You dont have javascript enabled! Please enable it!
চারান এলাকায় যুদ্ধ
কালিহাতি থানার একটি গ্রাম চারান। এ গ্রামে পাকিস্তানি দোসর ও সহযােদ্ধা বাহিনী মিলিশিয়া ও রাজাকাররা প্রায়ই প্রবেশ করতাে। জনগণের উপর নির্যাতন চালাতাে এবং বিভিন্ন মালামাল লুণ্ঠন করে নিয়ে যেত। মুক্তিযােদ্ধারা এ খবর পেয়ে রাজাকারদের অপকর্ম রােধ করার জন্য সুযােগ খুঁজতে থাকেন। ১৯৭১ সালের ২৩ অক্টোবর এ ধরনের একটা মােক্ষম সুযােগ পেয়ে যান। মুক্তিযােদ্ধারা। সাপ্তাহিক মেয়াদে পাকিস্তানিরা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করার। সময় রাজাকার-মিলিশিয়াদের টহল জোরদার করতাে। সেদিন বল্লা পাকিস্তানি। ঘাটি থেকে শত্রু স্থানান্তর হওয়ার প্রাক্কালে রাজাকার-মিলিশিয়ার একটি দল। টহলরত ছিল। মুক্তিযােদ্ধারা অতর্কিতে টহল দলের উপর আক্রমণ করে বসে। এ আক্রমণে কী পরিমাণ শত্রু হতাহত হয়েছিল তা বিস্তারিতভাবে জানা যায়নি।
বটতলা বাজারের রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ
বটতলা বাজারটি ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানার অন্তর্গত। বাজারটি রাস্তার পাশে অবস্থিত। বাজার ও স্থানীয় রাস্তা দিয়ে চলাচলের নিরাপত্তার জন্য এ বাজারে একটি রাজাকার ক্যাম্পের অবস্থান ছিল। ১৯৭১ সালের ১ নভেম্বর ইপিআর সদস্য আক্কাস আলীর নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর একটি দল বটতলা বাজার রাজাকার ক্যাম্পে আক্রমণ করে তা দখল করে নেয়। ক্যাম্প আক্রমণে রাজাকার বাহিনীর বিপুল পরিমাণ ক্ষতি। সাধিত হয় এবং বেশ কয়েকজন রাজাকার আত্মসমর্পণ করে। এ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযােদ্ধাদের নাম নিমে উল্লেখ করা হলাে:
১. রফিজউদ্দিন
২. আক্কাছ আলী
৩, আবদুল হালিম
৪. নাজমুল হক তারা
৫. জবেদ আলী
৬. সুবেদার জিয়াউল হক
৭. কেরামত আলী
এলাসিন ঘাটের যুদ্ধ
দেলদুয়ার থানা এলাকায় ধলেশ্বরী নদীর উপর অবস্থিত এলাসিন খেয়াঘাট। এই খেয়াঘাট দিয়ে পুলিশসহ স্থানীয় জনগণ নিয়মিত পারাপার হতাে। দেলদুয়ার থানার কিছু অবাঙালি পুলিশ প্রায়ই এ খেয়াঘাটে বসে নানা রকম খবরদারি করতাে। মুক্তিযােদ্ধারা এদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিকল্পনা করেন। অক্টোবর মাসের শেষের দিকে মুক্তিযােদ্ধারা একদিন পুলিশের উপর। অতর্কিতে আক্রমণ চালান। এই আক্রমণে ২জন অবাঙালি পুলিশ মারা যায়। এবং অন্য পুলিশরা খেয়াঘাট থেকে পালিয়ে যায়। উক্ত আক্রমণে মুক্তিযােদ্ধাদের কোনাে ক্ষয়ক্ষতি হয় নি।
আছিম পােড়াবাড়ির যুদ্ধ
আছিম পােড়াবাড়ি স্থানটি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া থানার (বর্তমানে ত্রিশাল থানার) অন্তর্গত। ১৯৭১ সালের ৫ নভেম্বর একদল মুক্তিযােদ্ধা এ স্থানে পাকিস্তানি বাহিনীর একটি টহল দলের উপর আক্রমণ করেন। উভয় পক্ষে দুই ঘণ্টা বিক্ষিপ্ত গুলিবিনিময়ের পর পাকিস্তানি বাহিনী ময়মনসিংহের দিকে অবস্থান পরিবর্তন করে। মুক্তিবাহিনীর আকস্মিক আক্রমণের উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর অবাধ বিচরণকে বাধা দেয়া। এ আক্রমণের মধ্য দিয়ে মুক্তিবাহিনী তাদের লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়।
এ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযােদ্ধারা হলেন:
১. ইদ্রিস আলী।
২. আইয়ুব আলী
৩. ইউনুস আলী
৪, ইয়াকুব আলী।
৫. আবদুল হালিম
৬. আফসার উদ্দিন
৭. গােলাম সারােয়ার
৮. রফিজ উদ্দিন
৯, নূরুল আমিন।
১০. কাশেম আলী ফকির
১১. আবদুল আজিজ মাস্টার
১২. আজিজুর রহমান।

সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – চতুর্থ খন্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!