You dont have javascript enabled! Please enable it!
দুলালপুর তিন রাস্তার মােড়ে অ্যামবুশ
সাধারণ
১৯৭১ সালের নভেম্বর মাস। মুক্তিপিপাসু সগ্রামী জনগণ সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত। আর যারা অংশগ্রহণ করতে পারে নি, তারা শত্রুর গতিবিধির উপর নজর রাখা কিংবা অন্যান্য মানবিক সাহায্য প্রদান করে চলেছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে যার যেটুকু ক্ষমতা আছে, সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছে স্বাধীনতার সােনালি সূর্যের। প্রত্যাশায়। শিবপুর এলাকার মুক্তিযােদ্ধারা তখন ৩ নম্বর সেক্টরের অধীন কাজ করছেন। পাকিস্তানি বাহিনী মুক্তিযােদ্ধাদের সশস্ত্র মােকাবিলায় তটস্থ ও দিশেহারা ছিল। তারা তাদের রসদ সরবরাহ রাস্তা ঠিক রাখতে ব্যস্ত। এ রকম একটা যােগাযােগের রাস্তা ছিল নরসিংদী-শিবপুর-দুলালপুর-মনােহরদী।
উদ্দেশ্য
দুলালপুর তিন রাস্তার মােড়ে অ্যামবুশ করে শত্রুর ক্ষতিসাধন করা এবং শত্রুর মনােবলের উপর আঘাত হানা।
স্থান ও সময়
সময়টা ছিল ১৯৭১ সালের ২৭ নভেম্বর। শিবপুর থানার উত্তর-পশ্চিমে দুলালপুর ইউনিয়ন অবস্থিত। শিবপুর থানা সদর থেকে ৭ কিলােমিটার উত্তরপশ্চিমে গেলে দুলালপুর তিন রাস্তার মােড়।
পটভূমি/পরিস্থিতি
মুক্তিযােদ্ধাদের সশস্ত্র প্রতিরােধের মুখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দিশেহারা । ৩ নম্বর সেক্টরের নির্দেশে মুক্তিপিপাসু শিবপুরবাসী একের পর এক পাকিস্তানি বাহিনীর উপর আঘাত হেনে চলেছে। পাকিস্তানি সেনারা তাদের রসদ সরবরাহ রাস্তা রক্ষায় ব্যস্ত। আর মুক্তিযােদ্ধাদের হঠাৎ আক্রমণের ভয়ে তারা তটস্থ। তাদের চলাচলের রাস্তাগুলাে আর কোথাও নিরাপদ নয়। এমনই একটা রাস্তা ছিল নরসিংদী-শিবপুর-দুলালপুর-মনােহরদী। কোথাও সৈন্য প্রেরণ কিংবা রসদ। সরবরাহের জন্য তারা এ রাস্তা ব্যবহার করত। তখন এ রাস্তা ছিল সড়ক পথে যাতায়াতের একমাত্র উপায়। পাকিস্তানি সৈন্যরা এ রাস্তা ধরেই নরসিংদী, পুটিয়া, শিবপুর ও মনােহরদী। ক্যাম্পে যাতায়াত করত। মুক্তিযােদ্ধারা সংবাদ সংগ্রহের জন্য লােক নিয়ােগ। করেন। হঠাৎ এক দিন সংবাদবাহক জানায় যে, পাকিস্তানি বাহিনীর ১টি গাড়ি বহর নরসিংদী থেকে শিবপুর হয়ে মনােহরদী যাবে। শুরু হয় পরিকল্পনা। অ্যামবুশের স্থান হিসেবে নির্বাচিত হয় দুলালপুর তিন রাস্তার মােড়।
যুদ্ধের বর্ণনা
২৬-২৭ নভেম্বরের রাত। এক দল অকুতােভয় মুক্তিযােদ্ধা দুলালপুর তিন রাস্তার মােড়ে সমবেত হন। রাস্তার উভয় পাশে প্রায় ২০০ গজ জুড়ে স্থাপন করেন। মাইন ও বিভিন্ন প্রকার বিস্ফোরক। দুলালপুর গ্রামের সামনের অংশে স্থাপন করেন এলএমজি। ক্রমান্বয়ে কিছুদূর পর পর ৪৫জন মুক্তিযােদ্ধা অবস্থান গ্রহণ করেন। মুক্তিযােদ্ধা তাজুল ইসলামের ভাষ্য মতে জানা যায়, দুলালপুর তিন রাস্তার মােড়ের উভয় পাশে মুক্তিযােদ্ধাদের অবস্থান ছিল। এটা ছিল একটা বাক্স অ্যামবুশ। যেহেতু গ্রামের সম্মুখ অংশ ছিল পার্শ্ববর্তী অবস্থান থেকে একটু উঁচু, তাই সহজেই মুক্তিযােদ্ধারা এখানে বাক্স অ্যামবুশের পরিকল্পনা করেন। মাইন বিস্ফোরক দ্রব্যের সাথে সংযােগকারী তারটি ছিল ২০-২৫ গজ লম্বা। বৈদ্যুতিক সংযােগ (ব্যাটারির মাধ্যমে) দেওয়ার জন্য তারের মাথাটা নিয়ে অধিনায়ক হায়দার আকবর খান জুনাে ধানক্ষেতের মধ্যে অবস্থান নেন। ২৭ নভেম্বর ভােরের মধ্যে পরিকল্পনা অনুযায়ী ৪৫জন মুক্তিযােদ্ধা অবস্থান গ্রহণ করেন। অধিনায়ক ছিলেন হায়দার আকবর