ভাটপেয়ারীর যুদ্ধ
ভূমিকা
বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলা শহর থেকে ৭ কিলােমিটার উত্তরে ভাটপেয়ারী অবস্থিত। ১৯৭১ সালে এ ভাটপেয়ারীর স্কুলে পাকিস্তানি সৈন্য এবং কিছু রাজাকার অবস্থান নিয়েছিল। পাকিস্তানি বাহিনী যখন তাদের পরাজয়কে ঠেকানাের আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছিল, তখন তার অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জ শহরকে রক্ষার জন্য তারা এ এলাকায় প্রতিরক্ষা অবস্থান গ্রহণ করে। মুক্তিযােদ্ধারা ইতােমধ্যেই যথেষ্ট প্রশিক্ষিত হয়ে যখন বিভিন্ন রণাঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ছিলেন, তখনই পাকিস্তানি বাহিনীর এ ক্যাম্পকে লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বেছে নেয় তাদের অস্ত্র ও গােলাবারুদ সংগ্রহের নিমিত্তে। তৎকালীন ছাত্রনেতা মােজাফফর হােসেনের নেতৃত্বে প্রায় ৬০জন মুক্তিযােদ্ধা মিলে এ স্থানে রেইড। করেন। এ যুদ্ধটি ছিল সিরাজগঞ্জের একটি অন্যতম সফল যুদ্ধ। পটভূমি ১৯৭১ সালে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময় পাকিস্তানি বাহিনী সিরাজগঞ্জ শহরকে মুক্তিবাহিনীর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য শহরের বাইরে ভাটপেয়ারীর দিকে প্রতিরক্ষা অবস্থান গ্রহণ করে। শত্রুপক্ষকে শহরের অদূরে বিচ্ছিন্ন। অবস্থানে পেয়ে মুক্তিবাহিনী তাদের ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পনা করে।
এ ছাড়া শত্রুপক্ষের অস্ত্র ও গােলাবারুদ মুক্তিবাহিনীকে ঐ ক্যাম্প দখল করার জন্য আকৃষ্ট করে। জায়গার বর্ণনা ও ভূমির রূপ সিরাজগঞ্জ শহর থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রায় ১০ কিলােমিটার দূরে ভাটপেয়ারী গ্রামটি অবস্থিত। যমুনা তীরে বেড়ি বাঁধ ঘেঁষে গ্রামটির অবস্থান। বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার মতােই এ গ্রামটির তিন দিক জুড়ে চাষাবাদযােগ্য জমি। শুধু পূর্ব দিকে যমুনা নদী। গ্রামের পায়ে চলা পথগুলাে পাশের গ্রামের সাথে যােগাযােগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। বেড়ি বাধের মাধ্যমে শহরের সাথে আছে সহজ যােগাযােগ। বর্তমানে যুদ্ধের জায়গাটি যমুনাগর্ভে বিলীন হয়েছে। যুদ্ধের সংগঠন। যুদ্ধের সংগঠন নিম্নরূপ: ক, পাকিস্তানি বাহিনী: ২৫ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ১টি প্লাটুন, ১ প্লাটুন মিলিশিয়া, অস্ত্র (৫টি জিএফ রাইফেল, ৩টি এলএমজি, ১৮টি এসএমজি, ৩৫টি চাইনিজ রাইফেল)। খ, মুক্তিবাহিনী: ৬৫জন, অস্ত্র (২টি এসএলআর, ৭৭টি এসএমসি, ৪৫টি ৩০৩ রাইফেল, ১টি ব্রিটিশ এলএমজি)। শত্রুপক্ষের অবস্থান। ভাটপেয়ারী স্কুলে পাকিস্তানি বাহিনী চতুর্মুখী প্রতিরক্ষা অবস্থান গ্রহণ করে। স্কুলে আসার রাস্তার পাশে তারা একটি এলএমজি পােস্ট স্থাপন করে। যুদ্ধের বর্ণনা রেইড করার আগে মুক্তিযােদ্ধারা স্থানটি রেকি করেন। মােজাফফর হােসেন স্কুলটি রেইড করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ও আমিনুল ইসলাম চৌধুরী পুরাে দলকে ৪ ভাগে ভাগ করেন। রাত ১২টায় মুক্তিযােদ্ধারা কাজীপুর এলাকা থেকে যাত্রা শুরু করেন এবং কার্যসম্পাদন সময় ছিল ১টা ৩০ মিনিট। বাজারের কাছে।
