You dont have javascript enabled! Please enable it!
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন, ২০০২
( ২০০২ সনের ৮ নং আইন )
[৭ এপ্রিল, ২০০২]
      জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল প্রতিষ্ঠাকল্পে প্রণীত আইন৷
যেহেতু জাতীয় জীবনে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সমুন্নত রাখা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতকরণকল্পে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল গঠন এবং তত্সম্পর্কিত আনুষংগিক বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক
সংক্ষিপ্ত শিরোনামা প্রবর্তন ১৷ (১) এই আইন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন, ২০০২ নামে অভিহিত হইবে৷

(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে৷

সংজ্ঞা ২৷ বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-

(ক) �উপদেষ্টা পরিষদ� অর্থ ধারা ৫ এর অধীন গঠিত উপদেষ্টা পরিষদ;

(খ) �কাউন্সিল� অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল;

(গ) �চেয়ারম্যান� অর্থ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান;

(ঘ) �নিবন্ধীকরণ� অর্থ এই আইনের অধীন নিবন্ধীকরণ;

(ঙ) �প্রবিধান� অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;

(চ) �প্রধান উপদেষ্টা� অর্থ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী;

(ছ) �ব্যক্তি� অর্থে সংঘ, সমিতি, সংগঠন এবং কোম্পানীও অন্তর্ভুক্ত;

(জ) �বিধি� অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(ঝ) �মহাপরিচালক� অর্থ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক;

(ঞ) �মুক্তিযোদ্ধা পরিবার� অর্থ কোন মুক্তিযোদ্ধার স্বামী, স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, পিতা এবং মাতা;

(ট) �সদস্য� অর্থ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের কোন সদস্য৷

দ্বিতীয় অধ্যায়
কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠা কার্যাবলী
কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা ৩৷ (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল নামে একটি কাউন্সিল থাকিবে৷

(২) কাউন্সিল একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং কাউন্সিল ইহার নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে৷

প্রধান কার্যালয় ৪৷ কাউন্সিলের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে এবং ইহা, প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের অন্য যে কোন স্থানে শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে৷
উপদেষ্টা পরিষদ ৫৷ (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে নিম্নবর্ণিত উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে কাউন্সিলের একটি উপদেষ্টা পরিষদ থাকিবে, যথা:-

(ক) প্রধানমন্ত্রী, যিনি কাউন্সিলের প্রধান উপদেষ্টা হইবেন;

(খ) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী;

(গ) মুক্তিযুদ্ধের ব্রিগেড কমান্ডার, সেক্টর কমান্ডার, সাব-সেক্টর কমান্ডার অথবা উল্লিখিত কমান্ডসমূহের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কর্মকাণ্ডের সহিত সংশ্লিষ্টদের মধ্য হইতে পাঁচজন ব্যক্তি, যাঁহারা প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক মনোনীত হইবেন৷

(২) এই ধারার অধীন মনোনীত উপদেষ্টাগণ প্রধান উপদেষ্টার সন্তোষানুযায়ী সময়সীমা পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন৷

(৩) প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে উপদেষ্টা পরিষদের বত্সরে অন্ততঃ একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে এবং উক্ত সভায় কাউন্সিলের সার্বিক কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হইবে৷

(৪) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবে৷

কাউন্সিলের গঠন ৬৷ (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে নিম্নবর্ণিত নয় সদস্য সমন্বয়ে কাউন্সিল গঠিত হইবে, যথা:-

(ক) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী, যিনি ইহার চেয়ারম্যানও হইবেন;

(খ) মুক্তিযুদ্ধের ব্রিগেড কমান্ডার, সেক্টর কমান্ডার, সাব-সেক্টর কমান্ডার অথবা উল্লিখিত কমান্ডসমূহের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কর্মকাণ্ডের সহিত সংশ্লিষ্টদের মধ্য হইতে আটজন ব্যক্তি, যাঁহারা প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক মনোনীত হইবেন৷

(২) এই ধারার অধীন মনোনীত সদস্যগণ উক্তরূপ মনোনয়নের তারিখ হইতে তিন বত্সর মেয়াদের জন্য স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, প্রধান উপদেষ্টা উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বেই কাউন্সিলের যে কোন সদস্যকে তাঁহার পদ হইতে অপসারণ করিতে পারিবেন৷

