You dont have javascript enabled! Please enable it!
টাঙ্গাইল শহরে পাকিস্তানি সেনাদের উপর গ্রেনেড নিক্ষেপ
মুক্তিবাহিনীর বিভিন্ন দল সমগ্র টাঙ্গাইল এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের বিভিন্ন । অবস্থানে হামলার পরিকল্পনা করে। ১৯৭১ সালের ৫ নভেম্বর রাতে টাঙ্গাইল। শহরে নিপ্রদীপ মহড়া চালানাে হয়। রাতটি মুক্তিবাহিনীকে এক সুবর্ণ সুযােগ এনে দেয়। এবার তাদের লক্ষ্য পাওয়ার স্টেশন, টাঙ্গাইল জিপিও ও শিবনাথ। স্কুলের রাজাকার ঘাটি। করটিয়ার আশপাশে মুক্তিযােদ্ধাদের নিয়ে গঠিত বায়েজিদ আলমের নেতৃত্বে বজ্র কোম্পানি এবং স্বেচ্ছাসেবক অধিনায়ক আনােয়ার দলের সুইসাইড স্কোয়াড পুরাে রাত গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। টাঙ্গাইল। শহরের উপর নানা দিক থেকে প্রায় ৩০০ গ্রেনেড ছোড়া হয়। কাগমারী। ওয়্যারলেস স্টেশনের কাছে রাজাকার ঘাটি, নগর জলফই পুলের কাছে টাঙ্গাইল পাওয়ার স্টেশন, টাঙ্গাইল জিপিও’র পিছনে শিবনাথ স্কুলের রাজাকার ঘাটিতে। মুক্তিযােদ্ধারা গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। এতে ৬-৭জন রাজাকার নিহত এবং ৪০জন আহত হয়।
পােড়াবাড়িতে খণ্ডযুদ্ধ
১৯৭১ সালের ৫ নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলা সদরের সন্নিকটে পােড়াবাড়িতে অবস্থানরত পাকিস্তানি বাহিনীর উপর মুক্তিবাহিনী আক্রমণ করে। পাকিস্তানি সেনাদের পাল্টা গুলিবিনিময়ে মুক্তিযােদ্ধারা পিছু হটতে বাধ্য হন। দুর্ভাগ্যক্রমে। ১জন মুক্তিযােদ্ধা পাকিস্তানি সেনাদের হাতে বন্দি হন। পােড়াবাড়ির খণ্ডযুদ্ধে। ইদ্রিস কোম্পানির হাতে ৩জন পাকিস্তানি সৈন্য ও ৫জন রাজাকার নিহত এবং ১জন রাজাকার বন্দি হয়। ৫-২৮ নভেম্বর সময়ে অর্থাৎ ২২-২৩ দিনে আছিম, লহরের বাইদ ও রাঙামাটির ঘাটিতে গােলাবারুদসহ বিভিন্ন সময়ে ২০০জন। রাজাকার আত্মসমর্পণ করে।
মধুপুর পাকিস্তানি ঘাঁটিতে আক্রমণ
টাঙ্গাইল জেলার উত্তরের থানা ঘাটাইল। থানা সদর থেকে ৬-৭ কিলােমিটার। আরও উত্তরে মধুপুর একটি ছােটো বাজার। এখানে মিলিশিয়া সদস্য দিয়ে পাকিস্তানিরা একটি ঘাঁটি স্থাপন করে। মুক্তিযােদ্ধারা এ ঘাটি আক্রমণ করার পরিকল্পনা নেন। ১৯৭১ সালের ৫ নভেম্বর মুক্তিযােদ্ধা রফিজউদ্দিন, আনােয়ারুল হক খান, আবদুলসহ আরও কয়েকজনের একটি দল মিলিশিয়া ক্যাম্পটি আক্রমণ করে। এ আক্রমণে মুক্তিযােদ্ধাদের কয়েকজন সদস্য আহত হন। তবে শত্রু হতাহতের কোনাে খবর পাওয়া যায় নি।
ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের যুদ্ধ
১৯৭১ সালের ১২ নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলা সদর এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে টাঙ্গাইল মুক্তিবাহিনী ৬টি সেতু ধ্বংস করে। সেতু ধ্বংসের ফলে পাকিস্তানি সেনাদের ঢাকা-টাঙ্গাইল যাতায়াতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। ফলে যানবাহনযােগে চলাচল করতে পাকিস্তানিদের খুব ধীর গতিতে অগ্রসর হতে হতাে। মুক্তিযােদ্ধারা এ সুযােগ সহজেই কাজে লাগাতে সচেষ্ট হন। ১৭ নভেম্বর। ময়মনসিংহ থেকে টাঙ্গাইল যাওয়ার পথে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২টি জিপের উপর মুক্তিবাহিনী অ্যামবুশ করে। এ অ্যামবুশে জিপ ২টি সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।

সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – চতুর্থ খন্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!