স্কুলের পাশে হাবিলদার আজিজসহ (নম্বর ৩৯৩৭৭৬৪, ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) আরও ১৮-২০জন অবস্থান নেন। স্কুলের সামনে শফিকুল ইসলাম ও তার দল অবস্থান নেন। বাঁধের পূর্ব পাশে ফিরােজ ভূঁইয়া দল নিয়ে শত্রুর টেলিফোন লাইন কেটে দেন। শত্রুর এলএমজি ছিল স্কুলের ছাদে। এটা ধ্বংস করার জন্য তােতা মিয়াসহ (মুক্তিযােদ্ধা নম্বর ৩১২০১০৩৬৯) ২জন মুক্তিযােদ্ধা বটগাছে ওঠে বসেন। শত্রুর তীব্র ফায়ারের মধ্যে হাবিলদার আজিজ তার দল নিয়ে অবস্থান পরিবর্তন করে টয়লেটের কাছে অবস্থান নেন। এলএমজি ম্যান শেখ আলাউদ্দিন স্কুলের পিছন দিক দিয়ে গিয়ে শত্রুর এলএমজি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন, কারণ তা জানালা দিয়ে অনবরত ফায়ার করছিল। তাঁর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্লক থাকার কারণে তিনি রুমের ভিতর গুলি করতে পারেন নি। কাজেই প্রতিটা পরিখার মধ্যে গ্রেনেড ছোড়া হয়। ইতােমধ্যে সব শক্র মারা যায়, শুধু একটা রুমের ভিতর কিছু শত্রু সৈন্য তখনও জীবিত ছিল। হঠাৎ ১জন মুক্তিযােদ্ধা রুমের ভিতর প্রবেশ করে তাদের অস্ত্র ফেলে দিয়ে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেন।
এ রেইডের মাধ্যমে মুক্তিবাহিনী অনেক অস্ত্র ও গােলাবারুদ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। এ রেইডে আমিনুল ইসলাম চৌধুরী ও মােতালেব আহত হন। কিন্তু প্রায় ৩২জন হানাদারকে এ যুদ্ধে হত্যা করা হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা যাবৎ যুদ্ধ চলে। মুক্তিযােদ্ধারা পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্প থেকে প্রায় ২৫টি চাইনিজ রাইফেল, এসএমজি ৫টি, ১টি এলএমজি, ২১টি হ্যান্ড গ্রেনেড এবং কিছু সিল বাক্সসহ অনেক গােলাবারুদ সংগ্রহ করেন। এ যুদ্ধে কোনাে মুক্তিযােদ্ধা শহিদ। হন নি। যুদ্ধটি ছিল সিরাজগঞ্জের অন্যতম সফল যুদ্ধ। সশস্ত্র বাহিনীর অবদান মােজাফফর হােসেন এ রেইডে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সৈনিক মাে, আ, আজিজ ও সৈনিক মাে. আলী (বকুল) এ রেইডে তাদের অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন এবং শত্রুপক্ষের যথেষ্ট ক্ষতিসাধন করতে সমর্থ হন। বিশ্লেষণ/বিজয়ের কারণ ও পর্যালােচনা ক, মুক্তিযােদ্ধাদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করার প্রেরণাই এ যুদ্ধে শক্রকে সমূলে ধ্বংস করার সাহস জোগায়। এ রেইডে সহজে পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাস্ত করে অনেক অস্ত্র ও গােলাবারুদ সগ্রহ করা সম্ভব হয়। ফলে মুক্তিযােদ্ধাদের মনােবল বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। খ, সবার সর্বাত্মক সহযােগিতা এ বিজয়কে সহজ থেকে সহজতর।
করেছিল। এ রেইড ছিল সিরাজগঞ্জ জেলার অন্যতম সফল যুদ্ধ। শিক্ষণীয় বিষয়
ক, যে-কোনাে বিজয়ের পিছনে থাকে কঠিন মনােবল, ধৈর্য ও সাহসিকতা।