(৩) প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্র যোগে যে কোন সদস্য স্বীয় পদত্যাগ করিতে পারিবেন৷

(৪) চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে তিনি তাঁহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে কিংবা চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক মনোনীত কোন সদস্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন৷

(৫) মহাপরিচালক কাউন্সিলের সচিব হইবেন৷

কাউন্সিলের কার্যাবলী ৭৷ কাউন্সিলের কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-

(ক) মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়সহ জেলা, থানা, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচী গ্রহণ;

(খ) মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণসহ সর্বোতভাবে পুনর্বাসন;

(গ) রাষ্ট্রীয় ও সমাজ জীবনের সকল স্তরে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সমুন্নত রাখা ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে সকল শ্রেণীর শিশু-কিশোর, যুবক, ছাত্র, শ্রমিক, শিক্ষক, কৃষক, মহিলা, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সকল শ্রেণীর পেশাজীবিদের সমন্বয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে অংগ সংগঠন গঠন, নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান;

(ঘ) মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠন, সংঘ, সমিতি, যে নামে অভিহিত হউক না কেন, পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন;

(ঙ) মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনের নিবন্ধীকরণ;

(চ) মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনের নিবন্ধীকরণ ফিস, নবায়ন ফিস ইত্যাদি নির্ধারণ;

(ছ) মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও স্মৃতি রক্ষার্থে গৃহীত প্রকল্প পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান এবং ভবিষ্যত্ প্রকল্প গ্রহণ;

(জ) সরকারী ও বেসরকারী ব্যক্তি, সংস্থা ও সংগঠন কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্মৃতি, আদর্শ সংক্রান্ত সৌধ, ভাস্কর্য, যাদুঘর ইত্যাদি নির্মাণের অনুমতি প্রদান, রক্ষণাবেক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান;

(ঝ) প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন, সনদপত্র ও প্রত্যয়নপত্র প্রদানে এবং জাল ও ভুয়া সনদপত্র ও প্রত্যায়নপত্র বাতিলের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ;

(ঞ) মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় সম্পর্কিত কার্যাবলী সম্পাদন৷

কাউন্সিলের সভা ৮৷ (১) এই ধারায় অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, কাউন্সিলের সভার কার্যপদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷

(২) চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে সভা অনুষ্ঠিত হইবে এবং চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে মহাপরিচালক এইরূপ সভা আহ্বান করিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, প্রতি দুই মাসে কাউন্সিলের অন্ততঃ একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে৷

(৩) চেয়ারম্যানসহ তিন জন সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম গঠিত হইবে৷

(৪) উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং ভোটে সমতার ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের দ্বিতীয় ও নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে৷

(৫) শুধুমাত্র কোন সদস্যপদে শূন্যতা বা কাউন্সিল গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে কাউন্সিলের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তত্সম্পর্কে কোন প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না৷

(৬) কাউন্সিলের প্রতিটি সভার কার্যবিবরণী ও গৃহীত সিদ্ধান্তের অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং উক্ত সিদ্ধান্ত এই আইনের পরিপন্থী হইলে উহা বাতিল বা সংশোধন করিবার জন্য বা কার্যকর না করিবার জন্য সরকার সময় সময় নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে এবং তদনুসারে কাউন্সিল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে৷

কাউন্সিলের নির্বাহী ক্ষমতা ৯৷ (১) এই আইন বা বিধিতে ভিন্নরূপ বিধান না থাকিলে কাউন্সিলের নির্বাহী ক্ষমতা চেয়ারম্যানের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধি ও প্রবিধান অনুযায়ী চেয়ারম্যান কর্তৃক অথবা তাঁহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কাউন্সিলের অন্য কোন সদস্য বা কর্মকর্তা কর্তৃক প্রযুক্ত হইবে৷

(২) সরকার, কাউন্সিলের যে কোন রেকর্ড, নথি এবং অন্যান্য কাগজাদি তলব ও অবলোকন করিতে পারিবে এবং কাউন্সিলের কার্যাবলী সম্পাদন, পরিচালনা এবং ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে৷

(৩) কাউন্সিল, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, উহার যে কোন স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় বা অন্য কোন ভাবে হস্তান্তর করিতে পারিবে৷