খান জুননা এবং সহ-অধিনায়ক ছিলেন তাজুল ইসলাম খান। সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে শক্রর ১টি জিপ ও ২টি ৩ টন লরি সেখানে উপস্থিত হয়। অ্যামবুশ অবস্থানে প্রবেশের সাথে সাথে মাইন ও অন্যান্য বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটানাে হয়। একই সাথে অ্যামবুশ অবস্থান থেকে শত্রুর উপর প্রচণ্ড গুলি বর্ষণ করা হয়। রাস্তার উভয় পাশে অবস্থানরত মুক্তিযােদ্ধারা পাকিস্তানি বাহিনীর উপর প্রচণ্ড গুলি বর্ষণ শুরু করেন। পাকিস্তানি সৈন্যরাও পালটা গুলি বর্ষণ করে। প্রায় ঘন্টা খানেক উভয় পক্ষেই গুলি বিনিময় হয়। রাস্তার উভয় পাশের বিস্ফোরকগুলাের সংযােগ তার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় বিস্ফোরণ ঘটানাে সম্ভব হয় নি। এ অ্যামবুশে পাকিস্তানি সৈন্য। কয়েকজন নিহত হয় এবং প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। ২টি গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে পাকিস্তানি সৈন্যরা শিবপুরের দিকে ফেরত চলে যেতে সক্ষম হয়।
ফলাফল
দুলালপুর তিন রাস্তার মােড়ের এ অ্যামবুশে মুক্তিযােদ্ধারা খুবই সুন্দর ও সুচারুভাবে অ্যামবুশ পরিচালনা করেন। এখানে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রভূত। ক্ষতিসাধন হয়। এটা নির্দ্বিধায় ছিল একটা সফল অভিযান।
শিক্ষণীয় বিষয়
ক. যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাব: বিস্ফোরকের সংযােগকারী বৈদ্যুতিক তারগুলাে পৃথক পৃথকভাবে স্থাপন করা হয় নি। ফলে একটা বিস্ফোরকের বিস্ফোরণের ফলে অন্য তারের সংযােগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে অন্য বিস্ফোরক ও মাইনের বিস্ফোরণ ঘটানাে সম্ভব হয় নি।
খ, সঠিক স্থান নির্বাচন ও সৈন্য মােতায়েন: সার্থক অ্যামবুশ অপারেশনের। জন্য সঠিক স্থান নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। অন্যথায় আকস্মিকতা অর্জন ব্যাহত হয়। তাত্ত্বিক জ্ঞানের লঙ্ঘন করে রাস্তার উভয় পাশে (ভূমির ধরন অনুযায়ী) দল-উপদল মােতায়েন করেও সার্থক অ্যামবুশ পরিচালনা করা সম্ভব, তা এ অপারেশনে প্রতিফলিত হয়েছে।
ঘােড়াশাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ রেইড
সাধারণ
পলাশ থানার শিল্প অঞ্চল ঘােড়াশাল ইউনিয়নে টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি অবস্থিত। এক্সচেঞ্জটির ঠিক ৫০০ মিটার উত্তরে ঘােড়াশাল রেল স্টেশন অবস্থিত। সেখানে পাকিস্তানি সেনাদের ১টি ক্যাম্প ছিল। এক্সচেঞ্জটির ঠিক দক্ষিণ পাশেই তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান, বর্তমানে বাংলাদেশ জুট মিল অবস্থিত এবং সেখানেও পাকিস্তানি সেনারা অবস্থান করত। রণকৌশলগত দিক থেকে টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভবনটির তেমন কোনাে গুরুত্ব ছিল না। তবে টেলিফোন এক্সচেঞ্জটির যথেষ্ট গুরুত্ব ছিল। পাকিস্তানি সেনারা নিজেদের মধ্যে যােগাযােগ রক্ষার জন্য এ এক্সচেঞ্জটি ব্যবহার করত এবং এজন্য জুট মিলে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনারা এর প্রহরায় নিয়ােজিত থাকত।
পরিকল্পনা
টেলিফোন এক্সচেঞ্জটির গুরুত্ব অনুধাবন করে নরসিংদীর দুর্ধর্ষ মুক্তিযােদ্ধা। নেভাল সিরাজ টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি ধবংস করার পরিকল্পনা করেন। মূলত এ রেইডে এক্সপ্লোসিভ বা বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার করে টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি ধ্বংস করে ত্বরিতগতিতে ফেরত আসাই ছিল মূল উদ্দেশ্য।
