লক্ষ্ণৌ, এপ্রিল ১৩, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সতর্ক করেন যে ভারত বাংলাদেশের ঘটনাবলির জন্য নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকবেনা। এবং ঘোষণা করেন যে, বাংলাদেশের বিপক্ষে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক শাসকদের সাথে চীন এর “খোলামেলা সমর্থন” আমাদের অবস্থানের উপর কোন প্রভাব ফেলবে না।
এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে মিসেস গান্ধী বলেন, “আমরা স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারি এবং আমাদের মনোভাব অন্যদের কর্মের উপর নির্ভর করে না”।
বাংলাদেশের নতুন গঠিত সরকারকে স্বীকৃতি দেয়া হবে কিনা জানতে চাওয়া হলে মিসেস গান্ধী বলেন এ ব্যাপারটি বিবেচনাধীন। অপর এক প্রশ্নে ছিল, বাংলাদেশের যুদ্ধ পশ্চিম পাকিস্তানের ‘ইম্পেরিয়াল ওয়ার’ কিনা? জবাবে মিসেস গান্ধী বলেন শুধু শক্ত কথায় কোন লাভ হবেনা।
মিসেস গান্ধী মনে করেন পূর্ববাংলার অবস্থা তাঁর দেশের অন্যান্য অংশেও প্রভাব ফেলে। পূর্ববাংলা ও ভারতের মধ্যে বসবাসকারী মানুষের রক্তের সম্পর্ক ছিল এবং ভারতীয়দেরও পূর্ববাংলার জনগণের প্রতি সহানুভূতি আছে – এটাই স্বাভাবিক।
পাকিস্তানে নির্বাচনী ফলাফল সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে মিসেস গান্ধী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে উভয় দেশ লাভবান হবে এবং সম্পর্কের উন্নতি হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে যা ঘটছে তাতে এখন সবকিছু বদলে গেছে এবং এটিকে উভয় দেশের জন্য দুর্ভাগ্য হিসেবে বর্ণনা করা যেতে পারে।
সিলন ও অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সুস্পষ্ট রেফারেন্স দিয়ে মিসেস গান্ধী বলেন সেখানে যা ঘটেছিল এই দেশের ক্ষেত্রেও তার পরোক্ষ প্রভাব পড়বে।
যেগুলো তিনি আগে বলেছেন সেই সব প্রশ্নের নতুন কোন জবাব তিনি দিতে অসম্মতি জ্ঞ্যাপন করেন। তিনি জানান এসব ব্যপারে নতুন কিছু যোগ করার নেই।
পরে কংগ্রেস আইনপ্রণেতাদের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে মিসেস গান্ধী বলেন, যদিও অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয় কিন্তু সেটাকে পুরোপুরি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক হিসাবে বর্ণনা করা যায়না।
মধ্যমেয়াদী জরিপে পর তার প্রথম সফরে মিসেস গান্ধী কে তার আসনের মানুষ একটি আড়ম্বর সংবর্ধনা দেয়।
জেলার অর্থনৈতিক সমস্যার উপর এক সেমিনারে বক্তৃতাকালে এবং একটি বাস টার্মিনাল স্টেশন উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় নাগরিকদের সাথে বৈঠক করেন।
ইউ পি মুখ্যমন্ত্রী, জনাব কমলাপতি ত্রিপাঠি এবং তার মন্ত্রিসভার সহকর্মীদের সাথে মিসেস গান্ধী লক্ষ্ণৌ থেকে হেলিকপ্টারে করে এখানে আসেন। সংসদবিষয়ক মন্ত্রী, জনাব ওম মেহতা এবং জনাব উমা শংকর দীক্ষিত তার সঙ্গে এসেছিলেন।
(আমাদের লক্ষ্ণৌ অফিস থেকে)