নবীনগরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নৌবহরে অ্যামবুশ
১৯৭১ সালের ২৪ সেপটেম্বর সকাল সাড়ে ৭টায় ঢাকা জেলার সাভার থানার নবীনগর ইউনিয়নের বিদ্যাকত গ্রামে অবস্থানরত মুক্তিযােদ্ধাদের ২টি গ্রুপ। বংশাই নদে চলাচলরত শত্রুপক্ষের ১৭টি দেশীয় নৌবহরে অ্যামবুশ করে। মুক্তিযােদ্ধাদের অ্যামবুশে পড়ে শত্রু সেনারা নৌকা থেকেই মুক্তিযােদ্ধাদের। উপর গুলি চালায়। এ যুদ্ধ প্রায় আধা ঘণ্টা চলে এবং পাকিস্তানি সেনাদের ৫টি নৌকা ডুবে যায়। এ যুদ্ধে শত্রু বাহিনীর প্রায় ৩৫জন মারা যায় এবং ৩০জন আহত হয়। অন্যদিকে, মুক্তিবাহিনীর পক্ষে কেউ হতাহত হয়নি। স্থানীয় জনগণ শত্রু সেনাদের এ ক্ষয়ক্ষতিতে এতই খুশি হয়েছিল যে, তারা মুক্তিযােদ্ধাদের। নিয়ে বিশাল ভােজের আয়ােজন করে। ঐ আয়ােজনে ৪জন রাজাকার আত্মসমর্পণ করে, যারা পরে মুক্তিবাহিনীর হয়ে কাজ করে।
দোহার থানায় পাকিস্তানি সৈন্যের উপর আক্রমণ
ঢাকা জেলার সর্ব-দক্ষিণে ধলেশ্বরী নদীর পশ্চিম পাড়ে দোহার থানা অবস্থিত। ১৯৭১ সালের ২৭ সেপটেম্বর বেলা প্রায় আড়াইটায় মােগল বাজার থেকে শুকনাে রসদ নিয়ে শত্রু সেনারা দোহার থানায় ক্যাম্পে ফিরে আসার সময় পাকিস্তানি সৈন্য বহরে মুক্তিবাহিনীর প্রায় ৩০জনের গেরিলা দল প্রচণ্ড আক্রমণ করে। এতে ১৪জন শত্রু সেনা নিহত এবং ৮জন মারাত্মক আহত হয়। অন্যদিকে, মুক্তিযােদ্ধাদের কেউ হতাহত হন নি। মুক্তিযােদ্ধারা শত্রুদের কাছ থেকে সমস্ত রসদ উদ্ধার করেন।
ডালিমপুরে পাকিস্তানি সেনাবহরে হামলা
১৯৭১ সালের ২৭ সেপটেম্বর বেলা ১টায় শত্রু বাহিনীর এক কোম্পানি সৈন্য। ঢাকা জেলা সদর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত নবাবগঞ্জ থানার অধীন ডালিমপুরে তাদের অগ্রবর্তী অবস্থানে যাচ্ছিল। ৫০জনের ১টি গেরিলা দল শত্রু দলের উপর প্রচণ্ড আক্রমণ করে এবং তাদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতিসহ অগ্রযাত্রা রােধ করে দেয়। অসামরিক সূত্র থেকে জানা যায় যে, ঐ সংঘর্ষে ১জন ক্যাপটেনসহ ৩৫জনের মতাে শত্রু সৈন্য মারা যায়। তারপর গেরিলারা নবাবগঞ্জ থানার শত্রু ক্যাম্পে আক্রমণ করে ১২জন সৈন্য হত্যা এবং ১টি এলএমজি, ৩টি স্টেনগান, ১২টি .৩০৩ রাইফেলসহ বিপুল পরিমাণ গােলাবারুদ উদ্ধার করেন।
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – তৃতীয় খন্ড