You dont have javascript enabled! Please enable it! মুজিবনগরের যুদ্ধ - সংগ্রামের নোটবুক
মুজিবনগরের যুদ্ধ
ভূমিকা বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার মতােই মেহেরপুর অঞ্চলে গড়ে উঠে মুক্তিবাহিনীর সশস্ত্র সংগ্রাম। পরবর্তী সময় মুক্তিবাহিনী মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের সাথে খণ্ড খণ্ড গেরিলাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। সেগুলাের মধ্যে মুজিবনগর অন্যতম। ভৌগােলিক অবস্থান মুজিবনগর বর্তমান মেহেরপুর জেলার সদর থানার অন্তর্গত একটি গ্রাম। এলাকাটি সদর উপজেলা হতে প্রায় ১৬ কিলােমিটার দক্ষিণে বাংলাদেশ-ভারত সীমারেখায় অবস্থিত। মুজিবনগরের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ভারতের হরিদাসপুর, ২ কিলােমিটার উত্তর-পশ্চিমে মাছপাড়া, কৃষ্ণপুর এবং ৩ কিলােমিটার পূর্বে বাগুয়ান অবস্থিত এলাকাটি বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতাে সমতল এবং গাছপালাপূর্ণ বসতি এলাকা। মুজিবনগরের পূর্বের নাম ছিল বৈদ্যনাথতলা। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১০ এপ্রিল তাজউদ্দিন আহমেদ প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠনের ঘােষণা দেন। ১৭ এপ্রিল এ বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। তখন এ স্থানটির নতুন নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। সীমান্তবর্তী অঞ্চল এবং সর্বোপরি বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকাররের শপথ গ্রহণের স্থান হওয়ার কারণে জায়গাটি কৌশলগত এবং অনুভূতির দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে।
মুজিবনগর গ্রামটি সীমান্তসংলগ্ন হওয়ার কারণে এখানে তৎকালীন ইপিআর-এর একটি বিওপি ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধোত্তর প্রতিবছর বিভিন্ন সংগঠন ১৭ এপ্রিলকে বেসরকারিভাবে মুজিবনগর দিবস হিসেবে উদযাপন করে আসছে। মেহেরপুরে মুক্তিবাহিনীর সংগঠন মেহেরপুর এলাকাটি ৮ নম্বর সেক্টরের বেতাই সাব-সেক্টরের অধীনে ছিল। বেতাই সাব-সেক্টরের যুদ্ধগুলাের নেতৃত্বে ছিলেন ক্যাপটেন এ আর আজম চৌধুরী এবং ক্যাপটেন তৌফিক-ই-এলাহী। এ সাব-সেক্টরে তকালীন ইপিআর ৪ নম্বর উইংয়ের বাঙালি সদস্য, পুলিশ, আনসার, মুজাহিদ এবং ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কিছু সদস্যসহ আরও প্রায় ৭০০-৮০০জন মুক্তিযােদ্ধা তাদের সাথে যুদ্ধরত ছিলেন। এ অঞ্চলে যারা সাফল্যের সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে ইপিআর-এর সুবেদার মােজাফফর, নায়েব সুবেদার আব্দুল মতিন। পাটোয়ারি, আল আমিন, বশির আহমেদ, মিয়ারুল এবং আলী আকবরের নাম উল্লেখযােগ্য।

সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – সপ্তম খন্ড