You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.06.07 | ঢাকা শহরে গেরিলাদের তৎপরতা বৃদ্ধি- বিভিন্ন রণাঙ্গণে বহু পাক হানাদার নিহত | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

ঢাকা শহরে গেরিলাদের তৎপরতা বৃদ্ধি
বিভিন্ন রণাঙ্গণে বহু পাক হানাদার নিহত

(স্টাফ রিপাের্টার)

কলকাতা, ৬ জুন— ঢাকা শহরের গেরিলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধির ফলে ভীত সন্ত্রস্ত পাক হানাদার বাহিনী শহরে তাদের চলাফেরায় যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করেছে এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে তল্লাসী কেন্দ্র বসিয়েছে। স্বাধীন বাঙলা বেতার কেন্দ্র থেকে এই মর্মে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে।
প্রকাশ, পাক হানাদাররা ঐসব তল্লাসী কেন্দ্র থেকে পথচারী থেকে শুরু করে সমস্ত রকমের যানবাহন থামিয়ে তল্লাসী চালাচ্ছে।
ঢাকার স্কুল কলেজের দরজা খােলা। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা আসছেন না। বারবার হুমকি সত্ত্বেও শিক্ষকরা পাকসরকারের নির্দেশকে অমান্য করে যাচ্ছেন।
ঢাকায় ২টি ফেরী নৌকো গেরিলারা ধ্বংস করে দিয়েছেন।
লালমনির হাটের ৫ মাইল দূরে গেরিলা বাহিনীর হাতে ৪৭ জন পাক দালাল নিহত হওয়ার এক সংবাদ পাওয়া গেছে।
প্রকাশ ঐ সমস্ত দালালরা গ্রামে গ্রামে নিরীহ গ্রামবাসীদের উপর অত্যাচার ও লুটতরাজের কাজে লিপ্ত ছিল। গেরিলাবাহিনী অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়ে তাদের ঘিরে ফেলে এবং ৪৭ জন পাক দালাল নিহত হয়। | তেলিয়া পাড়ায় গেরিলা বাহিনী মাইন পেতে রেখে পাকবাহিনীর অগ্রগতিকে ব্যাহত করেছে। ২৪ জন পাক সৈন্য সেখানে নিহত হয়।
দর্শনার সয়েশাপাড়ায় ও গােয়ালপাড়ায় গেরিলা বাহিনীর অতর্কিত আক্রমণে ১৫ জন পাকসৈন্য নিহত হয়েছে।
এ ছাড়া গেরিলাবাহিনীর হাতে ইছাখালিতে ৪ জন রায়গঞ্জে ৫ জন, বিহলে ৫ জন, যশাের সেক্টরে ২০ জন, ভেড়ামারায় ১ জন (অফিসার) ও সিলেট সেক্টরে ৮ জন পাকসৈন্য নিহত হয়েছে।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রচারিত সংবাদে প্রকাশ, রংপুর, কুষ্টিয়া ও দিনাজপুর এলাকায় গেরিলাবাহিনীর তৎপরতা যথেষ্ট পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। মুক্তিসেনারা উত্তরাঞ্চলেও উল্লেখযােগ্য সাফল্য অর্জন করে চলেছেন। রংপুরের হাতিবান্দায় মুক্তিসেনারা তাদের দখল অব্যাহত রেখেছেন। কালচাঁদপুর থেকে পাকফৌজের অগ্রগতিকে মুক্তিসেনারা সাফল্যের সঙ্গে প্রতিরােধ করেছেন।
এছাড়া বিভিন্ন সেক্টরে রেল ও সড়ক সেতু ধ্বংস করে দিয়ে গেরিলা যােদ্ধারা বহু স্থানে পাকহানাদারদের অগ্রগতিকে সাফল্যের সঙ্গে প্রতিরােধ করেছেন। সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুরের পীরগঞ্জ, দুরংমারি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও শ্রীহট্ট সেক্টরে গেরিলা বাহিনীর হাতে রেল ও সেতু বিধ্বংসের সংবাদ পাওয়া গেছে।
এছাড়া প্রাপ্ত অপর একটি সংবাদে প্রকাশ, নালােবের চা বাগানের জনৈক ম্যানেজার বাগানের কাজ চালাতে অসম্মত হলে পাকসেনারা তাকে হত্যা করেছে।
পাকফৌজের হাত থেকে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র সহ বহু সংখ্যক সামরিক গাড়ি বিভিন্নস্থানে মুক্তিসেনা দখলের সংবাদ পাওয়া গেছে।

সূত্র: কালান্তর, ৭.৬,১৯৭১