হরিরামপুর-আজিমনগর ক্যাম্প অভিযান
১৯৭১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আজিমনগর মুক্তিযােদ্ধা ক্যাম্পে পাকিস্তানি সেনারা বােট, লঞ্চ ও হেলিকপটারযােগে আক্রমণ করে। আজিমনগর গ্রামটি মানিকগঞ্জ জেলা সদর থেকে দক্ষিণে হরিরামপুর থানাধীন পদ্মা নদীর পাড়ে অবস্থিত। গ্রামটি প্রতি বছরই পদ্মার ভাঙনের কবলে পড়ে। মুক্তিযােদ্ধারা ছােটো ছােটো দলে বিভক্ত হয়ে শক্র প্রতিহত করতে শুরু করেন। যুদ্ধে অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ, মাহফুজ, জানু, মােক্তার খান, বরকত আলীসহ ২০০জনের মতাে মুক্তিযােদ্ধা অংশগ্রহণ করেন।
আজিমনগর বিমান আক্রমণ
মানিকগঞ্জ জেলা সদর থেকে সর্ব দক্ষিণে হরিরামপুর থানাধীন পদ্মা নদীর পাড়ে আজিমনগর গ্রাম অবস্থিত। ১৯৭১ সালের ২৪ সেপটেম্বর পাকিস্তানি সেনারা। লঞ্চ, গানবােট ও বিমানযােগে আজিমনগর আক্রমণ করে প্রচণ্ড গুলি শুরু করে। এবং বেশ কিছু ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। মুক্তিযােদ্ধারা এখানে প্রতিরােধ করার। চেষ্টা করেন কিন্তু পাকিস্তানি সেনাদের প্রচণ্ড আক্রমণের সামনে টিকতে না পেরে পিছু হটে যান।
সুতালড়ি লঞ্চ আক্রমণ
মানিকগঞ্জ জেলার সর্ব দক্ষিণে পদ্মার পাড়ে হরিরামপুর থানা। ১৯৭১ সালের। ২৪ সেপটেম্বর পাকিস্তানি সেনারা হরিণা থেকে লঞ্চে সুতালড়ির উদ্দেশ্যে রওনা। হলে সেখানকার মুক্তিযােদ্ধারা বীর বিক্রমে বাধা দেন এবং লঞ্চের ক্ষতি হলে। পাকিস্তানি সৈন্যরা ফিরে যেতে বাধ্য হয়। শত্রুর পুনঃ আক্রমণের আশঙ্কায় মুক্তিযােদ্ধারা পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন এবং সুতালড়ির তালুকদারবাড়ি, আদালতের বাড়ি ও সফি কাজীর বাড়িতে বাংকার স্থাপন করে অবস্থান নেন। পাকিস্তানি সৈন্যরা যাতে পুনরায় না আসতে পারে, সে জন্য গর্জন খাঁ নামক জনৈক ব্যক্তির বাড়ির মােটা তার দিয়ে নদীতে ফাদ পেতে রাখা হয়। কিন্তু। পাকিস্তানি সেনাদের জনৈক সহযােগী ফাদের তার কেটে দেয়।
এ ঘটনার পর শত্রু সেনারা এক দিন সকালবেলায় হঠাৎ করে প্রচণ্ড গােলা বর্ষণ করতে করতে সুতালড়িতে প্রবেশ করে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয় ও লােকজনকে গুলি করে হত্যা করে। মুক্তিযােদ্ধারা প্রতিরােধ করার জন্য পাকিস্তানি সেনাদের উপর আক্রমণ চালান। শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ। বেশ কিছু সময় যুদ্ধ হওয়ার পর পাকিস্তানি সেনাদের আধুনিক মারণাস্ত্রের আক্রমণের মুখে মুক্তিযােদ্ধারা মাত্র ৭-৮টি রাইফেল নিয়ে টিকতে না পেরে পিছু হটতে বাধ্য হন।
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – তৃতীয় খন্ড