যুদ্ধের বর্ণনা
পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৭ নভেম্বর রাত ৯টায় কয়েকজন। মুক্তিযােদ্ধার ১টি দল মুক্তিযােদ্ধা এ কে আজাদের নেতৃত্বে লক্ষ্যবস্তুর কাছে পৌছায়। মুক্তিযােদ্ধা আজাদ নিজেই এক্সচেঞ্জের চারদিকে এক্সপ্লোসিভ লাগিয়ে দূর থেকে বৈদ্যুতিক তারের সাহায্যে এক্সপ্লোসিভের বিস্ফোরণ ঘটায়। ফলে এক্সচেঞ্জটি ধ্বংস হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তিযােদ্ধারা নিজ অবস্থানে ফেরত যান। সে মুহূর্তে এক্সচেঞ্জটিতে কোনাে প্রহরী ছিল কি না বা পাকিস্তানি সেনাদের পক্ষ থেকে প্রতিরােধ করা হয়েছিল কি না, তা জানা যায় নি। তবে ৫০০ মিটার উত্তরে রেল স্টেশনে অবস্থিত পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্প থেকে বা জুট মিলে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনাদের দ্বারা কোনােরূপ পালটা ব্যবস্থা। নেয়ার আগেই মুক্তিযােদ্ধারা তাদের লক্ষ্য অর্জন করে নিরাপদে স্থান ত্যাগ করতে সমর্থ হন। এ অপারেশনে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযােদ্ধাদের মধ্যে এ কে আজাদ চৌধুরী, মাে. নুরুল ইসলাম, মাে. ইব্রাহীম, আবদুল লতিফ ও হারিজ খানের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য।
ফলাফল
এ রেইডে মুক্তিবাহিনীর কোনাে ক্ষতি হয় নি। এক্সচেঞ্জটি ধ্বংসের ফলে ঘােড়াশালে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনাদের দলটি এবং তাদের অন্যান্য দলের সাথে টেলিফোন সংযােগ বিচ্ছিন্ন থাকে। এ ঘটনার ফলে পাকিস্তানি সেনাদের মনােবল আরও কমতে থাকে এবং তারা অনেকাংশে ক্যাম্পে বসেই সময় কাটাতে থাকে। ছােটো ছােটো দলে ক্যাম্প থেকে তারা সাধারণত বের হওয়া বন্ধ করে দেয়। পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের নির্যাতন থেকে সাধারণ জনতা অনেকটা মুক্তি পায়। দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলার অবনতি তথা স্বাধীনতা যুদ্ধের অগ্রগতির খবর বিশ্বের দরবারে পৌছাতে থাকে। এ রকম একটি ঘটনা তদানীন্তন পাকিস্তানি সেনাদের ভিত নাড়াতে পারত না। কিন্তু একই সাথে নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিবাহিনী দ্বারা পরিচালিত এ ধরনের ঘটনার সম্মিলিত ফলাফল ছিল ব্যাপক, যা ক্রমেই তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান সরকারকে নড়বড়ে করে দেয়। অন্যদিকে, মুক্তিযােদ্ধাদের মনােবল বাড়তে থাকে। সর্বোপরি স্বাধীনতা যুদ্ধ সহজ থেকে সহজতর হতে থাকে।
পুটিয়া বাজার পাকিস্তানি ক্যাম্পে আক্রমণ
সাধারণ
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু থেকেই শিবপুর গ্রামে মুক্তিযােদ্ধাদের । সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু হয়। প্রশিক্ষণ শেষে ভারতের প্রশিক্ষণ শিবির থেকে গ্রামের সব মুক্তিযােদ্ধা নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। শিবপুরে গড়ে তােলেন। পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরােধ। বার বার প্রতিরােধের মুখে পাকিস্তানি বাহিনী তটস্থ ও দিশেহারা হয়ে ওঠে। নরসিংদী-শিবপুর রাস্তায় বার। বার মুক্তিযােদ্ধাদের দ্বারা পাকিস্তানি বাহিনীকে নাজেহাল হতে হয়েছে। পরিশেষে পাকিস্তানি বাহিনী পুটিয়া বাজারে ক্যাম্প স্থাপন করে। এ ক্যাম্পের উদ্দেশ্য ছিল নরসিংদী-শিবপুর রাস্তা ও পুটিয়া ব্রিজের নিরাপত্তা বিধান করা। মুক্তিযােদ্ধাদের কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনায় এ ক্যাম্প অসুবিধার সৃষ্টি করে। তাই মুক্তিযােদ্ধারা এ ক্যাম্পে আক্রমণ করে ক্যাম্প ধ্বংস ও শত্রুর মনােবলের। উপর প্রচণ্ড আঘাত হানার সিদ্ধান্ত নেয়।