খ. জনগণের সর্বাত্মক সহযােগিতা ছাড়া কোনাে যুদ্ধই সফলতা অর্জন করতে পারে না।
উপসংহার
মাতৃভূমির প্রতি প্রবল ভালােবাসা এবং তা রক্ষা করার প্রেরণাই মুক্তিযােদ্ধাদের জয়ের একমাত্র কারণ। সময় ও সুযােগের প্রতি সফল ব্যবহার এ যুদ্ধে লক্ষ্য করা যায়।
বড়ইতলীর যুদ্ধ
ভূমিকা
বড়ইতলী সিরাজগঞ্জের কাজীপুর থানার গান্ধাইল ইউনিয়নের একটি গ্রাম। উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিম, এ ২টি অংশে গ্রামটি বিভক্ত। মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা এ গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে (উত্তর-পশ্চিম দিকে ভাঙা কালভার্টের কাছে ৪জনের রাত্রিকালীন প্রহরী রেখে) রাতে বিশ্রাম নিতেন। পটভূমি রাজাকারদের সহযােগিতায় পাকিস্তানি বাহিনী মুক্তিযােদ্ধাদের ধ্বংস করার মানসিকতায় অতর্কিত হামলা চালায় এবং মুক্তিযােদ্ধারা আত্মরক্ষার তাগিদে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। জায়গার বর্ণনা ও ভূমির রূপ এ গ্রামের উত্তর দিকে একটি খাল ছিল, যা বর্তমানে প্রায় বিলীন হওয়ার পথে। গ্রামের সমস্ত বাড়িঘর গাছপালা পরিবেষ্টিত ছিল। যুদ্ধ বিন্যাস যুদ্ধের বিন্যাস ছিল নিমরূপ:
ক. শত্রুবাহিনী: আনুমানিক ৩ প্লাটুন সৈন্য (প্রায় ১০০জন), অস্ত্র: অজানা।
খ. মুক্তিবাহিনী: আনুমানিক ১ কোম্পানি (প্রায় ১৫০জন), অস্ত্র (১টি রিভলবার, ৯৫টি রাইফেল এবং অবশিষ্ট বন্দুক)। শত্রুপক্ষের অবস্থান। পাকিস্তানি বাহিনী গ্রামের দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তরে কিছু অংশ, এ তিন দিক থেকে আক্রমণ চালায় এবং মুক্তিবাহিনী বাড়িঘড় ছেড়ে খালের ওপারে অবস্থান নিয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে।
যুদ্ধের বর্ণনা
১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময় পাকিস্তানি বাহিনীর ১টি দল বড়ইতলী ঘিরে ফেলে এবং ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। মুক্তিযােদ্ধাদের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন তৎকালীন ছাত্রনেতা মােজাফফর হােসেন। এ দলে আনুমানিক শতাধিক মুক্তিযােদ্ধা ছিলেন। পরবর্তী সময় ভারত থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১টি দল (১০-১৫জন) সােহরাব হােসেনের নেতৃত্বে কাজীপুর। থেকে আগত, যারা এ গ্রামেই অবস্থান নিয়েছিলেন সংঘর্ষের সময় তারা এসে এ দলে যােগ দেন। মূল ঘটনার ৩ রাত পূর্বে তকালীন ইউপি চেয়ারম্যান ইমাম আলীর (শান্তি কমিটির সদস্য) বাড়িতে মুক্তিবাহিনী হানা দেয়। ঘটনার রাতে
তাকে না পেয়ে মুক্তিযােদ্ধারা তার বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়ে বড়ইতলী গ্রামে ফিরে। যান। সেখানে কে এম হাসান আলীর সহযােগিতায় মুক্তিযােদ্ধাদের থাকাখাওয়ার ব্যবস্থা হয়। তখন ছিল রমজান মাস। পাকিস্তানি বাহিনীর আনুমানিক ১০০জনের দল শেষ রাতের দিকে হঠাৎ আক্রমণ চালায়। প্রথমে তারা রাত্রিকালীন প্রহরীকে, অতঃপর গ্রামের সব ঘরবাড়িতে অবস্থানরত সাধারণ জনতা ও মুক্তিযােদ্ধাদের উপর আক্রমণ করে। অতর্কিত হামলায় মুক্তিযােদ্ধারা ঘরবাড়ি ছেড়ে বড়ইতলী গ্রামের উত্তরে খালের পাড়ে ও পূর্বে অবস্থান নেন এবং সেখান থেকে শত্রুর উপর পাল্টা হামলা চালাতে সক্ষম হন। গ্রামের সাধারণ জনতা জীবনের ভয়ে পালিয়ে যায়। আনুমানিক ১১টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে এবং ১০টার সময় মুক্তিযােদ্ধা রবিলাল (বাড়ি তারাকান্দি) নিজেদের দলের ক্রসফায়ারে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন।