(৪) কাউন্সিলের নির্বাহী ক্ষমতা বা অন্য কোন কার্য কাউন্সিলের নামে গৃহীত হইয়াছে বলিয়া প্রকাশ করা হইবে৷

কমিটি ১০৷ কাউন্সিল উহার কাজে সহায়তার জন্য, প্রয়োজনবোধে, এক বা একাধিক কমিটি গঠন করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ কমিটির সদস্য সংখ্যা, দায়িত্ব এবং কার্যধারা নির্ধারণ করিতে পারিবে৷
তৃতীয় অধ্যায়
মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নিবন্ধীকরণ, ইত্যাদি
মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নিবন্ধীকরণ, ইত্যাদি ১১৷ (১) মহাপরিচালক, এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, নিবন্ধক হইবেন৷

(২) কোন ব্যক্তি এই আইন এবং তদধীন প্রণীত বিধি বিধান অনুসরণে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট কোন সংগঠন প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনা করিতে পারিবেন৷

(৩) কোন ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সংগঠন প্রতিষ্ঠা করিতে আগ্রহী হইলে তিনি নিবন্ধনের জন্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধকের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন৷

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির ষাট দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অনুসন্ধানের পর নিবন্ধক যদি-

(ক) এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, আবেদনকারী মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার জন্য প্রযোজ্য নীতিমালার শর্তাবলী পূরণ করিতে সক্ষম, তাহা হইলে তিনি উক্ত সময়ের মধ্যে আবেদনটি মঞ্জুর করিবেন; এবং

(খ) এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, আবেদনকারী মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার জন্য প্রযোজ্য নীতিমালার শর্তাবলী পূরণ করিতে সক্ষম নহেন তাহা হইলে কারণ বিবৃত করিয়া উক্ত আবেদন বাতিল করিবেন এবং আবেদনকারীকে উহা অবহিত করিবেন৷

(৫) উপ-ধারা (৪) (ক) এর অধীন কোন আবেদন মঞ্জুর করা হইলে নিবন্ধক পরবর্তী পনের দিনের মধ্যে নির্ধারিত ফিস আদায় করিয়া আবেদনকারীকে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সংগঠন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয় অনুমতি প্রদান করিবেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে উহার নিবন্ধন সম্পন্ন করিবেন৷

(৬) নিবন্ধিত মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সংগঠন উহার প্রতিটি সভার কার্যবিবরণী ও গৃহীত সিদ্ধান্তের অনুলিপি সভা অনুষ্ঠিত হইবার সাত দিনের মধ্যে নিবন্ধকের নিকট প্রেরণ করিবে এবং উক্ত সিদ্ধান্ত এই আইন বা প্রণীত নীতিমালার পরিপন্থী হইলে উক্ত সিদ্ধান্ত বাতিল বা সংশোধন করিবার জন্য বা কার্যকর না করিবার জন্য নিবন্ধক সময় সময় নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবেন এবং তদ্‌নুসারে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সংগঠন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে৷

(৭) নিবন্ধিত মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সংগঠন প্রতি বত্সর ৩০শে জুনের মধ্যে পূর্ববর্তী বত্সরে সম্পাদিত কার্যাবলী, আয়-ব্যয়, ইত্যাদির একটি প্রতিবেদন নিবন্ধকের নিকট পেশ করিবে৷

(৮) মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সংগঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে কাউন্সিল কর্তৃক সময় সময় প্রণীত নীতিমালা অনুসরণীয় হইবে৷

(৯) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সময় সময় নিবন্ধীকরণ ফিস ও নবায়ন ফিস নির্ধারণ করিতে পারিবে৷

মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট বিদ্যমান সংগঠনের নিবন্ধন সংক্রান্ত বিধান ১২৷ (১) কোন সংগঠনের নিবন্ধন সংক্রান্ত অন্যান্য আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহিত পূর্বে বিদ্যমান মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সংগঠনকে এই আইন কার্যকর হইবার নব্বই দিবসের মধ্যে ধারা ১১ এ নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হইতে হইবে৷

(২) মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট কোন সংগঠন উপ-ধারা (১) এর অধীন নিবন্ধিত না হইলে নিবন্ধক উহার সকল কার্যক্রম স্থগিত করিতে পারিবে৷

