You dont have javascript enabled! Please enable it! এশিয়ান হাইওয়েতে অ্যামবুশ - রৌহা বাজারে যুদ্ধ - সংগ্রামের নোটবুক

এশিয়ান হাইওয়েতে অ্যামবুশ

নভেম্বর মাসের শেষ দিকে মুক্তিযােদ্ধারা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর নেতৃত্বে সাভার থানা এলাকায় এশিয়ান হাইওয়েতে পাকিস্তানি সেনা ও পুলিশবাহী ১টি কনভয়ে অ্যামবুশ করেন। এতে ৩৫জন শত্রু নিহত হয় এবং মুক্তিবাহিনীর ১জন সামান্য আহত হলেও তেমন কোনাে ক্ষতি হয় নি। এ যুদ্ধে ৩টি হ্যান্ড গ্রেনেড এবং ২৫০ রাউন্ড গুলি ব্যবহৃত হয়।
রৌহা বাজারে যুদ্ধ
ঢাকা জেলার ধামরাই থানার সুয়াপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম রৌহা। ঢাকাআরিচা সড়ক থেকে ৪-৫ কিলােমিটার দক্ষিণে গ্রামটির অবস্থান। নভেম্বরের শেষ দিকে মুক্তিযােদ্ধা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর নেতৃত্বে এক দল মুক্তিযােদ্ধা ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তারা ঢাকা জেলার ধামরাই থানাধীন রৌহার একটি ছােট্ট বাজারে এসে উঠেন। সেখানে রাত্রি যাপনকালীন তখন। হঠাৎ পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণ শুরু হয়। মুক্তিযােদ্ধারা যে সেখানে এসেছে, এ কথা দালালেরা ইতােমধ্যে শত্রুর কাছে পৌছে দিয়েছিল। কিন্তু মুক্তিযােদ্ধারা সে আক্রমণ প্রতিহত করেন। সেদিনের ঐ পালটা আক্রমণে মুক্তিযােদ্ধা দলের আশরাফ নামের ১জন মুক্তিযােদ্ধা (বিডিআর সুবেদার) অত্যন্ত সাহসের সাথে আক্রমণ প্রতিহত করেন। সে যুদ্ধে ১৯জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। পাকিস্তানি বাহিনী নিরুপায় হয়ে সে স্থান ত্যাগ করে এবং ফিরে যাওয়ার পথে। গ্রামের নিরীহ জনগণের উপর অত্যাচার চালায়, তাদের ঘরবাড়ি লুট ও অগ্নিসংযােগ করে। তারপর রেীহা ছেড়ে বাচ্চুর নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধা দলটি সিঙ্গাইর থানা এলাকার কাছাকাছি একটি গ্রামে ক্যাম্প স্থাপন করে। এখানে তারা একটি অপারেশন পরিচালনা করে।
এ অপারেশনে ১৪জন মুক্তিযােদ্ধা শত্রুর খাদ্য বহনকারী ১টি দলকে আক্রমণ করেন এবং সব শত্রু সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিযােদ্ধারা সে স্থান থেকে নিরাপদ এলাকায় তাদের ক্যাম্প স্থানান্তর করেন। এ নতুন স্থানটির নাম ছিল শিমুলিয়া। এখানে এসে মুক্তিযােদ্ধারা প্রশিক্ষণ শিবির স্থাপন করেন। এভাবে মুক্তিযােদ্ধাদের আক্রমণের পরিধি ক্রমশ বিস্তার লাভ করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে ২৩জনের ১টি সংঘবদ্ধ দল নিয়ে ঢাকা। শহরে প্রবেশ করে। দলটি ঢাকা শহর এলাকায় বেশ কয়েকটি অপারেশন করে। এ দলটির মধ্যে ছিলেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, মুনীরউদ্দিন, ফেরদৌস, মাহবুব আলী, জাহেদ, শফিকুল ইসলাম স্বপন, জন, ফিরােজ, মােহাম্মদ আলী, ওমর, আরিফ, রমজান এবং আরও বেশ কয়েকজন নির্ভীক যােদ্ধা।

সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – তৃতীয় খন্ড