শাসন বিভাগের ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ দাবী
১৩ জুলাই ১৯৫৫
করাচী
(অধিকার বিলের আলোচনা প্রসঙ্গে গণপরিষদে বঙ্গবন্ধু বলেন -)
খাজা নাজিমুদ্দিন যখন প্রধানমন্ত্রী তখন জনাব সোহরাওয়ার্দী একবার পূর্ব বঙ্গে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সম্পর্কে বক্তৃতা দান করিতে যান। কিন্তু এম সি এ হওয়া সত্ত্বেও তাহাঁকে ঢাকায় আটক করা হয়।
আপনারা মানুষের সমস্ত জীবন যাত্রার উপর শাসন চালাইবার জন্য বিধি প্রদত্ত কোন অধিকার লইয়া আসেন নাই। আগামী কল্যই যে কেউ ক্ষমতাচ্যুত হইতে পারেন। অতএব আমাদের শুধু গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করা উচিৎ। নচেৎ, পাকিস্তান বিভীষিকার রাজত্বে পরিণত হইবে।
পূর্ব বঙ্গের শতকরা ৯৯ জন লোক আমাদের পক্ষে ভোট দেয়। কিন্তু তথায় সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাইতে পারে কিন্তু ৯২ (ক) ধারা প্রয়োগের কোন প্রয়োজন নাই। পূর্ব বঙ্গে ৯২ (ক) ধারা প্রয়োগের পর অনেক পরিষদ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয় এবং কয়েকজনকে “দেশদ্রোহী” আখ্যা দেওয়া হয়।
সত্যিকার দেশদ্রোহী কে এখন আমরা তার বিচার করিব। আমরা কখনোই বিশ্বাস করি নাই যে, মৌলভি ফজলুল হক একজন দেশদ্রোহী। কিন্তু গত বৎসর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইংরেজি, উর্দু এবং বাংলার প্রচার পুস্তিকা ছাপিয়া জনাব ফজলুল হককে দেশদ্রোহী আখ্যা দেন। কিন্তু প্রকৃত দেশদ্রোহী কাহারা, জন-সাধারন তাহার বিচার করিবে।
পূর্ব বঙ্গে যখন দাঙ্গা চলিতেছিল, তখন তাহাঁকেও একটি মামলার সহিত জড়িত করা হয় এবং আরও অনেকের সহিত তাহাঁকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু আদালত রায় দেন যে, তিনি আইন ভঙ্গকারী নহেন। পরন্তু তিনি একজন শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী। পূর্ব বঙ্গে ১৫ শত কর্মীকে গ্রেফতার করা হয় এবং অনেকের সম্পত্তি বাজেয়াফত করা হয়। ৫০ জন এম পি এ কেও কারারুদ্ধ করা হয়।
Reference:
দৈনিক আজাদ, ১৫ জুলাই ১৯৫৫