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন কোন সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত করা হইলে উক্ত সংগঠনের সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির ব্যবস্থাপনাসহ নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব কাউন্সিলের উপর বর্তাইবে এবং কাউন্সিল তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করিয়া উক্ত সংগঠনের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির ব্যবস্থাপনাসহ নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করিতে পারিবে৷

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন নিয়োগপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক দায়িত্ব গ্রহণের নব্বই দিনের মধ্যে সাধারণ সদস্যদের মধ্য হইতে তিন জন সদস্য সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করিবেন এবং উক্তরূপ কমিটি গঠনের নব্বই দিনের মধ্যে স্থগিত সংগঠনের সদস্যদের একটি সাধারণ সভা আহ্বান করিয়া একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করিবেন এবং উক্ত কমিটির সহায়তায় নির্ধারিত পদ্ধতিতে স্থগিত সংগঠনের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করিবেন৷

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হইবার পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সংগঠনের দায়িত্বভার পূর্ণাঙ্গ কমিটির নিকট হস্তান্তর করিবেন৷

পরিদর্শন, ইত্যাদি ক্ষমতা ১৩৷ (১) এই আইন, তদধীন প্রণীত বিধি বা নীতিমালা বা প্রদত্ত কোন নির্দেশ যথাযথভাবে পালিত হয় কি না তাহা নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে মহাপরিচালক বা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা সাত দিনের নোটিশ প্রদান করিয়া কোন নিবন্ধিত মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সংগঠনের স্থান, কার্যালয়, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ ইত্যাদি সরেজমিনে পরিদর্শন ও তদন্ত করিতে পারিবেন এবং তাহার বিবেচনায় আনুষংগিক অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করিয়া সাত দিনের মধ্যে কাউন্সিলের নিকট একটি প্রতিবেদন দাখিল করিবেন৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত প্রতিবেদন পর্যালোচনাক্রমে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট কোন সংগঠনের কার্যক্রম সন্তোষজনক প্রতীয়মান না হইলে বা উহার কার্যক্রম সংগঠন পরিচালনার জন্য ধারা ১১-এর উপ-ধারা (৮) এর অধীন কাউন্সিল কর্তৃক সময় সময় প্রণীত নীতিমালার পরিপন্থী হইলে কাউন্সিল উক্ত সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিল করিতে পারিবে এবং উক্ত সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করিবার জন্য এডহক কমিটি গঠন করিতে পারিবে৷

আপীল ১৪৷ (১) কোন ব্যক্তি ধারা ১২ এর উপ-ধারা (২) এ প্রদত্ত স্থগিতাদেশ এবং ধারা ১৩ এর উপ-ধারা (২) এ প্রদত্ত বাতিল আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ হইলে তিনি উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে উক্তরূপ আদেশ প্রদানের পরবর্তী ত্রিশ দিনের মধ্যে সরকারের নিকট আপীল করিতে পারিবেন৷

(২) উপ-ধারা (১) এ দায়েরকৃত আপীল শুনানীর ত্রিশ দিনের মধ্যে সরকার সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে এবং সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে৷

চতুর্থ অধ্যায়
কাউন্সিলের কমর্চারী
মহাপরিচালক ১৫৷ (১) কাউন্সিলের একজন মহাপরিচালক থাকিবেন৷

(২) মহাপরিচালক সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাঁহার চাকুরীর শর্তাদি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে৷

(৩) মহাপরিচালকের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে মহাপরিচালক তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে শূন্য পদে নবনিযুক্ত মহাপরিচালক কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা মহাপরিচালক পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক মনোনীত কোন ব্যক্তি মহাপরিচালকরূপে দায়িত্ব পালন করিবেন৷

(৪) মহাপরিচালক কাউন্সিলের সার্বক্ষণিক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন এবং এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, কাউন্সিল কর্তৃক নির্দেশিত কার্যাবলী সম্পাদন, ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব সম্পাদন করিবেন৷

কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ ১৬৷ কাউন্সিল উহার দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাঁহাদের চাকুরীর শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷
কর্মচারী নিয়োগ সম্পর্কিত অস্থায়ী বিধান ১৭৷ ধারা ১৫ ও ১৬ এর অধীন-

