You dont have javascript enabled! Please enable it! খালিশপুরের যুদ্ধ - সংগ্রামের নোটবুক
খালিশপুরের যুদ্ধ
জীবননগর পতনের পর পাকিস্তানি বাহিনী খালিশপুরে শক্ত প্রতিরক্ষা অবস্থান গড়ে তােলে খালিশপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর ১৪০-১৫০জনের ১টি কোম্পানি ভৈরব নদীর পূর্ব পাড়ের প্রতিরক্ষা অবস্থান নেয়। যৌথবাহিনী জীবননগর আক্রমণের পর সর্বশেষ শত্রু ঘাটি খালিশপুর আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয়। যেহেতু পশ্চিম দিক হতে আক্রমণ করলে ভৈরব নদী পার হতে হবে এবং এটা হবে। সম্মুখ আক্রমণ, তাই যৌথবাহিনী উত্তর দিক হতে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর যৌথবাহিনী ভৈরব নদী পার হয়ে খালিশপুরের উত্তর দিকে অবস্থান নেয় এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী উত্তর দিক হতে আক্রমণ পরিচালনা করে। হীন মনােবল শত্রু সৈন্যরা যৌথবাহিনীর বীরত্বপূর্ণ আক্রমণে টিকে থাকতে না পেরে কালিগঞ্জ ও ঝিনাইদহের দিকে পালিয়ে যায়। শিক্ষণীয় বিষয় ক, দৃঢ় মনােবল: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযােদ্ধারা সবাই দেশপ্রেম ও দৃঢ় মনােবলে বলীয়ান ছিলেন নিজের দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য তাঁরা জীবন দিতে কুষ্ঠিত ছিলেন না, যা ছিল পাকিস্তানি সেনাদের মাঝে সম্পূর্ণরূপে অনুপস্থিত। সঠিক পরিকল্পনা: এ অঞ্চলের প্রতিটি যুদ্ধের ফলাফলের পিছনে সুস্পষ্ট পরিকল্পনার প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায়।
যৌথবাহিনীর প্রচলিত যুদ্ধ ও মুক্তিবাহিনীর অপ্রচলিত যুদ্ধের সমন্বয়সাধনই যুদ্ধজয়ের পিছনে বিরাট ভূমিকা রাখে। জন সমর্থন: মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের সাধারণ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিল, যা মুক্তিযােদ্ধাদের যে-কোনাে অপারেশনের জন্য অত্যন্ত সহায়ক ছিল। শক্র পর্যবেক্ষণ এবং যেকোনাে অপারেশনে রেকির জন্য জনগণের সহায়তা অত্যন্ত মূল্যবান। সঠিক তথ্যসংগ্রহ: স্থানীয় জনগণের সহায়তায় মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি। সেনাদের অবস্থান ও জনবল সম্বন্ধে প্রকৃত তথ্যসংগ্রহ করতে সমর্থ হয়, যা যুদ্ধজয়ে বড়াে ভূমিকা রাখে। উপসংহার। জীবননগরের যুদ্ধ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের একটি মাইল ফলক। এখানে পাকিস্তানি বাহিনী অত্যন্ত শক্তিশালী প্রতিরােধ গড়ে তুললেও মুক্তিবাহিনীর বীর যােদ্ধারা একে একে সব প্রতিরােধ ভেঙে ফেলে এবং শত্রুকে পর্যুদস্ত করে।

সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – সপ্তম খন্ড