শাসনতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ভাষণ
১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫
পল্টন
গণপরিষদের সদস্য হবার সময় আমার ধারণা ছিল যে, শীঘ্রই শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করা হইবে। কিন্তু এখন মনে হইতেছে, শাসনতন্ত্র আদৌ প্রণয়ন নাও হইতে পারে। আমি অবিলম্বে তাহা প্রণয়নের দাবী জানাই। ইহাতে পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন, সর্বময় সাম্য ও অন্যতম রাষ্ট্রভাষা রূপে বাংলার দাবীর স্বীকৃতি থাকিতে হইবে। এক ইউনিট পরিকল্পনা স্থগিত রাখিবার জন্য উজিরে আজম চৌধুরী মোহাম্মদ আলীর প্রতি আবেদন জানাই। এক ইউনিট পরিকল্পনাকে সঠিক জনমত দ্বারা যাচাই করিয়া লওয়ার জন্য আমি বিলের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানাই।
কেন্দ্রীয় রাজধানী করাচী প্রধানতই পূর্ববঙ্গের সম্পদ ভিত্তি করিয়া গড়িয়া উঠিয়াছে। সেক্ষেত্রে উহাকে কোন ক্রমেই এক ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত করা যায়না। করাচীকে এক ইউনিটের বাহিরে রাখিবার জন্য আমি আন্দোলন করিব। অতীব দুঃখের বিষয় যে, দেশরক্ষা বাহিনীতে স্বল্প সংখ্যক পূর্ব পাকিস্তানী সুযোগ পায়। আমি দেশরক্ষা বাজেটের অধিকতর বরাদ্দ পূর্ব বঙ্গের স্বার্থে নিয়োজিত করার দাবী জানাই।
যুক্তফ্রন্ট দল যদি পুর্ব বঙ্গের স্বার্থে আওয়ামী লীগের সহযোগিতা কামনা করে, তাহা হইলে আওয়ামী লীগ ইহাতে পূর্ণ সম্মতি দিবে। এমনকি যুক্তফ্রন্টের সহিত সহযোগিতা করিয়া montমন্ত্রীসভা গঠনও তাহাদের কোন আপত্তি নাই।
প্রাদেশিক সরকার রাজবন্দীদের মুক্তির ব্যাপারে অহেতুক বিলম্ব করিতেছেন।
Reference:
দৈনিক আজাদ, ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫
বঙ্গবন্ধুর ভাষণসমগ্র, সংগ্রামের নোটবুক