(ক) মহাপরিচালক নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত, সরকার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব পর্যায়ের যে কোন কর্মকর্তাকে তাঁহার দায়িত্বের অতিরিক্ত কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হিসাবে নিয়োগ করিতে পারিবে;

(খ) অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত, সরকার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য হইতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে তাঁহাদের দায়িত্বের অতিরিক্ত সমপর্যায়ের পদে পদায়ন করিতে পারিবে৷

পঞ্চম অধ্যায়
কাউন্সিলের তহবিল, বাজেট, হিসাব রক্ষণ ইত্যাদি
কাউন্সিলের তহবিল ১৮৷ (১) কাউন্সিলের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা:-

(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

(খ) কাউন্সিল কর্তৃক গৃহীত ঋণ;

(গ) কাউন্সিলের নিজস্ব আয়;

(ঘ) কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত অনুদান;

(ঙ) কোন বিদেশী সরকার, সংস্থা বা কোন আন্তর্জাতিক সংস্থা হইতে প্রাপ্ত অনুদান;

(চ) অন্য কোন উত্স হইতে প্রাপ্ত অর্থ৷

(২) তহবিলে জমাকৃত অর্থ কোন তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখা হইবে এবং প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত অর্থ উঠানো যাইবে৷

(৩) এই তহবিল হইতে কাউন্সিলের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করা হইবে৷

(৪) কাউন্সিলের তহবিল বা উহার অংশবিশেষ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত খাতে বিনিয়োগ করা যাইবে৷

(৫) সংশ্লিষ্ট অর্থ বত্সরে কাউন্সিলের ব্যয় নির্বাহের পর কাউন্সিলের তহবিলে উদ্ধৃত্ত থাকিলে, সরকারের নির্দেশ অনুসারে উহার সম্পূর্ণ বা অংশ বিশেষ সরকারের কোষাগারে জমা করিতে হইবে৷

বাজেট ১৯৷ (১) মহাপরিচালক প্রতি বত্সর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ বত্সরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবেন এবং উহাতে উক্ত অর্থ বত্সরে সরকারের নিকট হইতে কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন উহার উল্লেখ থাকিবে৷

(২) উক্তরূপ বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে এবং প্রস্তাবিত বাজেটে কাউন্সিলের অনুমোদন থাকিতে হইবে৷

হিসাব রক্ষণ নিরীক্ষা ২০৷ (১) কাউন্সিল যথাযথভাবে উহার হিসাব রক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে৷

(২) মহাহিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহাহিসাব-নিরীক্ষক নামে অভিহিত, প্রতি বত্সর কাউন্সিলের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও কাউন্সিলের নিকট প্রেরণ করিবেন৷

(৩) উপ-ধারা (২) এর বিধান মোতাবেক হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহাহিসাব-নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কাউন্সিলের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভাণ্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ যে কোন সদস্য, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন৷

ষষ্ঠ অধ্যায়
বিবিধ
ঋণ গ্রহণ ২১৷ কাউন্সিল, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে৷
চুক্তি ২২৷ কাউন্সিল উহার কার্যাবলী সম্পাদনের প্রয়োজনে চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, কোন বিদেশী সরকার বা আন্তর্জাতিক সংস্থার সহিত চুক্তির ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে৷

কোম্পানী গঠন ২৩৷ কাউন্সিল উহার কার্যাবলী সম্পাদনের প্রয়োজনে প্রচলিত আইনের অধীনে এককভাবে অথবা অন্য কোন ব্যক্তির সহিত যৌথ উদ্যোগে কোন কোম্পানী গঠন করিতে পারিবে৷
প্রতিবেদন ২৪৷ (১) প্রতি আর্থিক বত্সর শেষ হইবার সঙ্গে সঙ্গে কাউন্সিল উক্ত বত্সরে সম্পাদিত কার্যাবলীর বিবরণ সম্বলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে৷

(২) সরকার প্রয়োজনমত কাউন্সিলের নিকট হইতে যে কোন সময় উহার যে কোন কাজের প্রতিবেদন বা বিবরণী আহ্বান করিতে পারিবে এবং কাউন্সিল উহা সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে৷

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা ২৫৷ সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে৷
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা ২৬৷ কাউন্সিল, এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে এবং সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধির সহিত অসংগতিপূর্ণ নহে এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে৷

 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!