You dont have javascript enabled! Please enable it!
৯ নম্বর সেক্টরের পরিচিতি
বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা, দৌলতপুর-সাতক্ষীরা সড়ক থেকে খুলনা জেলার দক্ষিণাঞ্চল এবং ফরিদপুর জেলার অংশবিশেষ নিয়ে ৯ নম্বর সেক্টর এলাকা নির্ধারিত হয়। এ সেক্টরের সেক্টর অধিনায়ক ছিলেন মেজর এম এ জলিল মিয়া। সেক্টরকে ৩টি সাব-সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। সাব-সেক্টরসমূহের নাম নিমে প্রদান করা হলাে: ১. টাকি সাব-সেক্টর: এর অধিনায়ক ছিলেন মেজর মাে. আব্দুল জলিল মিয়া নিজেই। ২. হিঙ্গলগঞ্জ সাব-সেক্টর কমান্ড করেছেন ক্যাপটেন নুরুল হুদা। শমসেরনগর সাব-সেক্টর: কমান্ডে ছিলেন ফ্লাইট লে, সলিম উল্লাহ। তার সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ক্যাপটেন মাহফুজ আলম বেগ। তা ছাড়া সেক্টরের অভ্যন্তরে বেশ কিছু গেরিলা বেইস ক্রমশ গড়ে ওঠে। সেক্টরের নিয়মিত বাহিনীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৩,৩১১জন। কিন্তু গণবাহিনীর সংখ্যা ছিল আনুমানিক ৮ হাজার, যারা দেশের অভ্যন্তরের গেরিলা বেইসগুলােয় অবস্থান করে অত্যন্ত সফলতার সাথে অপারেশন চালান। ফরিদপুরে হাবিলদার হেমায়েতের অধীনে এক বিরাট বাহিনী গড়ে ওঠে। পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে ফরিদপুরে তাদের কর্তৃত্ব বজায় রাখে। পরে এ বাহিনী হেমায়েত বাহিনী নামে পরিচিত হয়। ৯ নম্বর সেক্টরের অভ্যন্তরে আরও বেশ কিছু অনিয়মিত বাহিনী গড়ে ওঠে, যাদের অবদানকে কোনােপ্রকারেই খাটো করে। দেখা যাবে না। বরিশালের অভ্যন্তরে ক্যাপটেন শাহজাহানের নেতৃত্বে একটি বড়াে মুক্তিবাহিনী গড়ে ওঠে। ফরিদপুর জেলার অভ্যন্তরে স্টুয়ার্ড মুজিবুর রহমান ও স্টুয়ার্ড নুর মােহাম্মদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা মুক্তিবাহিনীর দল। পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি সফল অভিযান পরিচালনা করে। সুন্দরবন এলাকায় ক্যাপটেন জিয়ার একক প্রচেষ্টায় এক বিরাট শক্তিশালী। বাহিনী গড়ে ওঠে এবং সেখানে তিনি রীতিমতাে একটি গ্যারিসনই তৈরি করে। ফেলেছিলেন। মাহফুজ আলম বেগও কিছুদিন এ এলাকায় আক্রমণ পরিচালনা করেছেন।
তা ছাড়া স্কুল শিক্ষক আব্দুল গফুর, আরব আলী, কুদুস মােল্লা ও মধুর কমান্ডে বেশ কয়েকজন মুক্তিযােদ্ধা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদান। রেখেছেন। তা ছাড়া দেশের অভ্যন্তরে বেশ কিছু গেরিলা বেইস গড়ে উঠেছিল। এ সেক্টরে মুক্তিযােদ্ধার সংখ্যা ছিল প্রায় ৮ হাজার। মেজর জলিল সেক্টরের দায়িত্ব। নেয়ার পর প্রাথমিক পর্যায়ে পাকিস্তানি সেনা ঘাটি শ্রীপুর, বসন্তপুর ও কৈখালী দখলের জন্য বিপরীতে অবস্থিত টাকি, হিঙ্গলগঞ্জ ও শমসেরনগরে মুক্তিবাহিনীর সুদৃঢ় ঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। প্রথমে টাকিতে সদর দপ্তর স্থাপন করে তিনি হিঙ্গলগঞ্জে ক্যাপটেন হুদার নেতৃত্বে প্রথম বেইস ক্যাম্প স্থাপন করেন। এ সেক্টরে ৫টি লঞ্চকে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করে গানবােট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এ গানবােটগুলাে খুলনা, চালনা ও সুন্দরবন এলাকাতে নদীপথে পাকিস্তানি। সৈন্যদের উপর হামলা চালিয়ে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে।

সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – সপ্তম খন্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!