ডেইলি টেলিগ্রাফ, ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১
সম্পাদকীয়
বর্তমান বাংলাদেশ
ভারতীয় বাহিনীর পূর্ব পাকিস্তান দখলের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামটি পরিণতি লাভ করে। এবং একটি যুদ্ধবিরতির জন্য ঢাকা ও নয়াদিল্লির সামরিক কমান্ডারদের মধ্যে একটি সংলাপের মাধ্যমে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের অন্ততপক্ষে প্রথম পর্যায় সমাপ্ত হয়। আশা করা যায় যে এখানেই যুদ্ধ শেষ। এর জন্য দুইটি জিনিস সর্বোপরি প্রয়োজন হবে: পাকিস্তান রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার সুযোগ গ্রহণের কোনও অভিযোগ ভারত কর্তৃক প্রত্যাখ্যান। পশ্চিমাঞ্চলে পূর্বের মতো রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া ভারত অধ্যুষিত কাশ্মীর এবং পাঞ্জাবের মধ্যে কোন দরকষাকষি করবেন না।
এইসব ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারত পাকিস্তানকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার চেষ্টা করতে পারে – এটা অসম্ভব দেখায়। ভারত সরকারের বাইরে অ ভেতরে নিশ্চিতভাবে এমন লোক আছে যারা ভারত উপমহাদেশের বিভক্তি চায় না। তবে মিসেস গান্ধি যে তাদের ইচ্ছা পুড়ন করবেন এমন সম্ভবনা ক্ষীণ। যদি তিনি সামান্যতম ইচ্ছা পোষণ করেন সেক্ষেত্রে এই বিষয়ে ভারতের অবস্থান পরিবর্তিত হয়ে যাবে। এটা হিথেরর চাইতে আরও জোরালোভাবে বিশ্বশক্তিগুলোকে জড়িত করবে। এবং এতে করে ভারত তার নিজের জন্য আরও বিপদ ডেকে আনবে।
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সমস্যাগুলি তিক্ত। সৈনিক হিসেবে তার ধারণা হতে পারে পূর্বের সৈন্যদের নিরাপদে পশ্চিমে আনার নিশ্চয়তার জন্য সে পশ্চিমে সৈন্য বাড়াতে পারেন। এটা আশা করা হয় যে তিনি বুদ্ধিমান সংযত পদক্ষেপ নেবেন।
যাইহোক, বাংলায় এখন চূড়ান্ত পরিণতি আসতে যাচ্ছে। নতুন রাষ্ট্র ভারতের নীতির সাথে থাকছে – শুধু ভারত নয় – গোটা সমস্যার সাথেই থাকছে। শুধুমাত্র ভারতীয় সেনাবাহিনী আইন ও শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করতে পারে, সাম্প্রদায়িক গণহত্যার বিপদ থামাতে পারে এবং একটি নতুন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোর পটভূমি প্রদান করতে পারে। রাশিয়া, চীন এবং আমেরিকা সব ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্ট হবে। ব্রিটেন, ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক বজায় রেখেছে। বাংলাদেশের জন্মের সময় লন্ডন থেকে প্রাপ্ত সাহায্য, যদি নিশর্তে প্রস্তাবিত হয়, তাহলে স্বাগত জানানো হতে পারে।