উত্তর দিকে অবস্থানরত মুক্তিযােদ্ধারা গুলি করতে ব্যর্থ হওয়ায় পাকিস্তানি সৈন্যরা উত্তরপশ্চিমে অবস্থানরত ৪০-৫০জন মুক্তিযােদ্ধাকে ঘিরে ফেলতে সমর্থ হয়। তখন মুক্তিযােদ্ধারা ব্রাশ ফায়ার করেন এবং পূর্ব-দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে খামার পাড়া গ্রামে আশ্রয় নেন। ১১টার দিকে মুক্তিযােদ্ধারা পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণের বিরুদ্ধে টিকতে না পেরে গান্ধাইল চিলগাছা হয়ে প্রায় ৩ কিলােমিটার দক্ষিণে গজারিয়ায় আশ্রয় নেন। পরবর্তী সময় আরও ৫ কিলােমিটার দক্ষিণে কাজীপুরের বাসকানের চরে আশ্রয় নেন। এরপর পাকিস্তানি বাহিনী গ্রামের সমস্ত বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। এ যুদ্ধে আরও যে-সব মুক্তিযােদ্ধা অংশগ্রহণ করেন তারা হলেন: ১. শফিকুল ইসলাম শফি ২. আমিনুল ইসলাম ৩. ইসমাইল হােসেন ৪. হাবিলদার আজিজ (নম্বর ৩৯৩৭৭৬৪, ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) ৫. মাে, জুরান শেখ। ৬, হাসান আলী ৭. শাহ আলী। ৮. রহমত-ই-হুদা (নম্বর ৩৯৩৮৪০৯, ২৫ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট থেকে পলাতক) ৯. হাজী ইসহাক আলী প্রমুখ। সশস্ত্র বাহিনীর অবদান হাবিলদার আজিজ (নম্বর ৩৯৩৭৭৬৪, ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট), রহমত-ইহুদা (নম্বর ৩৯৩৮৪০৯, ২৫ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট থেকে চলে আসা) অংশগ্রহণ করে যথেষ্ট সহযােগিতা এবং এ যুদ্ধের গতিকে ত্বরান্বিত করেন।
বিশ্লেষণ/পর্যালােচনা
ক, মুক্তিযােদ্ধারা রাত্রিকালীন বিশ্রামের সময় যথেষ্ট পরিমাণে প্রহরীনিয়ােগ না করে বরং যথেষ্ট অসতর্কভাবে বিশ্রাম করেন। খ, মুক্তিযােদ্ধারা সংঘবদ্ধভাবে অবস্থান না করে আলাদা আলাদাভাবে অবস্থান করছিলেন। ফলে সমন্বয় সাধন করে তারা পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ করতে পারেন নি।
শিক্ষণীয় বিষয়
ক. যুদ্ধক্ষেত্রে সর্বদা শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করতে প্রস্তুত থাকা।
খ. সর্বদা সব দলের এবং একই দলের অন্য সবার সাথে সমন্বয় সাধন করা।
উপসংহার
যুদ্ধক্ষেত্রে প্রহরা থাকা অত্যন্ত জরুরি। এ ছাড়া সংঘবদ্ধভাবে অবস্থান করা। যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মুক্তিযােদ্ধাদের এ ২টি বিষয়ের স্বল্পতা থাকায় তারা এ যুদ্ধে জয়লাভ করতে পারে নি। যুদ্ধক্ষেত্রে সতর্কতার পাশাপাশি প্রহরার ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি।
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান -ষষ্ঠ খন্ড