১০ নম্বর সেক্টরের পরিচিতি
১০ নম্বর সেক্টরটির অবস্থান ছিল বার্মা সীমান্তে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বার্মা (বর্তমানে মায়ানমার) সরকার বাংলাদেশকে সহযােগিতা না করায় এ সেক্টরটির কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয় নি। পরবর্তী সময় ১০ নম্বর সেক্টরকে একটি বিশেষ সেক্টর হিসেবে সংগঠিত করা হয়। ভৌগােলিক সীমারেখাবিহীন এ সেক্টরটি বাংলাদেশ ফোর্সেস সদর দপ্তর কর্তৃক বিশেষভাবে প্রণীত রণকৌশল বাস্তবায়ন করত প্রধান সেনাপতি নিজেই এ সেক্টরের সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করতেন। এ সেক্টরের অধীনে বিশেষ নৌ-কমান্ডাে এবং প্রধান সেনাপতির বিশেষ দল গঠন করা হয়। বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এ গেরিলা দল প্রয়ােজন। অনুযায়ী সেক্টরগুলাের নেতৃত্বে বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করত এ সেক্টরের কোনাে নির্দিষ্ট সীমা রেখা ছিল না। দেশের নদীনালা, খালবিল ও সমুদ্র উপকূল ছিল এদের অপারেশন এলাকা এ সেক্টরে ছিল বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নাবিক ও ফ্রগম্যান।
জুন মাসে বিভিন্ন যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে এদের সংগ্রহ করে ভারতীয় নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে মুর্শিদাবাদের পলাশির প্রান্তরে ভাগীরথী নদীতে এসকল যােদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ভারতীয় নৌবাহিনীর নৌ-বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মার্টিস ও লেফটেন্যান্ট দাসের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ। করে মাত্র ২ মাসের মধ্যে এ এসকল তরুণ গ্রাম্য ছেলেরা দক্ষ ফ্রগম্যান হয়ে। বেরিয়ে আসেন। এ সেক্টরের কোনাে নির্দিষ্ট অধিনায়ক ছিল না। নৌ-কমান্ডােরা। পরিকল্পনা মাফিক বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অপারেশন চালাতেন অবশ্য স্থানীয় সেক্টর অধিনায়কদের সাহায্য ও সহযােগিতায় এসব অপারেশন চালানাে সম্ভব হতাে।
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – সপ্তম খন্ড