উদ্দেশ্য
পুটিয়া বাজারে পাকিস্তানি ক্যাপ ধ্বংস করে শত্রুর মনােবলের উপর প্রচণ্ড আঘাত হানা।
স্থান ও সময়সীমা
শিবপুর থানা থেকে ৮ কিলােমিটার দূরে পুটিয়া বাজার । নরসিংদী জেলা সদর। থেকে ৩ কিলােমিটার উত্তরে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে (কলাগাছিয়া নদী)। পুটিয়া বাজার অবস্থিত। ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে পরিকল্পনা। অনুযায়ী মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে এক দল মুক্তিযােদ্ধা ভােররাতে পুটিয়া। বাজার পাকিস্তানি ক্যাম্প আক্রমণ করে।
পটভূমি
নরসিংদী থেকে শিবপুরে নিয়মিত টহল পরিচালনার জন্য পাকিস্তানি বাহিনী পুটিয়া বাজার এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন করে। এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর। প্রাধান্য বিস্তার ও পুটিয়া ব্রিজ রক্ষা করা ছিল এই ক্যাম্পের প্রধান দায়িত্ব। এ ক্যাম্প স্থাপনের মাধ্যমে মুক্তিযােদ্ধাদের চলাচল ও অপারেশনাল কার্যক্রম। পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছিল। সে কারণে মুক্তিযােদ্ধা অধিনায়ক মান্নান খানের নির্দেশে এবং মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুটিয়া বাজার পাকিস্তানি ক্যাপে। আক্রমণ পরিচালনা করা হয়।
যুদ্ধের বর্ণনা
১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ। মুক্তিযােদ্ধা অধিনায়ক মান্নান খান, মিজানুর রহমানকে নির্দেশ দেন পুটিয়া বাজার পাকিস্তানি ক্যাম্প আক্রমণ করার জন্য। মিজানুর রহমান মুক্তিযােদ্ধাদের ১টি দল নিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। রাতের অন্ধকারে সবাই নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান নেন। ভোেররাতে আক্রমণ শুরু করা হয়। উভয় পক্ষই প্রচণ্ড গুলি বিনিময় করে। কিন্তু ক্যাম্পটি সুরক্ষিত থাকায় এবং মুক্তিযােদ্ধাদের সঠিক পরিকল্পনার অভাবে উল্লেখযােগ্য সফলতা অর্জন সম্ভব হয় নি।
ফলাফল
উভয় পক্ষেই বেশ কয়েকজন হতাহত হয়। পাকিস্তানি বাহিনীর মৃত্যুর সংখ্যা জানা যায় নি। তবে মুক্তিযােদ্ধাদের ২জন শহিদ হন। এ আক্রমণে মুক্তিযােদ্ধাদের পক্ষে উল্লেখযােগ্য কোনাে সফলতা অর্জন সম্ভব হয় নি।
শিক্ষণীয় বিষয়
ক. দুর্বল পরিকল্পনা: সফল আক্রমণ পরিচালনার জন্য সঠিক পরিকল্পনা অত্যাবশ্যকীয়। যুদ্ধে কাঙিক্ষত সফলতা অর্জনের জন্য অবশ্যই পূর্বপরিকল্পনা করতে হবে। পর্যবেক্ষণ: ভূমির আকৃতি, লক্ষ্যবস্তুতে শক্রর অবস্থান এবং লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসকরণের জন্য সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য পর্যবেক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম। পুটিয়া যুদ্ধে শক্রর পরিস্থিতি এবং সঠিক অবস্থান সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকায় মুক্তিবাহিনী কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে। ব্যর্থ হয়।

সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – তৃতীয় খন্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!