুয়ারিতে নির্দ্বিধায় তাঁকে আসন ছেড়ে দিয়েছেন। এবং তাঁর সেকেন্ড–ইন–কম্যান্ড হতেও তাঁর মনেকোন দ্বিধা আসেনি। এই যে মহত্ত্ব, ইতিহাসে এর দৃষ্টান্ত আর নেই। একমাত্র পৌরাণিক কাহিনী রামায়ণে আছে ভরতের ইতিহাস, এ ছাড়া আর কোন দ্বিতীয় দৃষ্টান্ত নেই। এই যে এইভাবে আত্মত্যাগ করে পাশে এসে দাঁড়ানাে, এটা কিন্তু তাজউদ্দীনের প্রথম জীবন থেকেই ছিল। নিজেকে লাইমলাইটে না আনা, নিজেকে প্রকাশ না করা, যার ফলে তার সম্পর্কে লেখা এবং জানা তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে। পরবর্তীকালে দেখেছি কিছু কিছু লােক তাজউদ্দীনকে তাঁর মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকার গঠনের জন্য কৃতিত্ব না দিয়ে ভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলেছে। অথচ মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানিদের হাতে বন্দি ছিলেন। তিনি জানতেন না। যে দেশ স্বাধীন হয়েছে। দেশ যে স্বাধীন হয়েছে এটা তিনি লন্ডনে গিয়ে প্রথম শশানেন। বিবিসি–র সিরাজুর রহমানের কাছে তাঁর টেপ করা সাক্ষাৎকারে আমি এটা শুনেছি। পরবর্তীতে তাজউদ্দীন ক্যাবিনেট থেকে চলে গেছেন, হয়ত মতবিরােধ বা অন্য কোন কারণে, সে তথ্য আমার জানা নেই। কিন্তু একটা জিনিস আমি আজ পর্যন্ত বুঝতে পারিনি যে, তাজউদ্দীনের মত দুর্লভ লয়্যালটি যা বঙ্গবন্ধু পেয়েছিলেন, তাদের মাঝে কী এমন হল, কেন তাজউদ্দীন দূরে চলে গেলেন, এটা খুবই রহস্যের মত মনে হয়। দেশ স্বাধীন হবার পর থেকেই বােধ হয় তাঁদের মতবিরােধটা চলছিল। ‘৭২ বা ‘৭৩ সালের কথা, আমি তখন সরকারের তথ্য সচিব। এক বিয়েতে তাজউদ্দীন সাহেবের সাথে দেখা, আমাকে দেখেই খুব রেগে বললেন, মুজিব ভাইকে একটু বােঝাও, তিনি যেভাবে দেশ চালাচ্ছেন তাতে দেশটারও কিন্তু ক্ষতি হবে। আমি বললাম, আমি কি আপনার চাইতে বেশি বােঝাব?’ তখন তিনি বললেন, তিনি তাে তােমাদের মত আমলাদের কথা বেশি শশানেন। তাজউদ্দীনের এই কথাটি কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং খুব সত্যি। এমনকি শেখ মণি পর্যন্ত কাগজে একটা হেডলাইন দিয়েছিল যে, মােনায়েমের আমলা দিয়ে মুজিবের শাসন চলবে না। যারা বঙ্গবন্ধুর সাথে রাজনীতি করেছেন, রাজনীতিতে একনিষ্ঠ ছিলেন তাঁদের চাইতে কিন্তু পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু এই আমলাদের উপর খুব নির্ভরশীল হয়ে গেলেন। যে সমস্ত ব্যুরােক্র্যাট পাকিস্তান আমলে বেশ গুরুত্বপূর্ণ পজিশনে ছিলেন তাঁদেরকেই পুনরায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ পজিশনই দিলেন, দিতে আরম্ভ করলেন।যার ফলে প্রশাসনে তেমন কোন গুণগত পরিবর্তন আর হল না। ওই পাকিস্তানের প্রশাসনটাই রয়ে গেল। তাজউদ্দীন সাহেব অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ের আর একটি ঘটনার কথা মনে আছে। আমাকে বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘তাজউদ্দীন তােমার বন্ধু, সে একরােখা, আমার কথা শুনবে না। তুমি একটু যাও, যেয়ে দেখ টিভি স্টেশন সম্প্রসারণের জন্য টাকা বরাদ্দ দেবে কিনা। তাজউদ্দীন সাহেব নীতির বিষয়ে খুব কড়া ছিলেন, বঙ্গবন্ধুকেও তিনি অনেক সময় না করে দিয়েছেন, বােঝাবার চেষ্টা করেছেন। আমার এখনও মনে আছে, টিভি স্টেশনের সম্প্রসারণের ব্যাপারে আমরা একটা প্রস্তাব করেছিলাম। তাজউদ্দীন এটাতে রাজি ছিলেন না। আমি তাজউদ্দীন সাহেবের কাছে এই প্রস্তাব নিয়ে গেলে তিনি আমাকে খুব ভালভাবে বুঝিয়ে দিলেন, আমাদের মত একটা গরিব দেশে টেলিভিশনের মত একটি বিলাসী মাধ্যমের জন্য নতুন করে টাকা খরচ করার মত টাকা আমাদের নেই। আমাদের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থায় এটি ঠিক হবে না। আমি তাজউদ্দীন সাহেবের যুক্তিতে সম্মত হয়ে ফিরে এলাম। এমনকি বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী এবং তথ্যমন্ত্রী হওয়া সত্তেও তাজউদ্দীন সাহেবের এই সিদ্ধান্ত ওভাররাইড করেননি। তাজউদ্দীন সাহেব ফাইলে চমৎকার নােট লিখতেন। আমার মনে হয় এমন সুন্দর নােট বাংলা ভাষায় আর হয় না। তাজউদ্দীন ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন। এই ইতিহাস নিশ্চয়ই তাজউদ্দীনকে একদিন যথার্থ সম্মান দেবে।
(২৬.১০.১৯৯০)
বাহাউদ্দিন চৌধুরী : সাংবাদিক এবং সরকারি কর্মকর্তা, বাংলদেশ সরকারের সাবেক সচিব।